ময়মনসিংহে বাবাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন ও মাকে লাঠিপেটা করল ছেলে
জেলা প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে অভাবের সংসারে বড় ছেলে হজরত আলী সম্পত্তি ভাগবাঁটোয়ারার দাবিতে বাবা-মাকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করে। প্রতিনিয়তই বাড়তে থাকে নির্যাতনের মাত্রা; পালটে যেতে থাকে নির্যাতনের ধরন। সর্বশেষ গত ১ মার্চ বৃদ্ধা মাকে লাঠি দিয়ে ব্যাপক পিটুনি দেয় হজরত আলী। কয়েক দিন আগে বাবাকেও গাছের সাথে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করে।
গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে বিচার পেতে বাবা-মা হাজির হন। বাবা-মার প্রতি সন্তানের এমন অমানবিক নির্যাতনের বিষয়টি আমলে নিয়ে ইউএনও মঙ্গলবার (২ মার্চ) স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ হাজির হন বাড়িতে। তাদের আগমনের খবর পেয়ে নির্যাতনকারী সন্তান বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনা ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের ফানুর এলাকায়।
জানা যায়, ঐ গ্রামের বৃদ্ধ আ. আজিজ শেখ (৯০) ও হালেমা খাতুনের (৮০) ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে মেয়েরা বিবাহিত ও ৪ ছেলে অন্যত্র অবস্থান করেন। বড় ছেলে হজরতসহ অন্যরাও বাবা-মার ভরণ-পোষণ কিংবা খোঁজখবরও নেন না। তবে সম্পত্তি ভাগবাঁটোয়ারার জন্য বাবা-মার উপর রয়েছে সবার চাপ। বাবা-মার প্রতি উদাসীন সন্তানদের সম্পত্তি ভাগ করে দিলে এ বয়সে কষ্ট আরও বাড়বে এমন আশঙ্কায় তারা সন্তানদের কথায় রাজি হননি। মূলত এ বিষয়টি নিয়েই দ্বন্দ্বের শুরু।
ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল হক ঝন্টু জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে এ অবিচারের সুষ্ঠু সমাধান করতে চেয়েছিলাম আমরা। অভিযুক্ত হজরত পালিয়ে যাওয়ায় ইউএনও স্যারের নির্দেশে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও মো. জাকির হোসেন জানান, অমানবিক এ ঘটনার মতো সামাজিক ব্যাধি যাতে না ছড়ায় সমাজে তাই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি বাবা-মার ভরণ-পোষণ আইন ২০১৩ অনুসরণ করে সমভাবে সন্তানরা যাতে বাবা-মার ভরণ-পোষণ করে তা দেখভাল করে প্রতিবেদন পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যানকে।