করোনা নিয়ে ১০ নির্বাহী আদেশে বাইডেনের সই

করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ১০ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসে অভিষেকের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার এসব আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। এর আগে বুধবার করোনাভাইরাস বিষয়ক আরও দুটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচিও বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের সময় বাইডেনের পাশে ছিলেন। হোয়াইট হাউসের রুজভেল্ট রুমে বাইডেন ১৯৮ পৃষ্ঠার পরিকল্পনা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় আগামী এক মাসের মধ্যে ১০০টি টিকা কেন্দ্র খোলা হবে। আগামী ১০০ দিনের মধ্যে ১০ কোটি আমেরিকানকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি।
অ্যান্থনি ফাউচি সাংবাদিকদের জানান, ১০০ দিনের মধ্যে ১০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ যুক্তিসঙ্গত। এ পর্যন্ত ১ কোটি ৬ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে যা আগের প্রশাসনের ডিসেম্বরের মধ্যে ২ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম।
আমেরিকানদের সতর্ক করে দিয়ে জো বাইডেন বলেন, করোনা মহামারি নিয়ে সামনে এখনও অনেক কঠিন দিন রয়েছে। পরিস্থিতি উন্নতির বদলে অবনতির দিকে যাচ্ছে। আগামী মাসেই মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়াতে পারে।
তিনি বলেন, গত এক বছর আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর নির্ভর করতে পারিনি। এই ব্যর্থতার জন্য আমাদের মর্মান্তিক মূল্য দিতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ২৪ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চার লাখ আট হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আমেরিকাতেই সবচেয়ে বেশি।
রাজনৈতিক নয়, করোনা নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত : দায়িত্ব নেওয়ার পরদিন করোনা মোকাবিলায় নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরার সময় জো বাইডেন বলেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে। আগামী মাসে সম্ভবত মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বিগত এক বছরে দেখেছি, জরুরি ভিত্তিতে, মনোযোগ দিয়ে এবং সমন্বয় নিয়ে কাজ করতে ফেডারেল সরকারের ওপর আমরা নির্ভর করতে পারিনি এবং আমরা এই ব্যর্থতার করুণ মূল্য দেখতে পেয়েছি। শপথ নেওয়ার পর দিন বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে অফিস করার সময় তিনি একথা বলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের জাতীয় কৌশলটি বিস্তৃত, এটি বিজ্ঞানভিত্তিক, রাজনৈতিক নয়। এটি সত্যের ওপর ভিত্তি করে, অসত্যের ওপর নয় এবং এটি বিস্তারিত।’ বাইডেন বলেন, ‘আমেরিকার জনগণ প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে নয়, প্রকৃত বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে শুনবে।’
একজন মডেলকেই ফলো : সারা বিশ্বজুড়ে টুইটার ব্যবহারকারীরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট অনুসরণ করে। কিন্তু সেই অ্যাকাউন্ট থেকে ফলো করা হয় মাত্র ১২ জনকে। তার মধ্যে সেলিব্রেটি একজনই। তিনি ক্রিসি টেইজেন নামের একজন মডেল।
মডেল ক্রিসি টেইজেনকে ফলো করা হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডল দ্য প্রেসিডেন্ট অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস থেকে। ক্রিসি টেইজেনকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ফলো করার পরই বিশ্বজুড়ে মানুষ জানতে উৎসুক হয়ে উঠেছেন, কে এই ক্রিসি টেইজেন?
ক্রিসি টেইজেন নিজে টুইট করে ব্যাপারটি জানাতেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বুধবার টেইজেন টুইট করে বলেন, ‘হ্যালো জো বাইডেন, আমাকে চার বছর ধরে রাষ্ট্রপতি ব্লক করে রেখেছেন। আমি কি ফলো পেতে পারি প্লিজ?’
এই টুইট সামনে আসার পরে খুব বেশি দেরি করেননি বাইডেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডল দ্য প্রেসিডেন্ট অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস থেকে ফলো করা হয় তাকে। ট্রাম্পকে টুইটারে তীব্রভাবে আক্রমণ করতেন টেইজেন। ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ব্লক করা ছিল তাকে। তবে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হতেই বদলে গেল পরিস্থিতি।