Type to search

Lead Story আন্তর্জাতিক জাতীয় বাংলাদেশ শিক্ষা

সারা দেশে কারফিউ জারি, সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত

কোটা সংস্কার ইস্যুতে চলমান আন্দোলনে দেশজুড়ে সহিংসতার পর সারাদেশে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

শুক্রবার রাতে গণভবনে ১৪ দলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, ১৪ দলের বৈঠক শেষে আইন মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সিদ্ধান্ত কার্যকরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি জানান, সারা দেশের যে যে জায়গায় সংঘাত সহিংসতার শঙ্কা রয়েছে সে সব জায়গায় বেসরকারি প্রশাসনকে সহায়তা করবে সেনাবাহিনী।

শুক্রবারের সহিংসতায় ঢাকায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ জনে

শুক্রবার ঢাকার যেসব এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়, তার অন্যতম রামপুরা-বনশ্রী। এখানকার ফরাজী হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ১০ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয় বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন হাসপাতালটির ম্যানেজার রুবেল হোসেন।

সবাই গুলিতে মারা গেছে বলে জানান তিনি।

তাদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এছাড়া, আহত হয়ে আরো অন্তত তিনশ জন চিকিৎসা নিয়েছেন ফরাজী হাসপাতালে। তাদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ ছিলেন বলে জানান মি. হোসেন।

কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্ট মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, জোবায়ের ব্যাপারী নামে একজনকে মৃত অবস্থায়ই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল।

মি. মিজান জানান, ৪০ বছর বয়সী জোবায়ের ব্যাপারী পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তারা।

“পথচারী হিসেবে সংঘর্ষের এলাকা অতিক্রম করছিলেন তিনি,” যোগ করেন মি. মিজান।

এছাড়া, অন্তত ৮৯ জন আহতকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে। যাদের মধ্যে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ ছিলেন।

আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা কোটা আন্দোলনকারীদের

কোটা সংস্কার ইস্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকদের সাথে সরকার আলোচনার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সংগঠকরা বলছে, এত প্রাণহানির পর আলোচনার পথ আর খোলা নেই।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিবিসি বাংলাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “ছাত্র হত্যার বিচার করা না হলে আমাদের আন্দোলন অব্যহত থাকবে”।

গত বৃহস্পতিবার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণার পর এই কর্মসূচিকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পরে। এই হামলায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মঙ্গলবার থেকে অর্ধ শতাধিকের বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

টানা দুই দিন শাটডাউন কর্মসূচির পর পরবর্তীতে শনিবার থেকে কোন কর্মসূচি কি অব্যাহত থাকবে?

এই প্রশ্নে মি. ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন, “আন্দোলনের বিষয়টি আর কোটা সংস্কারে নেই। এই যে শিক্ষার্থীদের গুলি করে মারা হল, সাধারণ মানুষের ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে, আবাসিক হলগুলো থেকে আমাদের বিতাড়িত করা হয়েছে আমরা এর বিচার দাবি করছি”।

তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন আরো চলবে। তবে নতুন কর্মসূচি শিগগিরই জানানোর কথাও বলেছেন তিনি।

আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়।

তবে এই সংগঠক জানিয়েছেন, কোটা সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ রাখার ব্যাপারে আগে থেকেই তাদের সুপারিশ রয়েছে। তারা সেই আগের অবস্থানেই আছে।

এই আন্দোলনে বিএনপি জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

শুক্রবার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে শিক্ষার্থীদের বাইরেও অনেককে অংশ নিতে দেখা গেছে।

এই ইস্যুতে অন্তত দুই জন সমন্বয়ক বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, কোন রাজনৈতিক দল যদি তাদের সাথে একাত্নতা প্রকাশ করে তার সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

মৈত্রী এক্সপ্রেস সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে

কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসের পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিল্লিতে রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে বিবিসি বাংলার কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষে সারা দেশে যে অস্থিরতা আর অশান্তি চলছে, সেই পটভূমিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বস্তুত এই বিক্ষোভের কারণেই শুক্রবারের মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি কর্তৃপক্ষ মাঝপথে থামিয়ে দিতে বাধ্য হয়। আগামী রবিবারের আগে ট্রেনটির পরিষেবা চালু করার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে দিল্লিতে রেল মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন।

(File Photo)

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,Maitree Express

হামলায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আহত, পিএস নিহত

রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে কোটা সংস্কার ইস্যুতে আন্দোলন চলাকালে হামলায় শুক্রবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আহত ও তার ব্যক্তিগত সহকারি (পিএস) নিহত হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তিগত সহকারির নাম আতিকুর রহমান জুয়েল।

সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের প্রেস সেক্রেটারি মাজহারুল ইসলাম মাসুম বিবিসি বাংলাকে এই খবর নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বিকেলের দিকে টঙ্গী থেকে উত্তরার দিকে একটি বহরের সাথে যাচ্ছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। এসময় বিক্ষোভকারীরা হামলা চালালে তাতে নিহত হন মি. জুয়েল।

মি. মাসুম জানান, হামলার পর সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, ব্যক্তিগত সহকারি ও গানম্যানকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানেও হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা।

পরে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বিবিসিকে বলেছেন, সেখানে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে তাদের সবাই বিক্ষোভকারী কী না এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি।

এ নিয়ে ঢাকায় শুক্রবার অন্তত ২৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

BBC

নরসিংদীর কারাগারে হামলার পর বের হয়ে গেছে কয়েকশ কয়েদি

কোটা সংস্কার ইস্যুতে আন্দোলনের মধ্যেই শুক্রবার নরসিংদীর জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে দখলে নেয় বিক্ষোভকারীরা। এসময় কারাগারটি কারারক্ষীদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অন্তত কয়েকশ কয়েদি কারাগার থেকে বের হয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় সাংবাদিক আশিকুর রহমান পিয়াল বিবিসি বাংলাকে জানান, “বিকেলের দিকে বিক্ষোভকারীরা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা পরিষদ ও জেলা কারাগারসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালায়। হামলার এক পর্যায়ে নরসিংদী জেলা কারাগারটি কারা পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সেখান থেকে বের হয়ে যায় কয়েদিরা। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। কারা সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদকর্মী আশিকুর রহমান পিয়াল জানান, এই কারাগারটিতে শুক্রবার পর্যন্ত অন্তত এক হাজারেরও বেশি কয়েদি ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন দণ্ডপ্রাপ্ত । এই বিষয়ে নরসিংদীর কারা কর্তৃপক্ষের সাথে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কাউকে ফোনে পাওয়া যায় নি। নরসিংদী শহরে বিকেলে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের পর সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ ও অন্যন্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে ব্যাপক সংঘর্ষ

মোহাম্মদপুরের টাউনহল ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুইটি ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। অন্যদিকে মিরপুরে জুমার নামাজের পর বেলা তিনটার দিকে কাজীপাড়া, শ্যাওড়াপাড়া এবং মিরপুর – ১০ এর দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় বেরিয়ে আসে। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিল ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে জানিয়েছে, এসময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে গুলির শব্দও শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন তারা।

BBC

মিরপুরে বিআরটিএ ভবনে আগুন

বিআরটিএ ভবন লাগোয়া একটি আবাসিক ভবনের বাসিন্দা শিউলি আক্তার জানিয়েছেন, বিকেল পাঁচটারও আগে মিরপুর ১৪ নম্বরে বিআরটিএ ভবনে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। তবে ঘটনার আধঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও অগ্নিনির্বাপণে কোনো ফায়ার সার্ভিসকে আসতে দেখা যায়নি। ভবনটিতে আগুন ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে এবং দাউ দাউ করে জ্বলছে। তিনি জানিয়েছেন, ভবন থেকে দেখা যায় হেলমেট পরিহিত কিছু তরুণ এবং ১৪/১৫ বছর বয়সী কিছু ছেলে বিআরটিএ ভবনে তাণ্ডব চালায়। হেলমেট পরিহিত ব্যক্তিরা কিশোরদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল বলে মনে হয়েছে তার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হয়েছে শিক্ষার্থীরা, সাভারে ব্যাপক মারামারি

শুক্রবার বিকাল তিনটা থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জড়ো হয়েছে হাজারো শিক্ষার্থী। এতে করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে, শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিবিসিকে এমনটাই জানান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হাসিব জামান। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এখন পর্যন্ত কেউ বাঁধা দেয়নি বলে তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে পারছে। তবে সাভারে ব্যাপক মারামারি হয়েছে। গত ১৭ই জুলাই অনির্দিষ্টকালের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং শিক্ষার্থীকে হল ছাড়তে বাধ্য করা হয়। সেজন্য, “যেসব হল সিলগালা করা হয়েছিলো, সেগুলোর কয়েকটা তালা ভেঙ্গেছে শিক্ষার্থীরা এবং আজ আরও হলের তালা ভাঙ্গা হতে পারে।”

