Type to search

বিনোদন

আসলেই কি সাইফ আলীর ওপর হামলা করেছেন কথিত বাংলাদেশি শেহজাদ!

এবার বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খানের ওপর হামলাকারীকে নিয়ে বড় ধাক্কা খেলো মুম্বই পুলিশ। সাইফ আলী খানকে হামলার অভিযোগে যে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে ক্রাইম সিন থেকে পাওয়া আঙ্গুলের ছাপের কোনো মিল খুঁজে পায়নি ভারতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

১৬ই জানুয়ারি হামলাকারী এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের দাবি আটক ওই যুবক বাংলাদেশি নাগরিক। তবে সিআইডি’র রিপোর্ট প্রকাশের পর এই মামলা নিয়ে আরও বেশি ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কেননা, অপরাধ তদন্ত বিভাগ ক্রাইম সিন থেকে যে ১৯টি আলামত সংগ্রহ করেছে, তার কোনোটির সঙ্গেই গ্রেপ্তার করা কথিত বাংলাদেশি  যুবক মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদের আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে কোনো মিল নেই। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ ভুল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করলো কিনা তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন ৫ই আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ভারতে এরই মধ্যে অবৈধ কথিত বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে।

এ খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম মিড-ডে। এতে বলা হয়, ঘটনার পর ৭২ ঘণ্টা অনুসন্ধান চালিয়ে শরিফুল ইসলাম শেহজাদ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে মুম্বই পুলিশ এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগের প্রায় ৪০টি টিম। ভবনের সিসিটিভির ফুটেজে দেখা ব্যক্তি এবং গ্রেপ্তার হওয়া সন্দেহভাজনের অসঙ্গতি নিয়ে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কিন্তু মুম্বই এ বিষয়ে এখনো কোনো কূলকিনারা করতে পারছে না। এর মধ্যে অপরাধ তদন্ত বিভাগের এই খবর সামনে আসায় বিষয়টি আরও রহস্যময় হচ্ছে। অথচ শেহজাদকে গ্রেপ্তার করে তার ছবি সংবাদ মাধ্যমে সরবরাহ করে প্রচার করা হয়, তিনি বাংলাদেশি। এই হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সূত্র বলছে, শরিফুলের দশ আঙ্গুলের ছাপই সিআইডি’র ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যুরোতে পাঠিয়েছে পুলিশ। যা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সিআইডি তাদের প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে যে, ক্রাইম সিন থেকে পাওয়া আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপের কোনো মিল নেই। প্রতিবেদনটি শুক্রবার পুনেতে সিআইডি সুপারিনটেনডেন্টের কাছে পাঠানো হয়েছে। মিড-ডে বলছে, সিআইডি’র এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে মুম্বই পুলিশের ওপর তাদের অনুসন্ধান পুনর্বিবেচনা করার চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া জনগণের মধ্যেও এ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তা মোকাবিলা করতেও চাপে পড়েছে পুলিশ। সূত্র বলছে, শরিফুলকে মুম্বই পুলিশের পূর্বাঞ্চলীয় একটি দল গ্রেপ্তার করেছে। এ দলের নেতৃত্বে ছিলেন ডিসিপি নবনাথ ধাভালে।  তবে ওই জোনের কাছে মামলা সম্পর্কে সামান্যই তথ্য ছিল। কেননা, বিষয়টির তদন্তে ছিল মুম্বই পুলিশের জোন- ৯। গ্রেপ্তারের পর অভিযুক্তকে জোন-৯ এর অধীনে বান্দ্রা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পরের দিন সকালে জোন-৯ এর ডিসিপি দীক্ষিত গেদাম গণমাধ্যমকে জানান যে, আটক ব্যক্তি একজন বাংলাদেশি নাগরিক এবং তিনিই এই হামলার সঙ্গে জড়িত। সূত্র আরও জানিয়েছে যে, সাইফ আলী খানের ভবন থেকে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে বের করে আনার সিসিটিভি ফুটেজটি অত্যন্ত ঝাপসা ছিল, যা প্রযুক্তি ব্যবহার করেও স্পষ্ট করতে পারেনি তদন্তকারীরা। ফলত সিসিটিভির ফুটেজে দেখা ব্যক্তি এবং গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির মুখাবয়বের অমিল নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে  চেষ্টা করেও সিআইডি বা মুম্বই পুলিশের কোনো মন্তব্য পায়নি মিড-ডে। অন্যদিকে বান্দ্রা পুলিশ জানিয়েছে, শরিফুলকে পুলিশের হেফাজতে রাখার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তারা ইঙ্গিত দিয়েছে যে, এই মামলার সঙ্গে অন্য কোনো সন্দেহভাজন জড়িত থাকতে পারে।

-মানবজমিন
Translate »