টাঙ্গাইলে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি, ধর্ষণ: মুল হোতা গ্রেপ্তার
জেলা প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী নাইট কোচে যাত্রীবেশে উঠে যাত্রীদের হাত-পা চোখ বেঁধে মারধর, ডাকাতি ও এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় মূলহোতাকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির নাম রাজা মিয়া (৩২)।
কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী বাস জিম্মি করে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ডাকাত দল বাসটি কয়েক ঘণ্টা তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ভেতরে যাত্রীদের মারধর ও লুটপাট চালায়।
এ সময় এক নারী যাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। বুধবার (৩ আগস্ট) দিবাগত মধ্য রাত থেকে ভোর পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। পরে বাসটি জেলার মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে রেখে পালিয়ে যায় ডাকাতরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস ২৫-২৬ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের দিকে রওনা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি দেয়। সেখান থেকে পাঁচ মিনিট যাওয়ার পর মূল সড়ক থেকে প্রথমে তিন জন যাত্রী উঠেন। কিছুদূর যাওয়ার পর আরও ৪ জন যাত্রী উঠেন। নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া কিছুদূর যাওয়ার পর আরও ৩ জন যাত্রী সেজে বাসে উঠেন। আনুমানিক রাত ১২টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর এক পর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছলে হঠাৎ করে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয় ডাকাত দলের সদস্যরা। কিছুদূর যাওয়ার পরে ডাকাতরা বাসটিকে ঘুরিয়ে কালিহাতী হয়ে মধুপুরে আসেন।
এসময় ডাকাত দলের সদস্যরা সবার হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে। পরে যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যেরা গাড়িতে থাকা এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বাসটি বালুর টিবির মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায় ডাকাতদলের সদস্যরা।
বাস যাত্রীরা বলেন, টানা ৩ ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর চালানো নির্যাতনের পর মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় এসে বাসটির গতি থামিয়ে নেমে যায় ডাকাত দল। মুহূর্তের মধ্যেই চোখ-মুখ ও হাত বাঁধা যাত্রীদের নিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের বালুর ঢিবিতে কাত হয়ে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে উদ্ধার করেন তাদের।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, ঈগল পরিবহনের ওই বাসে যাত্রী সেজে ডাকাতদলের সদস্যরা উঠেন। পরে টাঙ্গাইলের সীমান্তে এসে এক নারীকে ধর্ষণ ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায় তারা। এ ব্যাপারে পুলিশের ডিবিসহ মাঠে কাজ করছে একাধিক টিম। আসামিদের দ্রুত আটক করা হবে।
মধুপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন জানান, এ ঘটনায় থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নারী। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। ওই নারীর বয়স আনুমানিক ২৮ থেকে ৩০ বছর হবে। আসামিদের দ্রুত আটক করা হবে।
এবিসিবি/এমআই
