Type to search

খেলাধুলা

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখালো আয়ারল্যান্ড

মেলবোর্নের আকাশ যেন আজ পণ করেছিলো সারাদিন ধরে বৃষ্টি ঝরিয়েই যাবে। আর এই বৃষ্টিতেই কিনা কপাল পুড়লো ইংল্যান্ডের। বৃষ্টি আইনে ইংলিশদের ৫ রানে হারিয়ে চমক দেখালো আয়ারল্যান্ড।

মেলবোর্ন ক্রিকেটব গ্রাউন্ডে তিনবার বৃষ্টি বাঁধায় পড়ে ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ। টস জিতে আয়ারল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আম অন্ত্রণ জানিয়েছিলো ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। তবে বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু হতেই দেরি।

বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিলো আগের থেকেই। বৃষ্টির কারণে ম্যাচ হবেই কিনা সেটি নিয়েও সন্দেহ অমূলক ছিলো না। তবে খেলা মাঠে গড়িয়েছে, বৃষ্টি বাঁধায় দুইবার আটকে গিয়েও আবার মাঠে নেমেছে দুই দল। তবে তৃতীয়বার আর শেষ রক্ষা হলো না। প্রথম দুইবার আয়ারল্যান্ডের ইনিংসের সময় বাঁধা পড়ার পরও আবার মাঠে ফিরেছে খেলা। তৃতীয়বার ইংল্যান্ডের ইনিংসের সময় এমন বৃষ্টি নামলো যে খেলাই আর গড়ালো না মাঠে। আর তাতেই কপাল পুড়লো ইংল্যান্ডের। যখন বৃষ্টি নামে তখনও বৃষ্টি আইনে আয়রাল্যান্ডের চেয়ে ৫ রানে পিছিয়ে ইংল্যান্ড। বৃষ্টির কারণে আর খেলা না হলে ওই ৫ রানেই হারতে হয় ইংল্যান্ডকে।

টস হেরে ব্যাটিংইয়ে নামার আগেই বৃষ্টি। একটু দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে শুরুটা ভালোই করেছিলো আয়ারল্যান্ড। তবে দ্বিতীয় ওভারেই আবার নামে বৃষ্টি। আবারও বন্ধ হয় খেলা। মিনিট বিশেক পর বৃষ্টি থামলে আবার মাঠে নামে দুই দল। পরের ওভারেই ওপেনার পল স্টারলিঙকে হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি আর উইকেটরক্ষক লোরকান টাকার।

এই দুজন জুটিও গড়েছিলেন ৮২ রানের। অধিনায়ক বালবার্নির ৪৭ রানে ৬২ রানের কল্যাণেই শেষপর্যন্ত প্রথম ইনিংস শেষে সব উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান সংগ্রহ করে আইরিশরা। শেষের দিউকের ব্যাটসম্যানরা তেমন কিছু করতে না পারায় ইনিংস আরো বড় হয়নি তাদের।

১৫৮ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে শূন্য রানেই আউট ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। জশুয় লিটলের বল ব্যাটের কানায় লেগে আশ্রয় নেয় আইরিশ উইকেটরক্ষক লোরকান টাকারের গ্লাভসে।

ইংলিশদের ইনিংসে প্রথম বাউন্ডারি আসে তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে অ্যালেক্স হেলসের ব্যাট থেকে। তবে বাউন্ডারি মারার এক বল পরেই ইংলিশদের বিপদ বাড়িয়ে সাজঘরে ফেরেন হেলসও। লিটলের ওভারের চতুর্থ বলে শর্ট ফাইন লেগে হেলসের ক্যাচ নেন  মার্ক অ্যাডাইর।

পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে এসে বেন স্টোকসকে ফিরিয়ে ইংলিশদের ইনিংসে তৃতীয় ধাক্কা দেন আইরিশ পেসার ফিওন হ্যান্ড। ৮ বলে ৬ রান করা স্টোকসের ব্যাট-প্যাডের ফাক গলে স্ট্যাম্প ভাঙ্গেন হ্যান্ড। ২৯ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে তখন ধুকছে ইংল্যান্ড। পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভার শেষে ইংলিশদের সংগ্রহ দাড়ায় ৩ উইকেটে ৩৭ রান।

শুরু এই ধাক্কা সামলে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব নেন হ্যারি ব্রুক আর ডেভিড মালান। দুজন মিলে দ্রুত উইকেটের পতন ঠেকিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে নিক্তে থাকেন ইংলিশদের ইনিংস। তবে ধীরগতিতে রান তোলায় ক্রমেই বাড়তে থাকে আস্কিং রানরেট।

১০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৬৩ রান। ব্রুক আর মালান মিলে যখনই এগিয়ে নিতেছিলেন ইংলিশদের তখনি আঘাত হানেন জর্জ ডকরেল। ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে ডিপ মিডউইকেটে গ্যারেথ ডিলানীর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২১ বলে ১৮ রান করা ব্রুক। ভাঙে ব্রুক-মালানের ৩৮ রানের জুটি।

ব্রুক ফেরার পর মঈন আলীকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মালান। তবে সেটিও আর হতে দেননি। আইরিশ পেসার ব্যারি ম্যাককার্থি। ১৪তম ওভারের প্রথম বলেই মালানকে ফেরান মিডউইকেটে ফিওনা হ্যান্ডের কাচ বানিয়ে। ফেরার আগে মালান করেন ৩৭ বলে ৩৫ রান। মঈন আলীর সঙ্গে ১৯ রানের জুটি শেষ হলে ৮৬ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।

মঈন আলী আর লিয়াম লিভিংস্টোন উইকেটে থাকায় তখনও জয়ের আশা ছিলো ইংলিশদের। ৫ বলের মধ্যে ২ চার আর ১ ছয়ে আশার প্রদীপে আলোও জ্বালিয়েছিলেন মঈন। তবে ক্রিকেট ঈশ্বর হয়তো আজ ভেবে রেখেছিলেন অন্যকিছুই। ১৫তম ওভারের তৃতীয় বলে গ্যারেথ ডিলানীকে এক্সট্রা কাভার দিয়ে যখনই বাউন্ডারি ছাড়া করলেন মঈন, তখনই মেলবোর্নের আকাশ ভেঙে আবার শুরু হলো বৃষ্টি।

বৃষ্টি আইনে নির্দিষ্ট অইসময় পর্যন্ত আইরিশদের চেয়ে ৫ রানে পিছিয়ে ইংল্যান্ড। খেলা আর মাঠে না গড়ালে জিতে যাবে আয়ারল্যান্ড। অপেক্ষা চললো কিছুক্ষণ। তবে বৃষ্টির অবস্থা দেখে মনে হয়নি সেটি আর থামতে পারে। তাই শেষমেশ আয়ারল্যান্ডকে ৫ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয় ম্যাচ অফিসিয়ালদের পক্ষ থেকে।

২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সেই আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরেই অঘটনের শিকার হতে হলো ইংলিশদের।

এবিসিবি/এমআই

Translate »