সউদী সফর, স্বার্থের জন্য নীতি বিসর্জন বাইডেনের

শুক্রবার সউদী আরব সফরে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে সউদী ক্রাউন প্রিন্সের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে নীরব ছিলেন তিনি। বিনিময়ে তিনি তেলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সউদী আরবকে চাপ দিয়েছেন।
বাইডেনের অস্বস্তি স্পষ্ট ছিল কারণ তিনি রাজপুত্রের সাথে হ্যান্ডশেক এড়িয়ে গিয়েছিলেন যা শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিকভাবে কম সমস্যাযুক্ত প্রমাণিত হয়নি। ক্যামেরা তাদের পরবর্তী বৈঠকের সূচনা রেকর্ড করার সময়, প্রেসিডেন্ট জামাল খাশোগির কোন উল্লেখ করেননি, যিনি ছিলেন ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট সউদী অপারেটিভদের দ্বারা ২০১৮ সালে হত্যা করা হয়েছিল, এবং যুবরাজ নীরবে হাসলেন যখন একজন সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করলেন যে তিনি পরিবারের কাছে ক্ষমা চান কিনা।
কিন্তু বাইডেন পরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে, খাশোগির হত্যাকাণ্ড ছিল ‘আক্রোশজনক’ এবং বলেছিলেন যে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ক্রাউন প্রিন্সের মুখোমুখি হয়েছেন। ‘আমি এটিকে বৈঠকের শীর্ষে উত্থাপন করেছি, আমি সেই সময়ে কী ভেবেছিলাম এবং এখন এটি সম্পর্কে কী ভাবছি তা স্পষ্ট করে দিয়েছি,’ তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটি নিয়ে আলোচনায় সরল এবং সরাসরি ছিলাম। আমি আমার দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার করে দিয়েছি।’
২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সউদী কনস্যুলেটে হত্যা করা হয় ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন সউদী ক্রাউন প্রিন্স নিজেই। যদিও প্রথম থেকেই তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। নিজের নির্বাচনী প্রচারণা চলার সময়েও বাইডেন সউদী আরবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। খাসোগি হত্যাকাণ্ডের জন্য সউদী আরবকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরই এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আনেন বাইডেন। তাতে বলা হয় যে, ক্রাউন প্রিন্সের নির্দেশেই খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে।
সউদী ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন বাইডেন। শুক্রবার জেদ্দার আস-সালাম প্রাসাদে এই আলোচনা হয় বলে সউদী প্রেস অ্যাজেন্সি জানিয়েছে। তবে সেখানে উপেক্ষিত থাকে খাসোগি প্রসঙ্গ। মধ্যপ্রাচ্য সফরের শেষ পর্যায়ে বাইডেন এখন সউদী আরব রয়েছেন। প্রথমেই তিনি ইসরাইল এবং পরে ফিলিস্তিন সফর করেন বাইডেন। পরে তিনি ইসরাইলের তেল আবিব থেকে সরারসি ফ্লাইটে জেদ্দা আসেন। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের এটিই সরাসরি ইসরাইল থেকে সউদী আরব আগমন ঘটল।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস।