শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াকে নিয়ে টানাটানি ভালো হবে না : বিএনপি
বাংলাদেশের স্বাধীনতার অপর নাম জিয়াউর রহমান। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে টানাটানি না করার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পূর্বঘোষিত এক প্রতিবাদ সভায় দলের নেতাকর্মীরা সরকারের উদ্দেশে এ আহ্বান জানান।
সভায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জিয়াউর রহমানের খেতাব এই সরকার দেয়নি। এই পদক স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনগণ ভালোবেসে জিয়াউর রহমানকে দিয়েছে। আর সরকার আইন দেখায়। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজা দিয়ে লাভ হবে না।
তিনি বলেন, সদ্যভূমিষ্ঠ শিশু ছাড়া বাংলাদেশে বিএনপির এমন কোনো নেতাকর্মী নেই, যার বিরুদ্ধে মামলা নেই। শুধু সরকার টিকে থাকার জন্য এসব করছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কেউ আপনাকে অধিকার দেবে না, অধিকার আদায় করতে হবে। আমাদের হলো আদায়ের বিষয়, জনগণ ফুঁসে উঠেছে। ইনশাল্লাহ এই জনগণের দাবির তোড়ে, আন্দোলনে এক দিন সব স্বৈরাচার সরকারের মতো এই সরকারেরও পতন হবে।
সাবেক শহীদ রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে টানাটানি করলে হাত পুড়ে যাবে বলে মন্তব্য করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অপর নাম জিয়াউর রহমান। তাই জিয়াউর রহমানকে নিয়ে টানাটানি করবেন না। তিনি বলেন, এখন ঘরে ঘরে খুনি, মাফিয়া, দখলদার ও ধর্ষক। আমি বলব, জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গোটা বিশ্ব যখন করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘আল-জাজিরা ভাইরাসে’ আতঙ্কিত। এ ভাইরাসকে কাউন্টার করার জন্য নতুন নাটক তৈরি করা হচ্ছে। সেই নাটকের নাম জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব কেড়ে নেওয়া এবং তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আপনাদের অনেক নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান নাকি পাকিস্তানের চোর, রাজাকার। তা হলে যে ব্যক্তিটি জিয়াউর রহমানকে বীর উত্তম খেতাব দিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রীর পিতা, তিনি কত বড় রাজাকার? উনি তো জিয়াউর রহমানকে বীর উত্তম খেতাব দিয়েছিলেন, আপনারা সেই খেতাব মুছে দেবেন? পারবেন না। গ্রামের কুটিরে কুটিরে জিয়াউর রহমানের নাম।
হয়রানিমূলক মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ সাতক্ষীরার ৩৪ নেতাকর্মী, পাবনায় ৪৭ নেতাকর্মীকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ‘ফরমায়েশি সাজা’ দেওয়া এবং দলের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আমানউল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।