Type to search

Lead Story অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের সময় কী কী সাথে আনতে পারবেন, কী পারবেন না

  • বিশেষ অনুমতি ছাড়া খাদ্যদ্রব্য যেমন তাজা ফল বা সবজি, মাংস ও মাংসজাত দ্রব্য, চাল, ডাল আর শিমের বিচি, ডিম এবং মিঠাপানির মাছ সঙ্গে আনা নিষেধ।
  • বাণিজ্যিক মোড়কে শস্যবীজ এবং ব্যক্তিগত ব্যবহার্য প্রেসক্রিপশন ওষুধ আনতে পারবেন।
  • যদি সঙ্গে আনা দ্রব্যাদির বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবগত করা না হয় বা এখানে ফেলে দেওয়া হয়, তাহলে সেই যাত্রীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া, এমনকি অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশাধিকার হারাতে পারেন।

অস্ট্রেলিয়ায় কঠোর জৈবনিরাপত্তা আইন এবং সীমান্ত বিধিনিষেধ আছে যাতে সীমান্ত পেরিয়ে এমন কিছু এদেশে প্রবেশ করতে না পারে যা এদেশের অনন্য পরিবেশ ও কৃষিশিল্পের ক্ষতি করতে পারে।

এদেশে কোন কোন দ্রব্য আমদানী করা যাবে বা ইমিগ্রেশনের সময়ে আনা যাবে তা বায়োসিকিউরিটি ইমপোর্ট কন্ডিশন্স সিস্টেম (বিকন) এর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশেষ এই জৈবনিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার, ওয়াটার এন্ড এনভাইরনমেন্ট এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার তদারকি করে থাকে।

এদেশে আসার সময় কোন কোন দ্রব্য সাথে আনা যাবে আর কোনটা আনা যাবে না সেটা যাত্রীদের নিজ দায়িত্বে জেনে নেওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন এলান সেল্ফ। তিনি ব্রিসবেন এয়ারপোর্টের অপারেশন্স ম্যানেজার। যাত্রীদেরকে তিনি ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক নির্ধারিত বিধিমালা মেনে জিনিসপত্র আনার পরামর্শ দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক যাত্রীদের সঙ্গে আনা তাজা ফল আর সবজির মাধ্যমে জীবন্ত পোকামাকড় আর উদ্ভিদের রোগবালাই এদেশে ঢুকে পড়তে পারে।

যা কিছু জৈবনিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ যেমন খাদ্য, পশুপণ্য এবং কাঠের তৈরি পণ্য সহ উদ্ভিজ্জ দ্রব্য সাথে আনা হলে তা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হয়। কর্তৃপক্ষকে অবগত করার জন্য যাত্রীদেরকে ‘ইনকামিং প্যাসেঞ্জার কার্ড’ পূরণ করতে হয়। এই ফর্ম পূরণ করার সময় যাত্রীরা সাথে নিয়ে আসা দ্রব্যাদির বিবরণ তুলে ধরেন বা ঘোষণা করে থাকেন।

 

Fruit fly details

Fresh fruit and vegetable could introduce serious pests, such as fruit fly, that could be devastating for Australian agriculture and unique environment
GettyImage / Joao Paulo Burin

 

বায়োসিকিউরিটি অফিসাররা বিবরণে তুলে ধরা দ্রব্যাদি যাচাই করে সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন— ঘোষিত দ্রব্যাদি ইমিগ্রেশনের মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে পারবে কি না। যা কিছু অস্ট্রেলিয়ার জৈবনিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর বলে তারা মনে করেন, সেটা ধ্বংস করে ফেলা হয়। অনেক সময় এইসব দ্রব্য ইমিগ্রেশন দিয়ে সাথে আনতে না পারলেও তা রপ্তানি বা প্রক্রিয়াজাত করে এদেশে আনা যায়।

মিস্টার সেলফ বলেন, বেশিরভাগ দ্রব্যই অস্ট্রেলিয়ায় আনা যায় কিন্তু যা কিছু এদেশে আনার মধ্য দিয়ে রোগবালাই বাড়ে বা ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের বিস্তার বাড়ায়, সেসব এদেশে নিষিদ্ধ। ফলের ভেতরে থাকা জীবন্ত পোকা বা উদ্ভিদের রোগবালাই এদেশে ঢুকে পড়তে পারে। জৈবনিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন কিছু আনতে হলে ডিপার্টমেন্টের বিশেষ ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়।

শুকনো গরু আর শুকরের মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত মাংসের মাধ্যমে এদেশে আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার এবং পায়ের আর মুখের রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে।

এযাবৎকালে বিভিন্ন দেশে দেখা দেওয়া রোগের প্রাদুর্ভাব অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত ছড়াতে পারেনি। অনেক রোগবালাই থেকেই অস্ট্রেলিয়া সংক্রমণ মুক্ত থাকতে পেরেছে যেমন বার্ড ফ্লু (H5N), আফ্রিকার সোয়াইন ফিভার, পায়ের আর মুখের রোগসমূহ। কিন্তু আচমকাই এইসব রোগের প্রাদুর্ভাব এদেশে জানমাল সহ কৃষি অর্থনীতির বিপর্যয় ঘটাতে পারে।

