কানাডা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে যা বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর
কানাডাকে সন্ত্রাসীদের জন্য নিরাপদস্থল বলার পর আবারও দেশটি চরমপন্থীদের আশ্রয় দেয় বলে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। খবর এনডিটিভির।
এই বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্কে আলোচনাকালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
ভারত এবং কানাডার মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ দ্বন্দ্বের মধ্যে এই মন্তব্যগুলো এসেছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত সপ্তাহে দাবি করেছিলেন, জুন মাসে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় খালিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার সঙ্গে ‘ভারতীয় সরকারের এজেন্ট’ জড়িত ছিল।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী কিছু অভিযোগ করেছেন, প্রথমে ব্যক্তিগতভাবে এবং পরে প্রকাশ্যে। তার প্রতি আমাদের প্রতিক্রিয়া, ব্যক্তিগত এবং প্রকাশ্যে উভয়ই ছিল যে তিনি যা অভিযোগ করছেন তা আমাদের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যদি তিনি বা তার সরকারের কাছে প্রাসঙ্গিক এবং সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য থাকে যা তারা আমাদের দেখতে চায়, আমরা তা দেখার জন্য উদগ্রীব ছিলাম।’
কানাডিয়ান সরকারের ওপর তার আক্রমণকে আরও বাড়িয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তারপর এটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল কিন্তু, গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসবাদী এবং চরমপন্থী জনগণ যারা প্রকাশ্যে প্রকাশ্যে সহিংসতার পক্ষে তাদের প্রতি কানাডার প্রশ্রয়দানকারী মনোভাব দেখা গেছে। কানাডার রাজনীতির বাধ্যবাধকতার কারণে তাদের কানাডায় অপারেটিং স্পেস দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘কানাডাকে খুনিদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হওয়া উচিত না। খুনিরা কানাডায় গিয়ে আশ্রয় নিতে পারে এবং সেখানে তারা সুন্দর জীবনযাপন করতে পারে। অথচ তারা যাদের হত্যা করেছে, তাদের স্বজনরা কষ্ট পাচ্ছেন।’
সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধুর খুনির মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি আরও বিশদভাবে বর্ণনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিচার বিভাগ খুবই স্বাধীন এবং সরকার এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে, (নূর চৌধুরী) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সুযোগ রয়েছে। তিনি যদি বাংলাদেশে ফিরে আসেন, তাহলে নূর চৌধুরী এবং রশিদ চৌধুরী উভয়েই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন মঞ্জুর করে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাও মঞ্জুর করতে পারেন।’
মানবাধিকারের নাম ভাঙিয়ে খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টা করার প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মোমেন। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় অনেকের মাধ্যমেই মানবাধিকারের ধারণার অপব্যবহার করা হচ্ছে। এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। কারণ অনেক সময় খুনি এবং সন্ত্রাসীদের রক্ষা করার জন্য কিছু লোক অজুহাত হিসেবে মানবাধিকারের অজুহাত দেয়।’
এবিসিবি/এমআই