গুম-খুনের পরেও বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এত নির্যাতন, এত নিপীড়ন, এত হত্যা, এত গুম-খুনের পরেও বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। বিএনপি সেই ফিনিক্স পাখির মতো আবার ওই ধ্বংসাবশেষ থেকে জেগে উঠছে- এটাই হচ্ছে সরকারের সবচেয়ে রাগের কারণ, ভয়ের কারণ।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বিএনপির চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী হেল্প সেলের উদ্যোগে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী ও পুলিশ-র্যাব কর্তৃক ‘গুম-খুন-ক্রসফায়ারে’ হতাহত নেতা-কর্মীদের পরিবারকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ভোলা, ফেনী, নেত্রকোনা, চট্টগ্রামের যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের ১৪ জন নেতা-কর্মীর পরিবারকে এককালীন ও শিক্ষাবৃত্তির আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। গত ৯ বছরে সারাদেশে ‘গুম-খুন-নির্যাতনের শিকার’ ৩২৭টি পরিবারকে সহায়তা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী হেল্প সেল।
দমনপীড়নে বিএনপিকে দমানো যাবে না বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীকে বেগম খালেদা জিয়াকে তারা (সরকার) বাইরে চিকিৎসা করতে দিতে চায় না। বিরোধিতা করে। কেন? যদি তিনি বেরিয়ে আসেন তাহলে তারা সামাল দিতে পারবে না। তারেক রহমান সাহেব যদি দেশে আসেন তাহলে এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসবে- এই ভয়েই তারা সেটা করতে চায় না।
তিনি বলেন, সোমবার থেকে আমাদের আবার নতুন করে গ্রাম পর্যায়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে এবং সেটা হচ্ছে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে। গোটা দেশের মানুষ দেখছে, মানুষ কীভাবে মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসছে। প্রায় প্রতিটি থানা-উপজেলাতে কিন্তু বড় বড় মিছিল হয়েছে। এর মধ্যেও তারা কেউ থেমে নেই।
তিনি আরও বলেন, গতকাল লক্ষ্মীপুরে শহিদ উদ্দিন চৌধুরীর বাড়িতে আক্রমণ করেছে, বরিশালের গৌরনদীতে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাদেরকে ঘর থেকে ধরে এনে মারধর করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন করেছে।
নির্যাতনের শিকার পরিবারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, এই কথা আমরা দিতে পারি যে, আমরা যদি এই সরকারকে পরিবর্তন করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি, একটা সত্যিকারের জনগণের পার্লামেন্ট আনতে পারি, তাহলে আমাদের এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সকলের পুনর্বাসনের জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা আমাদের সীমিত সাধ্যের মধ্য দিয়ে চেষ্টা করেছি আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমরা দলের পক্ষ থেকে বলতে চাই, আমরা নুরে আলম ও আব্দুর রহিমের পরিবারের জন্য ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তারা যেন বাকি জীবনটা চালাতে পারে তারজন্য সব রকম ব্যবস্থা আমরা করব।
মির্জা ফখরুল বলেন, এরা বড়াই করছে- সিঙ্গাপুর বানিয়ে দিয়েছে, মালয়েশিয়া বানিয়ে দিয়েছে। ওই দিকে শতকরা ৪২ জন মানুষের জীবন দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে, দুই বেলা খেতে পায় না।
জাতীয়তাবাদী হেল্প সেলের সদস্য যুব দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসানের সভাপতিত্বে এবং হেল্প সেলের সদস্য মামুন খান, ফয়সাল আহমেদ ও নাসির উদ্দিন শাওনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের পারভেজ রেজা কাকন, হেল্প সেলের সুমন আহসান, ওবায়দুর রহমান, কাজী এমদাদুল ইসলাম, শরীফুল ইসলাম রাসেল, এমদাদুল হক লিমন প্রমুখ।
গত ১ আগস্টে ভোলায় পুলিশের গুলিতে নিহত স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল রহিমের স্ত্রী খাদিজা বেগম, ছাত্রদলের নুরে আলমের বড় ভাই আবুল কাশেম, ছাত্রদলের লিখন, সানাউল্লাহ, সুমন এবং নেত্রকোনা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতে পঙ্গু মঞ্জুরুল আলম তাদের ওপরে সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন।-সমকাল
এবিসিবি/এমআই