ঢাকার গোপীবাগে বেনাপোল থেকে যাত্রী নিয়ে আসা ট্রেনে আগুন, ৪ জনের মৃত্যু

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে শুক্রবার রাত নয়টার দিকে বেনাপোল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসা ট্রেনটিতে আগুন লেগে অন্তত চার জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
র্যাবের গণমাধ্যম পরিচালক খন্দকার আল মঈন রাত সাড়ে দশটায় ঘটনাস্থলেই সাংবাদিকদের জানান যে তখন পর্যন্ত ট্রেনের ভেতর থেকে চারটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে রাত সাড়ে নয়টার দিকে গোপীবাগ কাঁচাবাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
জানা গেছে ট্রেনটির কয়েকটি বগিতে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে এবং সেখানেই ট্রেনটি থেমে গেলে এলাকাবাসী আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করে।
দ্রুতই ফায়ার সার্ভিসের একাধিক দল সেখানে পৌঁছায়। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে ট্রেনটিতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেনি র্যাব। মি. মঈন বলেন রেল কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে তদন্ত করছে, পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও এ নিয়ে কাজ করছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ট্রেনটির তিনটি কম্পার্টমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ উদ্দিন।
‘মানুষকে ভীত, সন্ত্রস্ত করা, স্বাভাবিক জীবন যাপনকে বাধাগ্রস্ত করাই এ ঘটনার উদ্দেশ্য’, বলেন মি. মহিদ।
শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এটি যে নাশকতা, সেটি তো স্পষ্ট। পরিকল্পিতভাবে এটি করা হয়েছে। যারা করেছে তাদের আইনের আওতায় নেয়া হবে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের ৩৬ ঘণ্টারও কম সময় বাকি থাকতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দল বিএনপি যে দুদিনের হরতাল কর্মসূচি দিয়েছিলো সেটি শনিবার সকাল থেকে শুরু হবার কথা রয়েছে।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এ নির্বাচন বর্জন করছে এবং তারা ভোটদান থেকে বিরত থাকার জন্য দেশবাসীকে আহবান জানিয়েছে।
রোববার এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ছবির উৎস,BANGLADESH FIRE SERVICE & CIVIL DEFENCE
এর আগেও বিএনপির হরতালের মধ্যে গত ১৯শে ডিসেম্বর ঢাকায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন দেয়া হলে মা ও শিশু সন্তানসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়।
নেত্রকোনা থেকে ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তরা আগুন দিলে তখন এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে ১৪ই ডিসেম্বর নীলফামারীর ডোমারে রেললাইনের ৭২টি ক্লিপ খুলে ফেলে নাশকতার চেষ্টা করা হয়েছিল।
তবে এলাকাবাসী সেটা আগেই দেখতে পাওয়ায় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেন।
এছাড়া গত ১৩ই ডিসেম্বর গাজীপুরের ভাওয়ালে রেল লাইন কেটে ফেলায় এই মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের সাতটি বগিসহ উল্টে পড়েছিল।
সেই ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয় এবং একদিন ধরে ওই লাইনে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়েছিল।

ছবির উৎস,BANGLADESH FIRE SERVICE & CIVIL DEFENCE
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে গত কয়েকমাস ধরে অবরোধ, হরতালের মতো অব্যাহত কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
হরতাল বা অবরোধের দিনে বা আগের রাতে ঢাকা ও বিভিন্ন এলাকায় যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
বাসে দেয়া আগুনে বাস চালক ও শ্রমিকসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছিল।
এসব ঘটনায় সরকার এবং পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপিকে দায়ী করা হলেও বিএনপি বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিবিসি