Type to search

বাংলাদেশ সারাদেশ

বজ্রপাতে নয় জেলায় শিক্ষার্থীসহ ১৬ জনের মৃত্যু

দেশের নয় জেলায় বজ্রপাতে শিক্ষার্থীসহ ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।

রোববার রাত ও সোমবার বজ্রপাতে কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগর উপজেলায় চারজন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, মিঠামইন ও কটিয়াদীতে চারজন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও মদনে দুইজন এবং হবিগঞ্জের বানিয়াচং, চাঁদপুরের কচুয়া, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, যশোরের শার্শা ও মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় একজন করে মারা গেছেন। এছাড়া শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

কুমিল্লা ও মুরাদনগর: বজ্রপাতে বরুড়ার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগচ্ছ গ্রামে দুই শিক্ষার্থী এবং মুরাদনগরের কোরবানপুর গ্রামে দুজন কৃষক মারা গেছেন। সোমবারের বজ্রপাতে আহত হয়েছেন আরও তিনজন। নিহতরা হলেন- পয়ালগচ্ছ গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন ও বিলাল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ জিহাদ, মুরাদনগরের কোরবানপুর গ্রামের জসীম উদ্দীনের ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া ও মৃত বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ।

মাঠে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় বজ্রপাতে ওই দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। তারা উভয়ই ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। এছাড়া ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মারা যান ওই দুই কৃষক। কোরবানপুর গ্রামের ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়ে শ্রবণশক্তি হারিয়েছেন বলে জানা গেছে।

কিশোরগঞ্জ ও কটিয়াদী: বজ্রপাতে নিহতরা হলেন অষ্টগ্রাম উপজেলার হালালপুর গ্রামের কৃষক ইন্দ্রজিৎ দাস, খয়েরপুর গ্রামের স্বাধীন মিয়া, মিঠামইন উপজেলার রানীগঞ্জ গ্রামের মৃত আশ্রব আলীর স্ত্রী ফুলেছা বেগম এবং কটিয়াদীর ধনকিপাড়া গ্রামের জেলে শাহজাহান।

সোমবার বজ্রপাতে ধান কাটার সময় হাওড়ে ইন্দ্রজিৎ, নদীতে মাছ ধরার সময় স্বাধীন, ধানের খড় ঢাকতে গিয়ে ফুলেছা এবং মাছ ধরতে গিয়ে শাহজাহানের মৃত্যু হয়। এছাড়া উজানের পাহাড়ি ঢলে অকাল বন্যা ও ব্যাপক বজ্রপাতের আশঙ্কায় কিশোরগঞ্জের হাওড়াঞ্চলের মসজিদগুলোর মাইকে কৃষকদের আগেভাগে ধান কাটতে বলা হচ্ছে। কৃষি বিভাগের নির্দেশে সোমবার ইমামরা মসজিদের মাইকে বোরো ফসল ৭০ থেকে ৮০ ভাগ পাকতেই কেটে ঘরে তোলার আহ্বান জানান।

নেত্রকোনা ও মদন: কলমাকান্দায় নিহত দিদারুল ইসলাম স্থানীয় একটি কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। রোববার রাতে উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের ধনুন্দ গ্রামে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে বজ্রপাতে মদন উপজেলার তিয়শ্রী গ্রামের ছালাম মিয়ার ছেলে শিক্ষার্থী আরাফাতের মৃত্যু হয়। সোমবার তিয়শ্রী গ্রামে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

বড়লেখা (মৌলভীবাজার): ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মাখন রবি দাস নামে এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার মৌলভীবাজারের বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মাখন ওই ইউনিয়নের অহিদাবাদ চা বাগানের মৃত শংকুরা রবি দাসের ছেলে।

হবিগঞ্জ: ধান কাটার সময় নিহত কৃষক দূর্বাসা দাস বানিয়াচংয়ের আড়িয়ামুগুর গ্রামের কালাবাসী দাসের ছেলে। সোমবার আড়িয়ামুগুর গ্রামে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার ভাই ভূষণ দাস ও বোন সুধন্য দাস। এছাড়াও বজ্রপাতে আহত হয়েছে একই উপজেলার বাগহাতা গ্রামের নুরুল ইসলামের শিশু ছেলে বায়েজিদ মিয়া।

কচুয়া (চাঁদপুর): ধান আনতে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে চাঁদপুরের কচুয়ার নাহারা গ্রামের বিশখা রানী সরকারের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের হরিপদ সরকারের স্ত্রী। সোমবার নাহারা গ্রামে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর): গরুর ঘাস আনতে বিলে গিয়ে বজ্রপাতে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার বেপারীকান্দি গ্রামের সেফালী বেগমের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের ছোরহাব বেপারীর স্ত্রী। সোমবার বেপারীকান্দি গ্রামে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

যশোর ও বেনাপোল: ধানের গাদা দেওয়ার সময় বজ্রপাতে যশোরের শার্শা উপজেলার বেড়ি নারায়ণপুর গ্রামের কৃষক আমির হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ওই গ্রামে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এছাড়া একই দিন যশোরে শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চৌগাছা, সদর ও বাঘারপাড়া উপজেলায় সবেচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, মাঠে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ বছর ১ লাখ ৫৭ হজার ৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। এখন পর্যন্ত ৫১ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। ধানের খেত থেকে পানি বের করার পরামর্শ দিচ্ছি।

টেকেরহাট (মাদারীপুর): ধান কেটে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে রাজৈর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের কৃষক কাজল বাড়ৈ মারা গেছেন। সোমবার কমলাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

-দৈনিক যুগান্তর

Translate »