রামপুরা থানায় ঘেরাও, বিক্ষোভকারীদের হামলা

বিকেল চারটার দিকে রাজধানীর রামপুরা থানা ঘেরাও করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংর্ঘষ হয়। রামপুরা থানার সামনে থেকে প্রত্যক্ষদর্শী আহসান অপু নামে একজন সংবাদকর্মী বিবিসি বাংলাকে জানান, দুপুর দুইটার পর থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রামপুরা থানার সামনে আসে, একটি মোটর সাইকেলে আগুন দেয়। ভাংচুর করা হয় একটি পুলিশ ভ্যান। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি চালায়। এসময় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটে বিক্ষোভকারীদের। বিকেল চারটার দিকে রামপুরা থানার তিনদিক থেকে ঘেরাও করে আন্দোলনকারীরা। এসময় বেশ কিছু ভবন ভাংচুর করা হয়। পাশে থাকা সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন একটি ভবনে উঠে থানায় হামলা চালায়। এক পর্যায়ে পিছু হটে পুলিশ। বিকেল ছয়টা পর্যন্ত থানার চারদিক ঘেরাও করে থানায় হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা।

গুলশান-বাড্ডা-নতুনবাজারে সংঘর্ষের যে চিত্র দেখলেন বিবিসি বাংলার সংবাদদাতারা

শুক্রবার সকাল থেকেই রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা লিঙ্ক রোডে থেমে থেমে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিকেল সাড়ে চারটায়ও বিবিসি সংবাদদাতারা সেখানে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হতে দেখেছে। আন্দোলনকারীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাড্ডার বিভিন্ন গলি থেকে পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ থেমে থেমে তাদের দিকে টিয়ারশেল, রাবারবুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে নানা বয়সী ও শ্রেণি-পেশার মানুষ দেখা গেছে। তাদের অনেকে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় ছিলেন। কেউ ছবি তুলতে চাইলে বাধা দিতে দেখা যায় তাদের। পুলিশ প্লাজার দিক থেকে গুলশান-১ এর সড়কের দিকে আন্দোলনকারীকে জড়ো হতে গেছে। তাদের ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করতে দেখা যায়। এসময় তাদের সঙ্গে কিছু সংখ্যক স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীদের যোগ দিতে দেখা গেছে। বেলা পাঁচটার দিকে আমেরিকান অ্যাম্বেসির সামনে যায় বিবিসি বাংলার একটি টিম। সেখানে তিনদিক থেকে আন্দোলনকারী ও পুলিশ সদস্যদের সাংঘর্ষিক অবস্থানে দেখা গেছে। অ্যাম্বেসির উল্টো পাশে ভাটারা থানা অতিক্রম করে কিছু দূরেই পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলতে দেখা যায়। এসময় সেখানে কিছু সংখ্যক নারী পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। নতুনবাজারের দিকে রাস্তাও আন্দোলনকারীদের উপস্থিতি ছিল। সেখানে ক্রমাগত টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়তে দেখা যায় পুলিশকে। বিপরীত পাশে বাড্ডার দিকে সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে বিপরীতমুখী অবস্থানে দেখা যায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের। সেখানে বিজিবির দুটি আর্মার্ড পারসোনাল ক্যারিয়ার (এপিসি) নিয়ে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় ছিল পুলিশ। গোটা প্রগতি সরণিতে ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছে। পুড়ে যাওয়া অন্তত ৩টি গাড়ি ও ৪টি মোটরসাইকেল দেখতে পেয়েছে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতারা। সমগ্র প্রগতি সরণিজুড়ে সড়কে স্থানে স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। পড়ে ছিল গাছপালা ও ধাতব সড়ক বিভাজক। এ সময় জরুরি কাজে বের হওয়া পথচারীদের বিপাকে পড়তে দেখা যায়। এক বৃদ্ধ চা বিক্রেতার সাথে কথা হয় বিবিসি বাংলার সংবাদদাতার। তিনি হাঁটতে পারেন না বলে অ্যাম্বেসির সামনে রাস্তার ওভারব্রিজের নিচে বসে ছিলেন। পুলিশ সদস্যরা তাকে বারবার সেখান থেকে চলে যেতে বলছিলেন। মোহাম্মদ সোবহান নামের এই বৃদ্ধ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “আমি হাঁটতে পারলে এহানে বসে থাকতাম বাবা? এই অশান্তি হইবো তো আমি জানতাম না। তোমাগো কাকিরে পাঠিয়ে দিছি। আমি রিকশা না পেলে ক্যামনে যাই?” এই এলাকায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে ক্লান্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই পুলিশ সদস্যরা সংঘর্ষে তাদের বেশ কয়েকজন সহকর্মী আহত হওয়ার কথা জানান।

