রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ৪১ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুসারে, রাষ্টায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ৮ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ, জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১৫ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৯০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৭ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ৫৫৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ।
খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ আদায়ে বিকল্প-বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহার করছে। সফল না হলে এক্ষেত্রে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী আরো জানান, গত ৫ বছরে (২০১৫-২০১৯) সোনালী ব্যাংক ৫ হাজার ৩০৫ কোটি ২৯ লাখ, জনতা ব্যাংক ২ হাজার ৮৬১ কোটি ৬৩ লাখ, অগ্রণী ব্যাংক ২ হাজার ৯৫৫ কোটি ৩৪ লাখ, রূপালী ব্যাংক ১ হাজার ৮৫ কোটি ৩০ লাখ, বেসিক ব্যাংক ৮৮০ কোটি ৮৬ লাখ ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ১ হাজার ৭১ কোটি ৮ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছে।
ঋণ মওকুফ : নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ১ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত ঋণ মওকুফ করেছে মোট ১৪ হাজার ৫৬০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমদানী পর্যায়ে ১৬ হাজার ১টি শুল্ক মামলার বিপরীতে অনাদায়ী রাজস্বের পরিমাণ ৭ হাজার ৫৮৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
হারুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৫৫৫ দশমিক ৭৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার প্রদানে ভারত ও বাংলাদেশ ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত অর্থ ছাড় হয়েছে ৯০৪ দশমিক ৭৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে এই অর্থনৈতিক গতির চাকা মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকারের মেয়াদেই গতি লাভ করেছে। বর্তমান সরকারের সময়ে ৩টি এলওসি চুক্তির আওতায় ৭ দশমিক ৫৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে এসব ঋণের আওতায় অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে। যা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যক্তিখাতের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমদানি-রফতানিতে অবমূল্যায়ণ ও অতিমূল্যায়নের মাধ্যমে মুদ্রাপাচারের কথা পত্রপত্রিকায় প্রায়ই দেখতাম আমরা। আজকাল আর এ সংক্রান্ত অভিযোগ শুনি না। তবে, সুনির্দিষ্ট মানিলন্ডরিংয়ের অভিযোগ পাওয়ার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তা খতিয়ে দেখছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।