ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে গত পাঁচ মাসে ২০ হাজার রুশ সেনার মৃত্যু
ইউক্রেনে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে পাঁচ মাসে ২০ হাজারের বেশি রুশ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন বলে অনুমান করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে রাশিয়ার আরো ৮০ হাজার সেনাসদস্য আহত হয়েছেন বলেও গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি।
জন কারবি বলেন, নিহত রুশ সেনাদের মধ্যে অর্ধেকই ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের; এই বাহিনীই পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহর দখলে নিতে ধারাবাহিক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনের অন্যান্য ফ্রন্ট তুলনামূলক শান্ত থাকলেও গত বছরের শেষ দিক থেকে রাশিয়া মূলত বাখমুত দখলে নিতেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ছোট এই শহরের সিংহভাগই এখন মস্কোর নিয়ন্ত্রণে, তবে ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনো শহরটির পশ্চিমের সামান্য অংশ দখলে রেখেছে। শহরটিকে ঘিরে চলা লড়াই দুই পক্ষের জন্যই মর্যাদার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, বাখমুতে যত বেশিসংখ্যক রুশ সেনাকে মারা যায়, সেই চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়ার রিজার্ভে থাকা সেনার পরিমাণও কমিয়ে আনতে চাইছেন। জন কারবি বলেন, ‘বাখমুতের মাধ্যমে দনবাসে রাশিয়ার সেনা অভিযান মোটাদাগে ব্যর্থ হয়েছে। তারা কোনো বাস্তব কৌশলগত ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখলে নিতে পারেনি। আমাদের অনুমান, রাশিয়ার হতাহত সেনার সংখ্যা লাখের বেশি, এর মধ্যে যুদ্ধে নিহতই ছাড়িয়েছে ২০ হাজার।’
যুক্তরাষ্ট্রের এই কর্মকর্তা পাঁচ মাসে ইউক্রেনের কী পরিমাণ হতাহত হয়েছে, তা বলতে রাজি হননি। রুশপন্থি বিভিন্ন টেলিগ্রাম চ্যানেলে গত কয়েক মাসের যুদ্ধে এক রুশ সেনার বিপরীতে ইউক্রেনের পাঁচ থেকে সাত সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। ‘এখানে ইউক্রেনীয়রা ভিকটিম, রুশরা আগ্রাসক’, ইউক্রেনের হতাহতের সংখ্যা না বলার এমন কারণই দেন কারবি। ‘মোদ্দা কথা হচ্ছে, কয়েক মাসের লড়াই ও নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতিতে রাশিয়ার আক্রমণ ব্যাকফায়ার করেছে।, বলেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বিবিসি। মস্কো ওয়াশিংটনের ভাষ্য নিয়ে মন্তব্যও করেনি।
সমর বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাখমুতের দখল পেলে রাশিয়া দোনেস্কের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পথে অনেকখানিই এগিয়ে যাবে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চল রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ভূখণ্ডভুক্ত করেছে, দোনেত্স্ক তার একটি। মস্কোপন্থি প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গণভোটের রায় পক্ষে যাওয়ার পর রাশিয়া ঐ চারটি অঞ্চলকে ভূখণ্ডভুক্ত করে। ইউক্রেনের মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো ঐ গণভোটকে অবৈধ আখ্যা দিয়েছে। পশ্চিমা অনেক বিশ্লেষকের মতে, বাখমুতের কৌশলগত গুরুত্ব খুব একটা নেই, কিন্তু ক্রেমলিনে সুখবর পাঠাতে হিমশিম খাওয়া রাশিয়ার যুদ্ধ কমান্ডাররা এখন এটির দখল নিতেই মরিয়া।
এবিসিবি/এমআই