Type to search

সারাদেশ

পঞ্চগড়ে জলসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ: নিহত ২, আহত ৫০

জেলা প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামায়াতের (কাদিয়ানি) সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার (৩ মার্চ) জুমার নামাজের পর জলসা বন্ধের দাবিতে তৌহিদি জনতা ও মুসল্লিরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় পুলিশ  বিক্ষুব্ধদের বাধা প্রদান করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ ধাওয়া-পালটাধাওয়া শুরু হয়। পুলিশ, বিজিবি সম্মিলিতভাবে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে।

এ সময় টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও গুলি চালানো হয়। পুলিশ, সাংবাদিক  মুসল্লিসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। গুরুতর আহতদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এরা হলেন—আরিফুর রহমান (৩০)। তিনি জেলা শহরের মসজিদপাড়া এলাকার ফরমান আলীর ছেলে। পঞ্চগড় পৌরসভার কাউন্সিলর মাজেদুর রহমান চৌধূরী ইরান ধাওয়া-পালটাধাওয়ায় আরিফের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের সালানা জলসার আহ্বায়ক আহমেদ তফসের চৌধুরী তাদের ১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিখোঁজদের মধ্যে খোঁজা হচ্ছে। তার মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে যাওয়ায় তাকে চেনা যাচ্ছে না।

শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড় শের-ই বাংলা পার্কসংলগ্ন মহাসড়কে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষুব্ধ মুসল্লিদের দিকে লক্ষ্য করে অসংখ্য রাবার বুলেট, টিয়ার শেল এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। অপরদিক থেকে মুসল্লিরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। এতে পঞ্চগড় জেলা শহরে যেন এক রণক্ষেত্র সৃষ্টি হয়।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা, পুলিশ ও র‌্যাবের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে শহরের করতোয়া সেতুর পাড়ে ট্রাফিক পুলিশের অফিসে হানা দিয়ে ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে। সেখানে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলসহ পুরো ট্রাফিক পুলিশ অফিস পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আশার চেষ্টা করলেও বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে আসতে পারেনি। সহিংসতার এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা করতোয়া নদী পার হয়ে কাদিয়ানী পল্লিতে হানা দিয়ে প্রায় ৩০টি বাড়িতে  আগুন দেয়। শহরের সিনেমা হল রোডে তাদের দুটি দোকানে ভাঙচুর  লুটপাট  করে আগুন ধরিয়ে  দেয়। সাংবাদিকরা সেই ছবি তলতে গেলে দুই জন সাংবাদিক তাাদের হাতে লাঞ্ছিত হন ও মারধর করেন।

বিকালের দিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা রাস্তা থেকে সরে গেলে শহরের পরিস্থিতি  শান্ত হয়। তবে জলসা স্থলে উত্তেজনা রয়েই যায়। সেখানে নিরাপত্তা  ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব এবং বিজিবি তৎপর রয়েছে। কোনো প্রাণহানি যেন না ঘটে, সেদিকেও সোচ্চার রয়েছে প্রশাসনের সর্বমহল। রাতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সালানা জলসায় গিয়ে জলসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়টি মাইকিং করে প্রচার করা হচ্ছে।

এবিসিবি/এমআই

Translate »