ভারতের উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর অশান্তির আগুন ছড়ালো। পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি সূত্রের। স্থানীয় সূত্রে খবর, সম্ভল এলাকায় নতুন করে শাহি জামা মসজিদের সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়। সকাল ৬টা নাগাদ এলাকায় পৌঁছে যান সমীক্ষক দলের সদস্যরা।সেই দলে ছিলেন – জেলাশাসক রাজেন্দ্র পানসিয়া, পুলিশ সুপার কৃষ্ণ বিষ্ণোই, মহকুমাশাসক বন্দনা মিশ্রা, সার্কেল অফিসার অনুজ চৌধুরী এবং তহসিলদার রবি সোনকার। সম্ভলের শাহী জামা মসজিদ নিয়ে একটি মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিষ্ণু শংকর জৈন।
মামলায় তিনি দাবি করেন, অতীতে ছিল হরিহর মন্দির। মুঘল আমলে তা ভেঙে মসজিদ তৈরি হয়। ১৫২৯ সালে এই কাজ করেন মুঘল বাদশা বাবর। বিষ্ণু শংকর জৈনের মামলার ভিত্তিতে মসজিদ সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। গত ১৯ নভেম্বর পুলিশ মোতায়েন করে প্রথম দফায় সমীক্ষা চালানো হয়। সেদিন থেকেই ধীরে ধীরে উত্তেজনা বাড়ছিল গোটা এলাকাজুড়ে। সমীক্ষা চলাকালীন যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে পুলিশের বিরাট বাহিনী এবং ব়্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের সদস্যদেরও আগে থেকেই এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু, তা সত্ত্বেও সমীক্ষকরা এলাকায় পৌঁছতেই পরিবেশ অশান্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের একটি সূত্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, মুহূর্তে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। উন্মত্ত ও মারমুখী জনতার একাংশ পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করে। এমনকি, সেই সময় হামলাকারীদের কেউ কেউ গুলিও চালায় বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় হাজার তিনেক লোক জড়ো হয়েছিলেন মসিজদের সামনে। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। শেষ পর্যন্ত কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। পরে জানা যায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে বন্দুকের আঘাতে -নাঈম, বিলাল এবং নওমান নামের তিনজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে, আরও পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তারা ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। তাতে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। ইতিমধ্যেই সেই সংঘর্ষের ভিডিও সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজেন্দর পেনসিয়া জানিয়েছেন, দেশীয় পিস্তল থেকে গুলি লেগে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। তৃতীয় ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি।
শাহী মসজিদ কমিটির প্রধান জাফর আলী বলেন, মসজিদের কাছে ভিড় জড়ো হতে শুরু করে। তিনি যোগ করেন যে বিক্ষোভকারীদের সাথে সংঘর্ষের সময় পুলিশও বাতাসে গুলি চালায়। ইতিমধ্যেই অশান্তির ঘটনায় আটক করা হয়েছে ২০ জনকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন দুই নারীও । জাতীয় সুরক্ষা আইনের আওতায় তাদের আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে, মোট ১৫-২০জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।
সূত্র : হিন্দুস্থান টাইমস