ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জুয়া খেলা নিয়ে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৩৫, অস্ত্রসহ আটক ৮

জেলা প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বিরাসার এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে বড়গোষ্ঠী ও মহাজোটের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ৫ পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছে। এ সময় কমপক্ষে ৪০টি ঘর ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে পুলিশ লাইন্স থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যাপক লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩টি ককটেল, ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন এবং পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ মো. জসিম উদ্দিন (৩৫) সহ আটজনকে আটক করে। অস্ত্রধারী মো. জসিম উদ্দিন বিরাসার বড় গোষ্ঠীর মো. নূরুল ইসলামের ছেলে। সংঘর্ষ চলাকালে গুলি করার সময় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, রোববার রাতে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে বিরাসার গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বড়গোষ্ঠীর কাসেম মাস্টার ও চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক বাবুল মিয়ার গোষ্ঠীর আল-আমিনের সাথে একই এলাকার মহাজোট হিসেবে পরিচিত পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিজান আনসারীর গোষ্ঠী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন ও সৈয়দ আলী মিয়ার গোষ্ঠীর নূরুল্লাহ ও সুজনের প্রথমে কথা কাটাকাটি ও পরে হাতাহাতি হয়।
ওই ঘটনার জেরে সোমবার বিকালে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র রিভলবার এবং ককটেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সংঘর্ষের সময় ইট-পাটকেলের আঘাতে সময় টিভির ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্যুরো চিফ উজ্জ্বল চক্রবর্তী, সদর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মো. সোহেলসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য এবং উভয়পক্ষের আরো ৩০ জন আহত হয়। আহতরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা নেয়।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু সাঈদ জানান, জুয়া খেলার ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত। সোমবার সংঘর্ষের বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হই।
তিনি বলেন, বিরাসার গ্রামের কয়েকটি গোষ্ঠী এই সংঘর্ষে জড়িত হয়েছে। তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও আনসারী গোষ্ঠীর নেতা মো. মিজানুর রহমান আনসারী বলেন, মঙ্গলবার সকালে বড়গোষ্ঠীর আহত একজন মারা গেছেন এমন গুজব তুলে বড়গোষ্ঠীর দাঙ্গাবাজরা মহাজোটের লোকদের বাড়ি-ঘরে হামলা করলে সারা এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, সংঘর্ষ এখন নিয়ন্ত্রণে। এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এবিসিবি/এমআই