ফারমার্স ব্যাংকে ঋণের নামে জালিয়াতি: রিজেন্ট সাহেদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ঋণের নামে জালিয়াতি করে ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) পৌনে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিমসহ ৪জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২৭ জুলাই) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহাজাহান বাদী হয়ে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরষ্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে ঋণের নামে ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন- যা এ বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত সুদ-আসলে দাঁড়ায় ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা। দুদক আইন অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে এই পৌনে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় অন্য ৩ আসামি হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) সাবেক উদ্যোক্তা পরিচালক ও ক্রেডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ওরফে বাবুল চিশতী। বর্তমানে তিনি দুদকের একাধিক মামলায় জেলে আছেন। বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতি ও আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের এমডি মো. ইব্রাহিম খলিল। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা, ৪০৯/১০৯ ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, মোঃ সাহেদ করিম রিজেন্ট হাসপাতালের এমআরআই মেশিন কেনার জন্য ২ কোটি টাকার ঋণের জন্য ব্যাংকটির গুলশান করপোরেট শাখায় ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারিতে আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ায়ি গুলশান শাখা থেকে ওই মেশিন কেনার জন্য ‘আর্বটস মেডিকেল ইকুইপমেন্টের নামে’ সরবরাহকারী হিসেবে ২ কোটি টাকার পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়। উক্ত পে-অর্ডারটি একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেই হিসাব থেকেই ২ কোটি টাকা ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারিতে উত্তোলন করা হয়।
এদিকে ওই ২ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করার আগেই সাহেদ করিম ঘুষ হিসেবে ব্যাংকের বকশীগঞ্জ শাখায় বাবুল চিশতীর মালিকানাধীন বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের নামে খুলা ০১১১১০০০০২৩৬৩ নং হিসাবে ৩৫ লাখ টাকা জমা করেন। যার জমা রশিদ নং-৩০। পরে জমাকৃত ওই টাকা ২০১৫ সালের ১৮ ও ২০ জানুয়ারি বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের এমডি ও বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতি উত্তোলন করেন।
দুদক সূত্র জানায়, ঘুষের ৩৫ লাখ টাকা বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল চিশতী বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের হিসাব থেকে উত্তোলন করলেও ঘুষ গ্রহণের পেছনে সব কলকাঠি নেড়েছেন বাবুল চিশতী। বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্সের তিনি চেয়ারম্যান।