Type to search

Lead Story রাজনীতি

ক্ষমতায় থাকার জন্য পাগল হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ

মির্জা ফখরুল-এবিসিবি নিউজ-abcb news

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য পাগল হয়ে গেছে। কিন্তু জনগণ তাদের আর সুযোগ দেবে না। আর নয়, অনেক হয়েছে। আর সহ্য করতে রাজি নয় এ দেশের মানুষ। ৬শ নেতাকর্মীকে গুম করেছেন। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানবাধিকার কেড়ে নিয়েছেন। অনেক মায়ের বুক খালি করেছেন। ৩৪ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। তাতে কি সভা-সমাবেশ বন্ধ হয়েছে? বাংলাদেশের মানুষকে কি দমাতে পেরেছেন? মামলার ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। দিনে দিনে বাড়িতেছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ। মানুষ ছেড়ে দেবে না। সুতরাং কথা পরিষ্কার, মানে মানে বিদায় হোন, পদত্যাগ করুন। তা না হলে জনগণ ক্ষমতা থেকে নামাবে। সংসদ বিলুপ্ত করুন। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করুন। আর সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে নির্বাচন।

রোববার চট্টগ্রাম নগরীর নূর আহমদ সড়কে বিএনপির উদ্যোগে মেহনতি শ্রমিক জনতার বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু, মীর মো. নাছির উদ্দিন ও বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। শ্রমজীবী মানুষকে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে বিএনপি দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের সমাবেশ করার উদ্যোগ নিয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে এর যাত্রা শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিভাগেও এ ধরনের সমাবেশ হবে।

আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কেউ কেউ বলছেন তারা এবার সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। এ কথা শুনে দেশের মানুষ হাসবে, না কাঁদবে! ভূতের মুখে রাম নাম। মানুষ বারবার বেলতলায় যায় না। আমরাও যাব না। মানুষ আওয়ামী লীগের চরিত্র জেনে গেছে। তারা নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে যায়। শুধু একটি কথাই মনে থাকে। তা হলো লুট করো, চুরি করো, পাচার করো। এখন তারা ভদ্র সেজে চুপ করে বসে আছে। বিদেশিদের দেখানোর জন্য তারা এখন ভদ্র। আসলে তারা পরিকল্পনা করছে, কীভাবে যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকা যায়। এজন্য তারা প্রশাসন সাজাচ্ছে। মন্ত্রীদের পিএস যারা তাদের নিয়োগ দিচ্ছে ডিসি হিসাবে। ইউএনও বানাচ্ছে নিজেদের লোককে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পেন্ডিং মামলাগুলো দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে চাচ্ছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়মী লীগ বক ধার্মিক দল। বক মাছ ধরতে চুপ করে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। কিন্তু মাছ দেখলেই টুপ করে ধরে ফেলে। আওয়ামী লীগও এমন বক ধার্মিক। চুপ করে বসে আছে। আবার নতুন ফাঁদ পাতছে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। টুপ করে মাছটা গিলবে। তারা গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই কমিশনকে লোকে বলে ঠুঁটো জগন্নাথ।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের মানুষের দাবি একটাই- ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী সরকারকে চলে যেতে হবে। যেদিন ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবদের সঙ্গে আঁতাত করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল, সেদিন থেকেই মূলত শুরু হয়েছিল দেশের মানুষের আন্দোলন। মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। সেখানে থেকে আর ফিরে আসার সুযোগ নেই।’

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘গেম ইজ ওভার। খেলা শেষ। দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে, তারা আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে তারা এ দেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। বিদেশিরা আসছে ভোট চোরদের আস্তানা ভেঙে দিতে। বিদেশিরা ১৮-২০ ঘণ্টার জার্নি করে কেন এসেছে সেটা বুঝতে হবে। তারা এসেছে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, অংশীদারত্বমূলক নির্বাচন দেখতে। মানবাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ দেখতে। বিদেশি মন্ত্রী এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে যখন সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে তখন তো আত্মহত্যা করা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘শুধু বিদেশিদের সমর্থনের ওপর রাজনীতি নির্ভর করে না। বিদেশিদের সমর্থন সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করে। কিন্তু মূল দায়িত্ব নিতে হবে বিএনপিকে।’

সভাপতির বক্তব্যে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আন্দোলনের এখন দ্বিতীয় স্তর চলছে। মানুষ জেগেছে। তারা এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে।’

বরকত উল্লা বুলু বলেন, ‘৩৯টি দল একদফার ঘোষণা দিয়েছে। ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। আর আঁকড়ে ধরে থাকা যাবে না।’

মীর মো. নাছির উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা এসেছে। এই চট্টগ্রাম থেকেই আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা হবে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এসএম ফজলুল হক, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, বান্দরবান জেলা বিএনপি সভাপতি ম্যা ম্যা চিং, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন শ্রমিক নেতা এএম নাজিম উদ্দীন।-যুগান্তর

এবিসিবি/এমআই

Translate »