১০ ডিসেম্বর ঢাকার মহাসমাবেশে বিএনপির রাজপথ দখলের আহবান

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে প্রবাসীদের পরিবার থেকে অন্তত একজনকে অংশ নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (৯ নভেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহবান জানিয়ে রিজভী বলেন, সব বিভাগে মহাসমাবেশ শেষে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপি মহাসমাবেশ করবে। বিভিন্ন দেশে ১ কোটি প্রবাসী রয়েছে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে দেশে বসবাসকারী তাদের পরিবার থেকে অন্তত একজনকে অংশ গ্রহণ করে সরকারকে হটিয়ে ভোটাধিকার আদায় করতে রাজপথ দখলের জন্য জন্য আহবান জনিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
রিজভী আরও বলেন, এই আহবানে সাড়া দেওয়ার জন্য আমি প্রতিটি দেশপ্রেমিক জনতার প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। কারণ এক্ষুণি এই সরকারকে হঠাতে না পারলে দুর্ভিক্ষ-মনন্তরে প্রাণ হারাতে হবে বেঘোরে। গুম, খুন, ভোট ডাকাতি, লুটপাট, কেন্দ্রীয় ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, চাপাবাজি, মিথ্যাবাজি, সীমাহীন মূল্যস্ফীতি, ধোঁকাবাজির রাজত্ব চলছে সারাদেশে। এখনই দেশের রাজকোষ খালি হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। তেল গ্যাস কিনতে পারছে না, বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। মিল-কল কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। অর্থনীতি, ব্যাংক, রিজার্ভ সব খেয়ে ফেলেছে। কত টাকা ব্যাংক রিজার্ভ আছে তা নিয়ে সরকার নিয়মিত মিথ্যা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে।অনেক ব্যাংক দেউলিয়ার পথে, তারা গ্রাহককে বড় অংকের টাকা দিতে পারছে না। সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে না পেরে রিজার্ভের স্বর্ণ নিলামে বিক্রি করছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া জনগণ বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে ছুটে আসছে সকল হামলা-মামলা বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে। বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নামে মিথ্যাচার প্রপাগান্ডাই করা হয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ অন্য নেতারা প্রতিনিয়ত মনগড়া মিথ্যাচার করছেন। রিজভী বলেন, দুর্নীতির উল্লম্ফন এবং উন্নয়নের ফানুস উড়িয়ে কোনো কাজ হচ্ছে না দেখে প্রায় প্রতিদিন অসত্য, বিভ্রান্তমূলক, মনগড়া ও মিথ্যাচার করছেন। কিন্তু মিথ্যার বাড়াবাড়ির কোনো বিজয় হতে পারে না। এবারই সরকারকে আকড়ে থাকা মসনদ থেকে সরে যেতে হবে। ওরা আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে। তাই কথাবার্তায় শুধুই দম্ভের বিকৃত প্রকাশ।
রিজভী বলেন, বর্তমান সরকার কোনো ধরণের নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া ক্ষমতায় থাকতেই দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন। এখানে নানা ধরণের অশুভ উদ্দেশ্য আছে।
সরকার ভয় পেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে দাবি করে তিনি বলেন, এই যে আমাদের কর্মীদের ধারাবাহিক গ্রেফতার করা হচ্ছে এগুলো সব ব্যর্থ প্রচেষ্টা। গ্রেফতার করে ভয় দেখানো যায় না। বরং নেতাকর্মীরা আরও বেশি উজ্জীবীত হয়।
যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আলী আকবর চুন্নুকে মঙ্গলবার রাতে তার মোহাম্মপুরস্থ অফিস থেকে ডিবি পরিচয়ে পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি রফিক হাওলাদারকে হাইকোর্টের পাশের রাস্তা থেকে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সাবেক কমিশনার হারুন উর রশীদ হারুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তিনি অবিলম্বে আটককৃত নেতা আলী আকবর চুন্নু, রফিক হাওলাদার, হারুন অর রশীদ ও সুলতানা আহমেদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা আবুল খায়ের ভূইয়া, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আমিনুল ইসলাম, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, আবুল কালাম আজাদ।-ইত্তেফাক
এবিসিবি/এমআই