বড় টার্গেট দিতে চায় ক্যারিবীয়রা
টস জিতে ব্যাটিং, ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রেথওয়েটের সিদ্ধান্তটা যথার্থই ছিল। প্রথম সেশনে জন ক্যাম্পবেলকে নিয়ে দারুণ ব্যাটিং প্রদর্শনীতে সেটাকে আরও যথার্থ প্রমাণ করেন তিনি। দ্বিতীয় সেশনে তিন উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খেলেও শেষ সেশনে সেটা সামলে উঠছে তারা। দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেট ২২৩ রান। এমতাবস্থায় প্রথম ইনিংসে বড় পুঁজি গড়ার স্বপ্নই দেখছে সিরিজে এগিয়ে থাকা ক্যারিবীয়রা।
অতিথিদের স্বপ্নের পালে বাড়তি হাওয়া দিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে গেছেন এনক্রুমা বোনর। বাংলাদেশ সফরে এসেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু করা এই ডানহাতি ওয়ানডে সিরিজে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে না পারলেও জাত চেনাচ্ছেন টেস্ট সিরিজে। ৩৯৫ রান তাড়া করে চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবিশ্বাস্য জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছিল তার ৮৬ রানের ইনিংস। রানের সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকল ঢাকা টেস্টেও। প্রথম দিনে উইকেটে শেকড় গেড়ে বসেছেন তিনি। ১৭৩ বলে ৭৪ রান করে আছেন অপরাজিত। আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান জশুয়া দা সিলভা, তার রান ২২।
আজ দ্বিতীয় দিনে ফের ব্যাটিং শুরু করবেন দুজন। তাদের লক্ষ্য যতটা বেশি সময় সম্ভব উইকেটে থেকে দলের রানটাকে ফুলিয়ে-ফাপিয়ে তোলা। দারুণ ব্যাটিং করে যাওয়া বোনর তো আস্থা রাখছেন বাকি ব্যাটসম্যানদের ওপরও। দিন শেষে তিনি বলেছেন, ‘কয়েকজন আউট হয়েছে। এটাই খেলার নিয়ম। আমি আর জশুয়া আছি, আছে আরও কয়েকজন। যতটা সম্ভব বেশি সময় ব্যাটিং করে যাওয়াটা হবে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, আমি এমনটাই মনে করি।’ প্রথম ইনিংসে কত রান দেখতে চান স্কোরবোর্ডে, এমন প্রশ্নের জবাবে বোনর বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ৩৫০ ছাড়ানো স্কোর বেশ ভালো পুঁজি হবে।’
ব্যাটিংয়ে যতটা সম্ভব বাংলাদেশের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন বোনর। চেষ্টা করেছেন রান করে যেতে। নিজেই বললেন, ‘সবদিক থেকেই চাপ প্রয়োগের চেষ্টা চালিয়েছি আমি। এভাবেই রান করতে এবং ধারাবাহিক থাকতে হয়েছে আমাদের এবং এটাই আমি করতে চেয়েছি।’ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে উইকেট আর মিরপুরের উইকেটের মধ্যে তেমন কোনো তফাৎও দেখতে পাচ্ছেন না এই ক্যারিবীয় ব্যাটার, ‘আমার মনে হয়, এই উইকেটে বাউন্স কিছুটা বেশি। তবে সব কিছু একই। তাই ম্যাচ পরিকল্পনাও ছিল একই- যতটা সম্ভব ফ্রন্টফুটে খেলা এবং বল যতটা সম্ভব দূরে পাঠানো।’
স্পিনের বিপক্ষে ক্যারিবীয়দের দুর্বলতা চিরাচরিত। তবে বাংলাদেশের স্পিনারদের দারুণভাবেই সামলাচ্ছেন বোনর। বেশিরভাগ সময় স্পিনের বিপক্ষে খেলেই রান করছেন, সেটাও দারুণ দৃঢ়তা দেখিয়ে। কীভাবে সম্ভব হচ্ছে এটা, এর নেপথ্যের রহস্যই বা কি? এমন প্রশ্নের জবাবে বোনর বলেছেন, ‘এখানে কোনো রহস্য নেই। আমি যতটা সম্ভব স্পিনের সঙ্গে খেলার চেষ্টা করেছি। উইকেটে টিকে থেকে খেলার চেষ্টা করেছি ফ্রন্টফুটে। বলটাকেও ফ্রন্টফুটে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’ সেই চেষ্টাতেই সফল হয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। চট্টগ্রামে ক্যারিবীয়দের জয়ে বড় অবদান রাখা বোনর বাংলাদেশের গলার কাটা হয়ে উঠেছেন দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্টেও।