মিয়ানমারে নারী রাজনৈতিক বন্দিরা যৌন নির্যাতনের শিকার
চলতি মে মাসে মিয়ানমারের মন রাজ্যের কিয়াইকমায়াও কারাগারে রাজনৈতিক বন্দিরা রূপান্তরকামী পুরুষ কারারক্ষীদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। গত ১৮ মে ২৪ ও ৫০ বছর বয়সী দুই নারী বন্দির গোপনাঙ্গে ‘নির্যাতন চালিয়ে’ ট্রান্স-পুরুষ রক্ষীরা সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে নগ্ন তল্লাশি চালায়। এ সময় তাদের গোপনাঙ্গে আঘাতও করা হয়। মিয়ানমার পলিটিক্যাল প্রিজনার্স নেটওয়ার্ক (পিপিএন) দেশটির সংবাদমাধ্যম ইরাবতিকে এ তথ্য জানিয়েছে।
কারাগার সূত্র ইরাবতিকে জানিয়েছে, কিছু রাজনৈতিক বন্দী তল্লাশিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল বলে তাদের গলা চেপে নির্যাতন করা হয়। কিয়াইকমায়াও কারাগারে এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। কিয়াইকমায়াওতে ৪০০ জনের বেশি নারী বন্দী রয়েছেন, যাদের অর্ধেকই রাজনৈতিক বন্দী।
৫০ বছর বয়সী ওই নারীর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। নির্যাতনের পর দু’জন লোক তাকে হাঁটতে সাহায্য করেন। তাকে তিনবার অভ্যন্তরীণভাবে ‘তল্লাশি’ করা হয়!
মিয়ানমার পলিটিক্যাল প্রিজনার্স নেটওয়ার্কের কো থাইক তুন ওও বলেন, কারারক্ষীদের উচিত ছিল নারীদের শালীনতা ও মর্যাদা লঙ্ঘন না করে বডি স্ক্যানার বা এক্স-রে ব্যবহার করা। প্রকাশ্যে নারীদের গোপনাঙ্গে তল্লাশি চালানো অগ্রহণযোগ্য। এটা যৌন সহিংসতা এবং অপমানজনক। যদি তারা অনুসন্ধান করতে চায় তবে তারা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারে।
সূত্র ইরাবতিকে আরও জানায়, কিয়াইকমায়াও কারাগারের খাবার খাওয়ার যোগ্য নয়। এতে আবর্জনা ও কাঠের টুকরো থাকে। যদিও অভিযোগের পর সম্প্রতি কিছু খাবারের মান উন্নতি হয়েছে।
জানুয়ারিতে আইয়ারওয়াদি অঞ্চলের মাউবিন কারাগারেও নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে নারী রাজনৈতিক বন্দিদের আদালতের শুনানির আগে এবং পরে নগ্ন হতে বাধ্য করা হয়েছিল। অন্য বন্দিদের সামনেই নগ্ন তল্লাশি চালানো হয় এবং কর্মীরা অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন বলে জানিয়েছেন সাবেক বন্দিরা।
অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে অন্তত ৫ হাজার ৫১৩ জন নারী রাজনৈতিক বন্দির সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এবিসিবি/এমআই