ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষ: আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম
ইসরায়েলের ওপর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেছে তেলের দাম। সোমবার এ দাম ৪ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে হামাস-ইসরায়েল চলমান সংঘাত গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। বিশ্বের মোট তেলের চাহিদার বড় অংশ পূরণ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। আর মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত শুরু হওয়ায় তেল সরবরাহে বিঘ্ন ও সংকট দেখা দিতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকে দাম বেড়ে গেছে।
এদিন এশিয়ার বাজারে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্টের দাম ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৮৬ দশমিক ৬৫ ডলার হয়েছে। অন্যদিকে ওয়েস্ট টেক্সাসের ইন্টারমিডিয়েটের দাম প্রতি ব্যারেল ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৮৮ দশমিক ৩৯ ডলার। ইসরায়েলের ওপর হামাসের আকস্মিক হামলায় এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের ১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। শঙ্কা তৈরি হয়েছে, সংঘাতের মাত্রা যদি বাড়তে থাকে তাহলে এতে যুক্ত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান।
এএনজেড গ্রুপের ব্রায়ান মার্টিন এবং ড্যানিয়েল হায়েনস বলেছেন, ‘তেলের বাজারের জন্য যেটি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো—এই দ্বন্দ্ব এই দুই পক্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, নাকি ঐ অঞ্চলের অন্যান্য জায়গায় বিশেষ করে সৌদি আরবে ছড়িয়ে পড়ে।’ তারা আরো বলেছেন, ‘অন্তত প্রাথমিক অবস্থায়, যা মনে হচ্ছে বাজার এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে এবং স্থিতিকাল, স্কোপ ও তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাবের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে উচ্চ অস্থিরতাও দেখা দিতে পারে।’ এমন সময় এ সংকট তৈরি হলো যখন রাশিয়া ও সৌদি তেলের উত্পাদন কমিয়ে দেওয়ায় এমনিতেই বাজার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এখন ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধ নতুন মূল্যস্ফীতির শঙ্কা তৈরি করেছে।
এদিকে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের চলমান ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ এই সংঘাতের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক বিস্তৃত সংঘাতে পরিণত হতে পারে। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দিমিত্রি পেশকভ বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’ ‘মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের চারপাশে যা ঘটছে তা আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে প্রত্যক্ষ করছি। এই পরিস্থিতি আশপাশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে পরিপূর্ণ। যে কারণে এটি আজ আমাদের বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
শনিবার ভোরের দিকে হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে একযোগে হামলা চালায়। গত কয়েক দশকের মধ্যে এবারই সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী হামলার মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েল। হামাসের হাজার হাজার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ইসরায়েলে সাত শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
এবিসিবি/এমআই