বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচ আজ

কারও শেষের বাঁশি শোনার অপেক্ষা, কারও জন্য হাতছানি নতুন দিনের। তবে নতুনের কেতন ওড়াতে গিয়ে পরীক্ষিতদের অবমূল্যায়ন না করা হলেই ভালো। টি২০-তে নতুন শুরুর প্রথম সিরিজে যেভাবে উদীয়মানদের দেখার চেষ্টা করা হলো, সেটা ‘উঠ ছুড়ি তোর বিয়ে’-এর মতো। ওপেনার সাইফ হাসান টি২০-র পরীক্ষায় ফেল করার পর আজ তার জায়গায় খেলতে পারেন অন্য কেউ। নাজমুল হোসেন শান্তকে ওপেনিং স্লট দিয়ে পারভেজ হোসেন বা ইয়াসির আলী খেলানো হতে পারে। এত কিছু করে দলের মঙ্গল হলে আর হোয়াইটওয়াশ এড়ানো গেলেই ভালো।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টি২০ সিরিজটিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছিলেন বিসিবি কর্মকর্তারা। বিশ্বকাপের ব্যর্থতা মুছে দিতে চেয়েছিলেন ম্যাচ জিতে। পাওয়ার হিটার, ম্যাচ উইনার খুঁজে পেতে উন্মুখ ছিলেন টিম ম্যানেজমেন্টের কেউই কেউ। যে পাইপ লাইনের জোরে বোর্ড পরিচালকদের বিশাল স্বপ্ন দেখা, সেখানেও চরম ব্যর্থ। পাকিস্তান দেখিয়ে দিল বিসিবির খেলোয়াড় পাইপ লাইনে কত বড় ছিদ্র। যে ছিদ্র দিয়ে ভেসে গেছে ক্রিকেট মেধা। সংখ্যায় শয়ে শয়ে খেলোয়াড় প্রসব হলেও বেশিরভাগই মেধাহীন। দেখার চোখে ছানি পড়ায় নীতিনির্ধারকরাও ছিলেন চোখ বন্ধ করে। যুবা দিয়ে জাতীয় দল গড়ে ব্যর্থতার লজ্জায় পড়েছেন এখন তারাও। ভবিষ্যতের কথা ভেবে তবুও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচে চূড়ান্ত পরীক্ষা। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন আর প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর জন্যও পরীক্ষার ম্যাচ একটি। বাংলাদেশ দল হারলে; হারবেন তারাও।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যে মানের ক্রিকেট খেলেছে তাতে করে শেষ ম্যাচ নিয়ে আশান্বিত হওয়ার মতো কিছু নেই। মরচে পড়া ব্যাটিং দিয়ে পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপকে টলানো যাবে না। জিততে হলে একাধিক ব্যাটসম্যানকে বড় ইনিংস খেলতে হবে। ছোট ছোট জুটি গড়ে স্কোর বোর্ড সমৃদ্ধ করতে কম করে হলেও ১৬০ রান করতে হবে। টপঅর্ডার থেকে একটি ফিফটি ইনিংস লাগবে। বর্তমান দলের জন্য যেটা চ্যালেঞ্জিং। তবে ভালো দিক হলো, নাজমুল হোসেন শান্ত গত ম্যাচে রান পেয়েছেন। আফিফ হোসেনের ব্যাটে-বলে হচ্ছে। জুটিতে সতীর্থের কাছ থেকে সাপোর্ট পেলে বড় ইনিংস দেখা যেতে পারে তার ব্যাটে।
প্রথম ম্যাচে ফিল্ডিং ভালো হওয়ায় সফরকারীদের ২০ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয় জিততে। সেদিন বোলিংটা আর একটু ভালো করলে স্বাগতিকরাও জিততে পারত। সুযোগ কাজে লাগাতে না পারায় ছন্দটা ছুটে গেছে ওখানেই। সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তান গোছানো ক্রিকেট খেলতে পারলেও বাংলাদেশ এলোমেলো ছিল শুরু থেকেই। বোলাররাও প্রথম ম্যাচের ছন্দ দেখাতে পারেননি এদিন। ব্যথার কারণে মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম বোলিং বাকি রেখেই মাঠ ছাড়েন। আজ তাদের খেলা নিয়ে সংশয় আছে।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানান, ম্যাচের আগে ফিটনেস পরীক্ষা হবে দুই বাঁহাতি পেসারের। তারা দু’জনই খেলতে না পারলে তাসকিনের সঙ্গে বোলিংয়ে দেখা যেতে পারে কামরুল ইসলাম রাব্বি বা শহিদুল ইসলামকে। এই ম্যাচ জিতে পাকিস্তান দলও চেষ্টা করবে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে। সিরিজ ৩-০ করতে পারলে টি২০ র্যাঙ্কিংয়ে ভারতকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উন্নীত হবে তারা। আর বাংলাদেশ জিতে গেলে এক ধাপ জাম্প করে র্যাঙ্কিংয়ে সপ্তম স্থানে পৌঁছে যাবে দল। এদিক থেকেও শেষ ম্যাচটি মরিয়া হয়ে খেলতে হবে টাইগারদের। বছরটা জয় দিয়ে শেষ করা গেলে ভালো লাগা কাজ করবে খেলোয়াড় ও টিম ম্যানেজমেন্টের মাঝে। জয়ে নানা বিতর্কেরও অবসান হবে।
এবিসিবি/এমআই