Type to search

অস্ট্রেলিয়া কমিউনিটি

বাংলাদেশে গণহত্যার প্রতিবাদে সিডনিতে বিক্ষোভ ও গায়েবানা জানাযা

অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা সিডনির লাকেম্বা সাবার্বের রেলওয়ে প্যারেডে বাংলাদেশে চলমান গণহত্যা ও সরকারী দমন-নিপীড়নের প্রতিবাদে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

গত ২১ জুলাই তারা বিগত এক সপ্তাহ যাবত বাংলাদেশে চলমান গণহত্যায় নিহত শতাধিক শহীদ ছাত্র, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের রুহের মাগফেরাত কামনা করে গায়েবানা জানাযার নামাজ আদায় করেন।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ এবং পুলিশের সমন্বিত নির্যাতন ও হত্যার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো অস্ট্রেলিয়াতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃস্টি হয়েছে। দলমত নির্বিশেষে সাধারণ বাংলাদেশীরা অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় স্বতঃস্ফুর্তভাবে এর মধ্যেই বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে। গত শুক্রবার, শনিবার ও আজ রবিবার এ তিনদিনে মেলবোর্ন এবং সিডনিতেই অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ডজনেরও বেশি প্রতিবাদ সমাবেশ।

প্রবাসী বাংলাদেশীদের এ প্রতিক্রিয়ার ফলে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং নির্যাতিত ছাত্রদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বার্তা প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর পেনি উং। এছাড়া সরাসরি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল মিনিস্টার ফর এমপ্লয়মেন্ট এন্ড ওয়ার্কপ্লেস রিলেশনস ও সরকারী দল লেবার পার্টির অন্যতম প্রভাবশালী নেতা টনি বার্ক, সিনেটর ডেভিড শুব্রিজ সহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বিভিন্ন মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান রাজনীতিবিদদের বাংলাদেশ বিষয়ক বক্তব্য অনেকের নজর কেড়েছে।

এ ধারাবাহিকতায় রবিবার সন্ধ্যায় লাকেম্বা এলাকায় সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশী-অস্ট্রেলিয়ান কমিউনিটি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয় বিক্ষোভ সমাবেশ এবং গায়েবানা জানাযা। চলতি ঘটনায় বাংলাদেশী কমিউনিটির উদ্যোগে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম গায়েবানা জানাযাও ছিলো এই সমাবেশটি। বাংলাদেশে যারা পুলিশ ও সরকারী দলের দুর্বৃত্তদের হাতে অমানবিকভাবে ও অন্যায়ভাবে নিহত হয়েছেন, তাদের জন্য আয়োজিত এ গায়েবানা জানাযায় ইমামতি করেন সেন্ট মেরিস মসজিদের ইমাম শায়খ আবু হোরাইরা।

এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও গায়েবানা জানাযার যৌথ আয়োজক সামাজিক সংগঠনগুলো কমিউনিটি ইয়থ এন্ড সিটিজেন ডেভেলপমেন্ট, গ্লোবাল ভয়েস ফর হিউম্যানিটি, আইরাইটস অস্ট্রেলিয়া, কেয়ার বিডি, অস্ট্রেলিয়ানস ফর বাংলাদেশ এবং সিটিজেন মুভমেন্ট অফ অস্ট্রেলিয়া। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শিবলী আবদুল্লাহর পরিচালনায় ও বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও সাংবাদিক আবদুল্লাহ ইউসুফ শামীমের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সমাবেশে ক্যান্টারবুরি-ব্যাংকসটাউন সিটি কাউন্সিলের মেয়র বিলাল এল-হায়েক, ক্যাম্পবেলটাউন কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র মাসুদ খলীল সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে চলমান গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

বিকেল থেকেই শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষ সমাবেশস্থলে ভীড় করতে থাকে। সমাবেশে উপস্থিতির মাঝে বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশের প্রচুর সংখ্যক মানুষকে উপস্থিত থেকে সহমর্মিতা প্রকাশ করতে দেখা যায়। বিপুল সংখ্যক মানুষ এ সমাবেশে সপরিবারে অংশগ্রহণ করেন। পাশাপশি বাংলাদেশী ছাত্রদের উপস্থিতিও ছিলো লক্ষ্যণীয়। সবার মাঝে বাংলাদেশ নিয়ে তীব্র আশংকা এবং বিক্ষোভের প্রকাশ দেখা যায়। দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া এবং ফোন যোগাযোগ সীমিত করে দেয়ার ফলে স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে প্রবাসীদের উৎকণ্ঠা তাদের কথোপকথনে অনুভূত হয়। তীব্র স্লোগানে স্লোগানে তারা এ সময় তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ন্যায়বিচার ও প্রতিবিধানের দাবী উত্থাপন করেন।

Translate »