নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, দেশের সমস্যা তত বাড়বে: তারেক রহমান

‘নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, দেশের সমস্যা তত বাড়বে’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ‘আমার বিএনপি পরিবার’র আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জরুরি প্রয়োজন তুলে ধরে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণ ঠিক করবে, দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তারা কাদেরকে দিবে। কাজেই এই বিষয়ে (নির্বাচন) যত দেরি হবে, আমরা মনে করি ও বিভিন্নভাবে ধারণা করি, তাতে সমস্যা বাড়বে বৈই কমবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের অধিকার যত দ্রুত জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারব, জনগণের অধিকার যত দ্রুত এ দেশে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব, তত দ্রুত দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি বিষয় এখানে সকলে বলেছেন, যত দেরি হবে নির্বাচনের, তত বেশি বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের ঢালপালা বাড়তে থাকবে সমাজের মধ্যে, বিভিন্ন কথা-বার্তায়। এখনই বিভিন্ন রকম কথা-বার্তা আস্তে আস্তে ছড়াচ্ছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘যারা পালিয়ে গেছে এই দেশ থেকে, তারা দেশের মানুষের বিপুল সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। অবশ্যই তারা সেই সম্পদগুলো ষড়যন্ত্রের পেছনে ব্যয় করবে।’
তার মতে, ‘দেশকে যদি স্টেবল সিচ্যুয়েশনের ভেতরে আনতে হয়, দেশকে যদি ঐক্যবদ্ধভাবে ধরে রাখতে হয়, দেশকে যদি স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে ধরে রাখতে হয়, তবে দায়িত্ব অবশ্যই জনগণের হাতে ছেড়ে দিতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা সব সময় মনে করি, এ দেশের মূল মালিক বাংলাদেশের জনগণ। এই দেশ নিয়ে কি হবে না হবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার একমাত্র ক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের। পুরো পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে যা বুঝায়, সেটি হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করে থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তারা কি চায়, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তার জবাব দিয়ে থাকে তারা দেশ সম্পর্কে কি বলতে চায়, রাজনীতিবিদকে তারা কি বলতে চায় সেটাও তারা নির্বাচনের মাধ্যমে বলে থাকে।’
সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা আড়াই বছর আগে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। এই ৩১ দফার নিয়ে দেশের মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করছি, মানুষকে বলার চেষ্টা করছি—আমাদের সেই ৩১ দফা কী।’
তিনি বলেন, ‘দেশের অনেক মৌলিক সমস্যা আছে, যার একটি বেসিক সমাধানের পরিকল্পনা আমাদের ৩১ দফায় দিয়েছি। আমরা যদি মানুষের সমস্যার সমাধান করতে না পারি, তাহলে উচ্চ কক্ষই বলুন, এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়াই বলুন, আরও যথাযথ ক্ষমতার ভারসাম্যই বলুন—দিন শেষে মানুষের কোনো উপকার হবে না।’
গত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার আলোকচিত্র সাংবাদিকদের প্রতি সহমর্মিতা এবং সম্মান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
‘আমার বিএনপি পরিবার’র উদ্যোগে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনকারী বিভিন্ন গণমাধ্যমের আলোকচিত্র সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সঙ্গে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আহত সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
-ইত্তেফাক