Type to search

জাতীয় সারাদেশ

বিদ্যুৎ বিপর্যয়: ২৮ জেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত

এক মাসের মধ্যে দুই বার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড আবারও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত ৬ সেপ্টেম্বরের পর গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় বারের মতো দেশের প্রায় অর্ধেক অংশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে। গ্রিডে ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের ২৮টি জেলায় গতকাল অন্তত চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল না। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু হলেও সব এলাকায় পূর্ণ লোডে বিদ্যুৎ সঞ্চালন-বিতরণ স্বাভাবিক হতে আজ বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে নিয়োজিত প্রধান সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা যায়, জাতীয় গ্রিড মূলত দুইটি অঞ্চলে বিভক্ত। গতকাল দুপুর ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় গ্রিড ট্রিপ (অকার্যকর) করে। এর ফলে গ্রিডের পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন ২৮টি জেলা—ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নেত্রকোনা, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। দেশে বিতরণকৃত মোট বিদ্যুতের প্রায় ৬৫ ভাগ এই অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়। গ্রিডের কোন অংশে (পয়েন্টে) এবং কী ধরনের ত্রুটির কারণে এই বিপর্যয় তা গতকাল রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। বিপর্যয় শুরুর ৪ ঘণ্টা পর ঢাকা ও সিলেটের কয়েকটি স্থানে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ শুরু হয়। গ্রিড ট্রিপ করার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া কেন্দ্রগুলোর বেশির ভাগই সন্ধ্যা নাগাদ সচল হতে শুরু করে। তবে পূর্ণ লোডে উৎপাদন-সঞ্চালন-বিতরণ শুরু হতে আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে পিজিসিবি এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক প্রকৌশলী জানিয়েছেন।

পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া গতকাল সন্ধ্যায় জানান, গ্রিডের কোন অংশে কেন ত্রুটি দেখা দিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করা বলা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করতে পুরো খাত একসঙ্গে কাজ করছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়। ত্রুটির কারণ-ধরন জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের রিপোর্টের পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পিডিবি এবং পিজিসিবির কয়েক জন প্রকৌশলী জানান, নরসিংদীর ঘোড়াশাল পয়েন্টে অথবা সিলেটের একটি পয়েন্টে কারিগরি ত্রুটি প্রথম দেখা দেয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। সে কারণেই অধিকাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ ও সাবস্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে যায়। তবে বিস্তারিত তদন্ত ছাড়া এখনই নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব হবে না।

ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, দুপুর ২টার দিকে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। শুরুতে বিপর্যয়ের বিষয়টি বুঝতে আমাদেরও কিছুটা সময় লেগেছে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস নিজস্ব জেনারেটরে বা অন্য ব্যবস্থায় কার্যক্রম চালু রাখলেও এক সময়ে সেই ব্যাকআপও অনেকের শেষ হয়ে যায়। পেট্রোল পাম্পগুলোতে ভিড় বাড়ে ডিজেলের জন্য।

এবিসিবি/এমআই

Translate »