 

Protecting Australia from African Swine Fever

Department of Agriculture

 

এইজন্য যে কোন মাংস বা পশুপণ্য সাথে করে আনতে হলে কতৃপক্ষকে অবশ্যই অবগত করতে হবে।
অভ্যাগত যাত্রীরা অস্ট্রেলিয়ায় লোনা পানির মাছ কেটেকুটে আনতে পারবেন কিন্তু মিঠাপানির মাছ নয়— বলেছেন মিস্টার সেলফ।

দুগ্ধজাত পণ্য, কেক, মধু, সিফুড (সমুদ্র থেকে আহরিত খাদ্য যেমন সামুদ্রিক আগাছা বা সিউইড, কাঁকড়া ইত্যাদি) আপনি সাথে আনতে পারেন তবে কর্তৃপক্ষ সেটা যাচাই বাছাই করে দেখবে আর ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য চাল, ডাল, শস্যদানা সাধারণত এদেশে আনতে দেওয়া হয় না।

আমদানি করার বৈধ অনুমতিপত্র ছাড়া ডিম, জীবন্ত প্রাণি, উদ্ভিদ আর উদ্ভিদের ডালপালা বা কলম, উদ্ভিজ্জ পণ্য এবং অন্যান্য জৈব উপকরণ অস্ট্রেলিয়ায় আনা যায় না।

রোপনের জন্য উদ্ভিদের চারা আনতে হলে তা বাণিজ্যিক মোড়কেরটা হতে হবে যেটার গায়ে উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম সহ সব দরকারী তথ্য লেখা আছে।

 

Seeds and Packets

Seeds must be commercially packaged and must have a correct botanical name on the packaging
GettyImage / Hans L Bonnevier, Johner

 

মিস্টার সেলফ জানান, কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে গোপনে কোন কিছু আনার পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে। এজন্য মোটা অংকের জরিমানা হতে পারে।

গোপনে বাঁশ বা কাঠের পণ্য ( যার ভেতরে পোকামাকড় থাকতে পারে) আনলে চারশো ডলারেরও বেশি জরিমানা হতে পারে। কতৃপক্ষকে না জানিয়ে টাটকা ফল নিয়ে আসলে ১৩শত ডলার; তবে মাংস জাতীয় খাবার আনার তথ্য গোপন করলে সবচেয়ে বড় অংকের জরিমানা দিতে হয়— অর্থাৎ ২৬০০ ডলার।

সঙ্গে আনা দ্রব্যের কথা গোপন করার পরিণামে যাত্রী অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের অধিকার হারাতে পারেন। তার ভিসাও বাতিল হয়ে যেতে পারে।

বিদেশে কোথাও বেড়াতে গেলে স্যুভেনির বা ভ্রমণের স্মারক কেনার সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্সের বর্তমান সুপারিন্টেনডেন্ট ম্যাথিউ রোয়ে।

এদেশে আগ্নেয়াস্ত্র আমদানী করতে হলে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্সের লিখিত অনুমতিপত্র অবশ্যই দরকার হবে। ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে করে আনা যায়, সেক্ষেত্রে অনেক সময় ডাক্তারের ইংরেজীতে লেখা ব্যবস্থাপত্র দরকার হয়।

 

Variety of Pills

Brining in the the medicine for personal use often require a prescription written in the English language
GettyImage / Shana Novak

 

যদি কোন বিষয়ে আপনি অনিশ্চিত বোধ করেন অর্থাৎ কোনো একটি জিনিস সাথে নেয়া ঠিক হবে কিনা আপনি পরিস্কার জানতে চান,
তাহলে সেটা আপনার ‘ইনকামিং প্যাসেঞ্জার কার্ডে’ লিখে ফেলুন আর সেখানে কর্মরত বর্ডার ফোর্সের কোন অফিসারের কাছে জিজ্ঞেস করুন।

 

Australia Tightens Border Control Measures Due To Concerns Over UK Covid-19 Strain

An Australian Border Force personnel
Matt Jelonek/Getty Images

 

অস্ট্রেলিয়ায় আসার সময় যা কিছু সাথে আনতে পারবেন, যা আনতে পারবেন না— তা বিস্তারিত জানতে ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার, ওয়াটার এন্ড এনভাইরনমেন্ট এর ওয়েবসাইট দেখুন

আর যদি এলকোহল বা মদ্যজাতীয় পানীয়, সিগারেট, ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম এবং মূল্যবান দ্রব্যাদি যেমন গয়না ইত্যাদি সাথে আনতে চান, তাহলে আগে অস্ট্রেলিয়ান হোম এফেয়ার্স কর্তৃপক্ষের বিধিবিধান জেনে নিন।

এসবিএস বাংলা
Translate »