ঢাকা মেট্রোরেল বন্ধ থাকবে

শনিবার থেকে মেট্রোরেল চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা তরফদার মাহমুদুর রহমান জানিয়েছেন, জননিরাপত্তার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশ বহাল থাকবে।

পল্টন শান্তিনগর রণক্ষেত্র

ঢাকার পল্টনে বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে। একই সাথে শান্তিনগর মোড়ে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এদিকে গত কয়েকদিন রেল চলাচল বন্ধ থাকায় রেলস্টেশনে অপেক্ষমাণ মানুষদের দেখা যায়।

BBC

রামপুরা বনশ্রীতে নিহত তিনজন

সকাল থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে বিকেলে ঢাকার বনশ্রীতে অন্তত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এতে অন্তত ৩০০ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বনশ্রীর ফরাজি হাসপাতালের ম্যানেজার রুবেল হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিকেল পর্যন্ত তিনজন মারা গেছে। অন্তত ২০০ গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির চিকিৎসা দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ”। তিনি জানান, আরো অন্তত একশোরও বেশি গুলিবিদ্ধ আন্দোলনকারী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন, কিন্তু চিকিৎসা দেয়ার সুযোগ না থাকায় তাদের পাশের অ্যাডভান্স হাসপাতাল ও আল রাজী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মি. রুবেল বলেন, রাস্তায় আন্দোলনকারীর বাইরে বনশ্রীর একটি বাসায়ও একজন নারী গুলিতে আহত অবস্থায় ফরাজী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সকাল থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বনশ্রী ও রামপুরার রাস্তায় দেখা যাচ্ছিলো।

BBC

ভারত মনে করে এটা ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়’

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অশান্ত বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে এই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। শুক্রবার বিকেলে দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুধু সংক্ষিপ্ত উত্তর দেন, “আমরা এটিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবেই বিবেচনা করছি।“ তবে বাংলাদেশে এই মুহুর্তে যে ভারতীয় ছাত্রছাত্রী বা ভারতীয় নাগরিকরা আছেন তাদের সুরক্ষার জন্য ভারত সরকার সব রকম সাহায্য করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও তিনি জানান। ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস ইতিমধ্যেই সে দেশে থাকা ভারতীয়দের জন্য একটি ‘ট্র্যাভেল অ্যাডভাইসরি’ জারি করেছে এবং যে কোনও দরকারে ভারতীয়দের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোটামুটিভাবে বাংলাদেশে ৮৫০০ ভারতীয় শিক্ষার্থী পড়াশুনো করছেন এবং আরও নানা কাজে ১৫ হাজারের মতো ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে আছেন। তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য ভারত সরকার সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত বলেও জানানো হয়েছে। রণধীর জওসওয়াল আরও বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নিজে বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক ‘মনিটরিং’ করছেন।

credit : MEA INDIA

ছবির উৎস,MEA INDIA

ছবির ক্যাপশান,রণধীর জয়সওয়াল

ঢাকায় শুক্রবার দুইজন নিহত: ডিএমপি

ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ফারুক আহমেদ বিবিসিকে বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিক্ষোভকারীদের পুলিশের সংঘর্ষে শুক্রবার ঢাকায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এদের একজন যাত্রাবাড়ীতে এবং অপরজন ঢাকার রামপুরায়। এছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নিজেদের কার্যালয়ে সমাবেশ করতে পারবে। এর বাইরে ঢাকার অন্য কোন স্থানে সমাবেশ ও মিছিল করা নিষিদ্ধ করেছে ডিএমপি।

