বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কী করবে জানালেন মির্জা ফখরুল
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সাংবিধানিক কমিশন করবে উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এখানে একজন সাবেক বিচারপতি বলেছেন, সংবিধান মেনে চলতে হবে। কিন্তু কোন সংবিধান? যে সংবিধানে আমার অধিকার হরণ করা হয়েছে? যে সংবিধানের মধ্যে কেটে ছেঁটে তিনটি অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, এটা কোনো দিন পরিবর্তন করা যাবে না। যে সংবিধানে সবাই মিলে ঠিক করেছিলাম, আমরা একটা স্বাভাবিক শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব।’
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলে একটি জাতীয় দৈনিকের কার্যালয়ে পত্রিকাটির ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ফখরুল এসব কথা বলেন।
ফখরুল জানান, ‘সেই সংবিধান অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। সংবিধান মানুষের জন্য। এ সংবিধান অবশ্যই কিছুটা পরিবর্তন আনতেই হবে। সেজন্য বলেছি, আমরা সাংবিধানিক কমিশন তৈরি করব। আমরা যদি জনগণের ম্যান্ডেটে বিজয় অর্জন করতে পারি সাংবিধানিক কমিশন তৈরি করে আমরা সেই অগণতান্ত্রিক, জনগণবিরোধী যেসব বিষয় সংযোজন করা হয়েছে- তা বাতিল করব। আমরা জনগণের জন্য যেটা প্রয়োজন যুগোপযোগী একটা সংবিধান নিয়ে আসার চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, ‘অন্য কেউ কিছু বললে, ব্যাখ্যা দিলে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলেন- এখন রাষ্ট্রবিরোধী মামলা হওয়া উচিত। সেটা তো হতে পারে না। ব্যাখ্যাটা খুব পরিষ্কার, এ দেশের মানুষ যা চাইবে, সেটাই হচ্ছে সংবিধান। বর্তমান যে সংবিধান আছে, তা মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘যেন বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থেই একটা সাম্য, ন্যায়বিচার এবং মানবিক মূল্যবোধের কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করতে পারি সেজন্য আপনারা অতীতে যে ভূমিকা রেখেছেন- তা অব্যাহত রাখবেন। আপনারা জনগণের পাশে দাঁড়াবেন এই বিশ্বাস আমার আছে।’
দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা একটা নষ্ট সময়, একটা ভয়ংকর সময় অতিক্রম করছি। আমার কাছে আজ বিস্ময় মনে হয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা সরাসরি জড়িত ছিলাম। তখন কি যুদ্ধ করেছিলাম মানুষের অধিকার, ভোটের অধিকার কেড়ে নেব, কথা বলার অধিকার কেড়ে নেব- এজন্য?’
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, ১৯৭৫ সালের সেই অবস্থাও পার হতে হয়েছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে একাত্তরের চেতনাকে তারা বাস্তবায়িত করেছে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থায় পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে তারা স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়িত করেছে। আজ আবার একইভাবে তারা এ স্বাধীনতার কথা বলে, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে মানুষের অধিকারগুলোকে পুরোপুরিভাবে কেড়ে নিচ্ছে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘এই সময়টা আমাদের অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে, অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে অতিক্রম করতে হবে। আমাদের জয়লাভ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ইকতেদার আহমেদ, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, নয়া দিগন্তের ব্যারিস্টার শিব্বির মাহমুদ, আলমগীর মহিউদ্দিন, সালাউদ্দিন বাবর, মাসুম খলিলী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএফইউজের একাংশের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বর্তমান সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজে একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান প্রমুখ।-যুগান্তর
এবিসিবি/এমআই