খাগড়াছড়িতে শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন: শিক্ষার্থীদের স্কুল বয়কট

জেলা প্রতিনিধিঃ খাগড়াছড়ির রামগড়ের প্রত্যন্ত এলাকা থানাচদ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে ৫ম শ্রেণির এক উপজাতীয় ছাত্রীকে সহকারী শিক্ষক বেলায়েত হোসেন যৌন নিপীড়ন করার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার স্কুল বয়কট করেছে শিক্ষার্থীরা।
গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) বেলা ১টায় স্কুল ছুটির পর সহকারী শিক্ষক বেলায়েত হোসেন হোমওয়ার্কের কথা বলে ৫ম শ্রেণির এক উপজাতীয় ছাত্রীকে শ্রেণিকক্ষে ডেকে এনে তার গোপণাঙ্গসহ স্পর্শকাতরস্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রীকে স্কুলের বাহিরে এনে ১০০ টাকার একটি নোট দিয়ে কাউকে কিছু না বলার কথা বলে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা শুক্রবার রাতে শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, মামলা রুজুর পর আটক হওয়া থেকে বাঁচতে অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত গা ঢাকা দিয়েছেন বলে পুলিশ জানায়। শিক্ষকের হাতে ছাত্রীর যৌন নিপীড়নের ঘটনায় থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেচ ম্যাপ এলাকার বিক্ষুব্ধ উপজাতীয় গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণসহ কঠোর শাস্তির দাবিতে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বৃহস্পতিবার। এ সিদ্ধান্তের ফলে শনিবার কোন ছেলে-মেয়ে স্কুলে আসেনি।
শনিবার (১৪ মে) সরেজমিনে পরিদর্শনকালে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী জানান, স্কুলের ১২০ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ১০-১২ জন ছাড়া সকলেই ত্রিপুরা উপজাতি। ঐ ভুক্তভোগী ছাত্রীও ত্রিপুরা। ফলে অভিভাবকরা এ ঘটনার জন্য শনিবার কোন ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠায়নি।
এদিকে, রামগড় উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. বেলায়েত হোসেন জানান, অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে সাময়িক বরখাস্তসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
রামগড় থানার ওসি মোহাম্মদ শামছুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা ফুলবালা ত্রিপুরা ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধনী ২০২০) ১০ ধারায় মামলা রুজুর পরই পুলিশ আসামি বেলায়েত হোসেনকে আটক করতে অভিযান শুরু করেছে। গা ঢাকা দিলেও খুব সহসাই পুলিশের হাতে তিনি ধরা পড়বেন।
এবিসিবি/এমআই