যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার বিষয়ে যা বললেন শাকিব

‘দেশ ছেড়ে আমেরিকায় স্থায়ী হচ্ছেন’ ঢাকাই ছবির শীর্ষ তারকা শাকিব খান। সম্প্রতি এমন খবর রটেছে ঢালিউড পাড়ায়। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে সমকালকে শাকিব খান বললেন, খবরটিকে পুরোপুরি ভিত্তিহীন।
শাকিব খান বলেন, ‘যারা আমার যুক্তরাষ্ট্রে থাকা নিয়ে নানান কথা বলছেন, তারা আসলে এই প্রক্রিয়া না জেনেই কথা বলছেন।’
১৬ তম চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে অংশ নিয়ে ১২ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে যান ‘কিং খান’ খ্যাত শাকিব খান। পরে ঢালিউড ফিল্মস এন্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে অংশ নেন ৫ ডিসেম্বর। দুই অনুষ্ঠানের মঞ্চে শাকিব ঘোষণা দেন, তিনি তার নতুন সিনেমার শুটিং করবেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে। বিশ্বব্যাপী সিনেমা মুক্তির কথাও বলেন এসময়। এজন্য সবকিছু মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রে শুটিংয়ের প্রি-প্রোডাকশন গুছিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
এরমধ্যে রটে শাকিব খান যুক্তরাষ্ট্রে চিরদিনের জন্য স্থায়ী হচ্ছেন! তবে তিনি জানালেন, এটি সত্য নয়। এও জানালেন, এমন ভিত্তিহীন খবরে তার দর্শকরা যেন বিব্রত না হয়। বললেন, আমার এখানে স্থায়ী বসবাসের কথা উঠছে কেন? আমি তো চাইলে আগামী মাসেই দেশে ফিরতে পারি। দেশান্তরী হওয়ার মতো কিছু তো ঘটে নাই। আমি এখানে কাজের মধ্যে আছি। যারা বড় আয়োজনে সিনেমা বানায় তারা বোঝে প্রি-প্রোডাকশনে কত মাস লাগে! আমেরিকার মতো দেশে আমি প্রথম সিনেমা করতে যাচ্ছি, সবকিছু গোছাতে গোছাতে তো আমার দিনরাত পার হয়ে যাচ্ছে।
শাকিব খান বলেন, আমেরিকার ‘গ্রিন কার্ড’ দেশটির সরকার সম্মান জানিয়ে বিভিন্ন দেশের সেলেব্রেটিদের দিয়ে থাকে। এই সম্মানটা সবাইকে দেয়া হয় না। যাদের দেয় তারা সম্মানিত হয়ে গ্রহণ করেন। আর কোভিডের আগে দেশে থাকতে অন্য প্রক্রিয়ায় আমার গ্রিন কার্ড ঠিক হয়ে ছিল। তার মানে তো এই না যে আমি আমার দেশ ছেড়ে দিচ্ছি। এখানে এসে শুধু গ্রহণের প্রক্রিয়া ছিল। এজন্য তো বছরের পর বছর থাকতে হয় না। বাংলাদেশের অনেক টপ মোস্ট সেলেব্রেটি আগে থেকে গ্রিন কার্ড পেয়েছেন।
তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশে বাস করে নিয়মিত কাজ করছেন। বলিউডের বহু সেলেব্রেটিদের ‘গ্রিন কার্ড’ করা। এছাড়া দুবাই, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতে তাদের বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবই আছে। কিন্তু তারা ইন্ডিয়াতে বসবাস করে নিয়মিত কাজ করছেন। তাহলে আমার এটা নিয়ে কথা উঠছে কেন? কিছু মানুষ সবসময় অপব্যাখ্যা দিয়ে থাকে, বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।
অনেকটা ক্ষোভ ঝেড়ে শাকিব খান বলেন, সিনেমা সংশ্লিষ্ট কিছু মানুষ আছে যাদের মিডিয়ার সামনে কথা বললে আরও জেনে বুঝে কথা বলা উচিত। তারা এমনভাবে আমাকে নিয়ে কথা বলেন যেন তাদের সঙ্গে আমার প্রতিদিন কথা হয়। অথচ গত ছয়মাসেও দেখা যায় তাদের সঙ্গে আমার কথা হয় না, দেখা হয় না। আমি আমেরিকায় আসবো আগেই থেকে ঠিক ছিল। এজন্য বারবার বলেছি ‘গলুই’র ডাবিং করিয়ে নিতে। কিন্তু তারা পারেনি। পরেও বলেছিলাম অনলাইনে পাঠিয়ে দিলে আমি ডাবিং করে দেব যেহেতু ডিসেম্বরে মুক্তি চায়। কিন্তু ডিরেক্টর তার কাজে আমেরিকা এসেছেন, আমাকে জানালে সঙ্গে সঙ্গে ডাবিং করিয়ে দিয়েছি।
সবশেষে শাকিব বলেন, আমি সবসময় চুপচাপ থেকে নিজের কাজটা প্রাধান্য দিয়েছি। নিজের মতো এগিয়ে গিয়েছি। বহু অপব্যাখ্যা, অবান্তর, গুজব আমাকে নিয়ে ছড়িয়েছে। এগুলো কখনই তোয়াক্কা করিনি। দিনশেষে মানুষ জেনেছে আমি ঠিক ছিলাম। আমার স্বপ্নটা অনেক বড়। সেই স্বপ্ন পূরণে এতদূর এসেছি। কোটি মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া আজকে আমাকে এখানে এতদূর পৌঁছে দিয়েছে। আরও অনেক কাজ করা বাকি। আগামীতেও এই ভালোবাসা সঙ্গে নিয়ে আমি আমার কাজ করে যাবো।
এবিসিবি/এমআই