চলমান সহিংসতার সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনও সম্পর্ক নেই: অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বিবিসিকে বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন তাদের যেসব ক্ষতি হয়েছে, যেমন প্রাণহানিসহ যেসব ক্ষতি হয়েছে, সেগুলোর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। এছাড়া, চলমান সহিংসতা সম্বন্ধে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে এর কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বিবিসিকে বলেছেন, “আমরা এটা নিশ্চিত করছি যে বিভিন্ন জায়গায় যে ভায়োলেন্সগুলো হচ্ছে, সেগুলোর সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কখনোই সম্পৃক্ত নয়। কোনও রাজনৈতিক দল তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ব্যবহার করতে চাইলে, কখনোই তাদেরকে সে সুযোগ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে না।” এছাড়া, গতকাল সরকারের পক্ষ থেকে যে ২০ শতাংশ কোটা বহাল রাখার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সে বিষয়ে তারা ‘সম্মত নন’ বলে তিনি জানিয়েছেন। কোটা পাঁচ শতাংশের বেশি করতে হলে গবেষণাভিত্তিক প্রমাণ থাকতে হবে – উল্লেখ করে মি. আব্দুল্লাহ বলেন, “বাস্তবতার নিরিখে প্রান্তিক জনপদকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য সরকারের সাথে আলোচনায় বসা যেতে পারে। তবে, কোটা বাড়ালেও তা সর্বোচ্চ আট থেকে ১০ শতাংশ বাড়ানো যেতে পারে।” তিনি জানিয়েছেন, আজ তারা তাদের পাঁচ থেকে আট দফা দাবির কথা জানাবেন। সরকার যদি সেইসব দাবী পূরণ করার নিশ্চয়তা দেয়, তাহলেই কেবল তারা আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন মি. আব্দুল্লাহ।

পল্টন, বিজয় নগর ও আশপাশের এলাকায় পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ

ঢাকার পল্টন, বিজয় নগর ও আশপাশের এলাকায় পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছে। শুক্রবার সকাল থেকেই এসব এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। দুপুরে নাইটিঙ্গেল মোড় এলাকায় গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখতে পান বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা। ভেতরে এগিয়ে গিয়ে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন দেখা গেছে। এসময় বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কি এলাকা থেকে মুহুর্মুহু ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। বায়তুল মোকাররম মসজিদ সংলগ্ন এলাকা ঘিরে বিভিন্ন স্থানে ও গলিতে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান দেখা গেছে। সমগ্র এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাস্তাঘাটে ভাঙা ইট, গাছের ডাল, বিজ্ঞাপনী বোর্ড পড়ে আছে। পুলিশ দফায় দফায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। এখানে বেশ কিছু আন্দোলনকারী ও পুলিশ আহত হয়েছেন। অনেকেই আশেপাশে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানতে পেরেছে বিবিসি বাংলা। তবে আহতের সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনার জন্য সরকার অপেক্ষা করছে : আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনার জন্য সরকার অপেক্ষা করছে। “আমি নিশ্চিত তারাও বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করছেন যে তারা আলোচনায় আসবেন কী না। তারা যখন যে সময় আলোচনায় আসতে চান আমরা তখনই আলোচনায় বসতে রাজি আছি। ” আন্দোলকারীদের সাথে সরকারের তরফ থেকে সরাসরি কোন যোগাযোগ করা হয়েছে কী না? বিবিসি বাংলার এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, “সরাসরি যোগাযোগ করার তো প্রশ্ন আসে না। মিডিয়ার মাধ্যমে সে বার্তা দেয়া হয়েছে। এটা তো আমরা পাবলিকলি বলে দিয়েছি।” আন্দোলনকারীরা সরকারের আলোচনার আহবান ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে সংঘাতও অব্যাহত আছে। এখন পর্যন্ত ৩২ জন নিহত হবার খবর নিশ্চিত করেছে বিবিসি বাংলা। এরমধ্যে মঙ্গলবার ৬ জন, বৃহস্পতিবার ২৫ জন এবং শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত একজন নিহত হয়েছে। সংঘাতের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “ এটা দুঃখের, নো ডাউট অ্যাবাউট ইট (এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই)। এটা অত্যন্ত দুঃখের। আমি এখনো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই সহিংসতা কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা করে নাই। এটা আমার বিশ্বাস হয়না।” আন্দোলনকারীরা বলছেন, পুলিশ অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে তাদের হঠিয়ে দেবার চেষ্টা করছে। “পুলিশ গতকাল কোন শক্তি প্রয়োগ করে নাই। যখন নাশকতা হয় তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তব্যই হচ্ছে নাশকতা বন্ধ করা,” বলেন আইনমন্ত্রী। পুলিশ শক্তি প্রয়োগ না করলে বৃহস্পতিবার এতো মানুষ নিহত হলো কেন? এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, “ আমি এই ফিগারের (সংখ্যা) সাথে ঐকমত্য পোষণ করতে পারছি না। পুলিশ কালকে কোন গুলি চালায় নাই, পুলিশের গুলিতে কেউ নিহত হয় নাই।”

বিবিসি বাংলা

Translate »