বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী থেকে সপ্তম স্থানে ভারতের আদানি
পুঁজিবাজারে কোম্পানির অব্যাহত দরপতনে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী ব্যক্তি থেকে সপ্তম স্থানে নেমে গেছেন ভারতের গৌতম আদানি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারে ধোঁকাবাজির অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর টালমাটাল হয়ে পড়েছে এশিয়ার এই শীর্ষ ধনী ব্যক্তির ব্যবসা। পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনে কয়েক দিনেই ৫ হাজার কোটি ডলার (প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকার বেশি) হারিয়েছেন তিনি।
নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গের একটি গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, গৌতম আদানি ‘কর্পোরেট জগতের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজি’ করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, আদানি গ্রুপ হিসাবের খাতায় জালিয়াতি করে শেয়ার বাজারে ধোঁকাবাজি করেছে। এমন কথাও ঐ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে আদানি গ্রুপের কাঁধে প্রচুর ঋণ রয়েছে, যা এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তিকে নড়বড়ে করে তুলেছে। হিনডেনবার্গ তাদের রিপোর্টে মরিশাস এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেনে বিভিন্ন কোম্পানিতে আদানি গ্রুপের মালিকানা থাকার ব্যাপারে ইঙ্গিত করেছে। মঙ্গলবার রিপোর্টটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার বাজারে তীব্র নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। যদিও আদানি গ্রুপ বলেছে, হিনডেনবার্গের রিপোর্ট ‘বিদ্বেষমূলক’ এবং ভুল তথ্যে ভরা। তারা বলেছে, মার্কিন এই কোম্পানির বিরুদ্ধে তারা ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রে মামলা করার কথা বিবেচনা করছে। আদানি গ্রুপ ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম। ভোগ্যপণ্য ছাড়াও তাদের ব্যবসা ও বিনিয়োগ জ্বালানি, বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর এবং অবকাঠামো নির্মাণের মতো বড় বড় খাতে বিস্তৃত।
বিবিসি জানিয়েছে, এ গ্রুপের অন্য কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরে আরো টালমাটাল অবস্থা দাঁড়িয়েছে, মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে তাদের শেয়ারগুলো লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাবে ফোর্বসের তালিকায় বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনী ব্যক্তি থেকে সপ্তম স্থানে নেমে গেছেন আদানি। তার সম্পদের মূল্য কমে বর্তমান দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ৯ হাজার কোটি ডলারে। আদানির পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও হিন্ডেনবার্গ তাদের প্রতিবেদনকে সঠিক দাবি করে এর পক্ষে অবস্থানে অনড় আছে। কোনো আইনি পদক্ষেপই কাজে আসবে না বলে মনে করছে তারা।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়, দশককাল ধরে শেয়ার কারসাজি এবং আর্থিক লেনদেনে প্রতারণা চালিয়ে আসছে আদানি গ্রুপ। কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দর বহু গুণ বাড়িয়ে এ গ্রুপ বিশাল সম্পদ গড়েছে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স বলছে, সম্পদের মান কমলেও এখনো এশিয়ার শীর্ষ ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানি, যার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ১১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। ভারতীয় আরেক ধনকুবের মুকেশ আম্বানির চেয়ে তার সম্পদ ৩ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি।
এবিসিবি/এমআই