বরিশালে ১ হাজার টাকার জন্য দুগ্ধজাত সন্তান রেখে জেল খাটতে হলো মাকে

জেলা প্রতিনিধিঃ মাত্র ১ হাজার ১০ টাকা পরিশোধ না করায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাসুদেবপাড়া এলাকার নুরুন্নাহার নামের এক নারীকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে পপুলার এক মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামের একটি এনজিওর বিরুদ্ধে। মামলায় আটক হয়ে ৮ মাসের দুগ্ধজাত সন্তান রেখে ওই নারীকে ২দিন জেল খাটতে হয়েছে।
বাসুদেবপাড়া গ্রামের সেলিম হাওলাদারের স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম জানান, ২০১৯ সালে বাটাজোর বন্দরের পপুলার মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি থেকে ত্রিশ হাজার টাকার ঋণ নেই। সোসাইটির নিয়মানুযায়ী প্রতি সপ্তাহে ৯শ টাকা হারে কিস্তি এবং সঞ্চয়ের টাকা পরিশোধ করি। সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কিস্তি এবং সঞ্চয়ের টাকা জমা দেই। এতে মাল্টিপারপাসের অনুকূলে ২০ হাজার ১শ টাকা পরিশোধ করা হয় এবং সঞ্চয় বাবদ ৮ হাজার ৯০ টাকা জমা দেই। এরইমধ্যে দেশে কোভিড-১৯ শুরু হলে ওই মাল্টিপারপাসের অফিস বন্ধ থাকায় কিস্তি পরিশোধ করতে পারিনি। ফলে এনজিওর তার (নুরুন্নাহার) কাছে ১ হাজার দশ টাকা পাওনা থাকে।
তিনি (নুরুন্নাহার) আরও জানান, গত ২দিন পূর্বে গৌরনদী মডেল থানার এসআই রফিক বাসুদেবপাড়া কালীবাড়ি বাজারে গিয়ে তাকে (নুরুন্নাহার) খোঁজাখুজি করেন। গত বুধবার (১৯ মে) বেলা এগারটার দিকে তিনি (নুরুন্নাহার) সরল মনে ওই এসআই’র সঙ্গে দেখা করতে থানায় যান। এসময় তিনি জানতে পারেন পপুলার মাল্টিপারপাস সোসাইটি তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশ তাকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
ভুক্তভোগি নুরুন্নাহার বেগম অভিযোগ করে জানান, ওই মাল্টিপারপাসের ঋণ পরিশোধের জন্য তাকে কোন প্রকার সুযোগ না দিয়েই মামলা করে সবার অজান্তে। ফলে ৮ মাসের দুগ্ধজাত সন্তান রেখে তাকে ২দিন জেল খাটতে হয়েছে। তিনি (নুরুন্নাহার) ওই মাল্টিপারপাস কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলপূর্বক কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি জানান।
গৌরনদী মডেল থানার এসআই রফিক বলেন, ২০২০ সালে পিরোজপুর আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। যার নম্বর- সিআর- ৪৫৩/২০। তিনি আরও বলেন, মামলার আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকায় তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ভুক্তভোগি নারীর পিতা বিষয়টি অবহিত করেছেন তাকে। করোনাভাইরাসকালীন সময়ে ওই মাল্টিপারপাস সোসাইটির সহনশীল হওয়া উচিত ছিলো। এ বিষয়ে জানতে পপুলার মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির বাটাজোর অফিসে গিয়ে অফিসটি বন্ধ পাওয়ায় তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।