স্বপ্না গুলশান: দৈনিক ইনকিলাবসহ আরো অনেক জাতীয় পত্রিকায় দেখলাম মেজর সিনহাকে গুলি করে হত্যার নির্দেশদাতা টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ সাহা। তিনি ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর ওসি হিসেবে টেকনাফে যোগদান করেন। গত দুই বছরে শুধু টেকনাফে ১৪৪টি কথিত বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। আর এসব বন্দুকযুদ্ধের নামে ওসি প্রদীপ কুমার ২০৪ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে।
মূলত ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীর ট্যাগ লাগিয়ে নিরীহ এবং অনেক ধনাঢ্য লোকজনকে থানায় ধরে নিয়ে মোটা অংকে অর্থের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। যারা টাকা দিতে পারে না তাদেরই কপালে জুটে ক্রসফায়ারের নামে নির্মম মৃত্যু।
অভিযোগ আছে অনেকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে খুশী হতে না পেরে বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে তাদেকে খুন করেছে ওসি প্রদীপ। এত অন্যায় করার পরে ও ওসি প্রদীপ সাহার মতো ভারতের গুপ্তচর হিসেবে যেসব হিন্দুরা কাজ করে তাদের কোন শাস্তি হয়না বাংলাদেশে। ভাবখানা এমন যে, শাস্তি দিয়ে কি উল্টা বিপদে পড়বে দেশটির সরকার ? কারন এসব ভারতের গুপ্তচররুপী দালালদের সব অপকর্মের পিছনে ইন্ধনদাতা তো ভারতের বিজেপী কট্টরপন্থী হিন্দু মৌলবাদী দলের নেতা ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই ।
মেজর সিনহাকে গুলি করে হত্যার নির্দেশদাতা টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ সাহা
যাহোক, আমি বরাবরই বলে আসছি ভারতের যে মারাত্মক আগ্রাসন বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে এ থেকে দেশপ্রেমিক বাংলাদেশীদের রক্ষা নেই। এই যে দেখুন টেকনাফ থানার ওসি যিনি তিনি হলেন হিন্দু এবং বাংলাদেশের শতকরা নব্বই ভাগ হিন্দুরা চলে ভারতের কথায় এবং ভারতকেই তাদের নিজের দেশ ভাবে। আর শেখ হাসিনার সরকার ও বাংলাদেশের গুরুত্বপুর্ন সব জায়গাতেই এধরনের ভারতপ্রেমী হিন্দুদের বসিয়ে রেখেছেন । সচিবালয় দেখুন , বিভিন্ন মন্ত্রনালয় দেখুন, এমনকি ডিজিএফআই তে ও প্রভাব খাটানো শুরু করেছে এসব ভারত প্রেমীরা।
আর বাংলাদেশের গনমাধ্যম ! সে তো অনেক আগেই দখলে রেখেছে ভারত । লক্ষ্য করে দেখুন বাংলাদেশের প্রধান টেলিভিশন চ্যানেল গুলো ও জাতীঁয পত্রিকা গুলোতে কারা উঁচু পদে বসে আছে? ২১ শে টেলিভিশনে সিইও পীযূষ বন্দোপাধ্যায় । ডিবিসিতে- প্রনব সাহা, নিউজ ২৪ এ রাহুল রাহা, Gtv তে অন্জন রায়, এটিএন নিউজে মুন্নী সাহা, ভোরের কাগজে শ্যামল দত্ত । এরকম অগনিত প্রতিষ্ঠানের নাম বলে শেষ করতে পারবনা ।
আরো লক্ষ্য করুন ভারতের অন্যায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই আজ দেশপ্রমেী বাংলাদেশীদের মরতে হচ্ছে । বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার কে কেন মরতে হলো মনে আছে? মেজর সিনহা কে কেন পুলিশ ক্রসফায়ারে দিল বুঝতে পারছেন কাদের ইশারায় ? মেজর সিনহা যখন শেখ হাসিনার এসএস এফ হিসেবে কাজ করতেন তখন ভারতের দ্বারা প্রভাবিত ডিজিএফআই এর অনেক কর্মকান্ড অপছন্দ করতেন । পরিনতি কি হলো ? ভারতের দালাল টেকনাফের ওসি প্রদীপ সাহার নির্দেশে ক্রসফায়ারে হত্যা ! আমি যখন ভারতের এসব অন্যায় আগ্রাসনের সমালোচনা করি তখন অনেকেই আমাকে ইনবক্স করে সাবধান করে বলেন “ ম্যাডাম সাবধানে থাকুন । ভারতে গোয়েন্দা র সব দেশেই রয়েছে”।
যাহোক সত্য কথা হলো আমি আমার নিজের জন্মভুমি বাংলাদেশে যেতে সরকারের দিক থেকে কোন ঝুঁকি বোধ করিনা বরং আমি নিরাপত্তাহীন বোধ করি কখন ভারতীয় গোয়েন্দা বাহীনি র আমাকে গুম করে দেবে বাংলাদেশে গেলে । ভারতের র এমন একটি বাহিনী এরা বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে অলি গলিতে ভরে গেছে যাদের হাত থেকে দেশপ্রেমী বাংলাদেশীদের আপাতত বাঁচার কোন উপায় দেখছিনা আমি । বাংলাদেশের প্রতিটি জনগনের নিরাপত্তা শেখ হাসিনাকেই দিতে হবে। কারন তিনি বাংলাদেশের দল মত নির্বিশেষে সবার প্রধানমন্ত্রী । এখন শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভারতের আগ্রাসনের কাছে মাথানত করেই কি দেশ পরিচালনা করবেন নাকি বিকল্প কোন পথ খুঁজে বের করবেন।
আমাদের মনে রাখতে হবে যে, গর্ব করার মতো মাহাত্মা গান্ধীর সেই অহিংসবাদ নীতিতে বিশ্বাসী ভারত এখন আর নেই । নরেন্দ্র মোদীর সরকার মাহাত্মা গান্ধীর সেই অহিংসবাদ নীতিকে পায়ে ঠেলে দিয়ে ভারতকে এখন বিশ্বের কাছে মৌলবাদী কট্টরপন্থী হিন্দু দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
স্বপ্না গুলশান; সম্পাদক, এবিসিবি নিউজ