Type to search

রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো, গণভোটের পক্ষে জামায়াত

‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো, গণভোটের পক্ষে জামায়াত’-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমাতে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের সুপারিশে একমত জামায়াতে ইসলামী। প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তের পরিবর্তে এনসিসির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের সুপারিশের পক্ষেও মত দিয়েছে দলটি। তবে তারা প্রস্তাবিত এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতিকে চান না। দলটি চায় কেউ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না; তবে সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছরই থাকুক।

ঐকমত্য কমিশনে জামায়াত এসব মতামত দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো এবং নির্বাচন পদ্ধতিসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের অবস্থান বিএনপির বিপরীত।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সমকালকে বলেন, জামায়াত তার অবস্থান জানিয়েছে। অন্য দল কী চায়, তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের ৭০, দুদক সংস্কার কমিশনের ২০, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২৬, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ২৩ এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের ২৭ সুপারিশে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ঐকমত্য কমিশন।

মোট ১৬৬ সুপারিশের ৭৭টিতে জামায়াত একমত। আংশিক একমত ৩৬ সুপারিশে। একমত নয় বলে জানিয়েছে ৫৩ সুপারিশে। সংবিধান সংস্কারে ৩১ সুপারিশে একমত, ১৬ সুপারিশে আংশিক একমত এবং ২৩ সুপারিশে একমত নয় বলে জানিয়েছে তারা।

সংস্কারের সুপারিশ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে–তা জানতে চেয়ে ছয়টি বিকল্প দিয়েছিল কমিশন। এগুলো হলো–অধ্যাদেশ, গণভোট, নির্বাচনের সময় গণভোট, গণপরিষদ, নির্বাচনের পর সংসদে সংস্কার এবং গণপরিষদ হিসেবে সংসদ নির্বাচন। বিএনপি গণপরিষদ, গণভোটের সুপারিশ নাকচ করেছে। জামায়াত এ বিষয়ে মতামত জানায়নি। তাহলে কীভাবে কী সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে– জানতে চাইলে মিয়া গোলাম পরওয়ার সমকালকে বলেন, আলোচনার মাধ্যমে এটা কমিশন ও সরকার ঠিক করুক।

বিএনপি মতামত দিয়েছে, কোনো ব্যক্তি টানা দুইবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর একবার বিরতি দিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। দুই দলই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে রাজি হলেও, বিএনপি চায় নিম্নকক্ষের নির্বাচন বিদ্যমান পদ্ধতিতেই হবে। উচ্চকক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে নয়, গঠিত হবে নিম্নকক্ষের প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে।

জামায়াত উভয় কক্ষে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন চায়। নিম্নকক্ষ যদি আনুপাতিক পদ্ধতিতে গঠিত হয়, তাহলে উচ্চকক্ষের কী প্রয়োজন– এ প্রশ্নের জবাবে গোলাম পরওয়ার বলেন, পেশিশক্তিসহ নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনই শ্রেয়।

প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার মাধ্যমে নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন বলে যে সুপারিশ কমিশন করেছে বিএনপি তাতে একমত না হলেও, জামায়াত রাজি। বিএনপি এনসিসি গঠনের বিরোধী। তবে দুই দলই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সর্বশেষ প্রধান বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে চেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমাতে রাজি, মেয়াদ নয়

সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে, কেউ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। জামায়াত এর সঙ্গে একমত। তবে সংসদ এবং প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ ৪ বছর নয়, ৫ বছরই বহাল রাখার পক্ষে দলটি। কমিশন প্রস্তাব করেছিল, প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে সংসদ নেতা এবং দলীয়প্রধান হতে পারবেন না। জামায়াত এতে একমত হয়নি। দলটি মত দিয়েছে, একই ব্যক্তি সংসদ নেতা ও দলীয়প্রধান হতে পারবেন না। তবে প্রধানমন্ত্রী দলীয়প্রধান হতে পারবেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তিনি সংসদ নেতা হতে পারবেন না।

কমিশন ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সুপারিশ করেছে, যাতে সংসদ সদস্যরা নিজের ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারেন। জামায়াত আংশিক একমত জানিয়ে ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিলের পক্ষে মত দিয়েছে। দলটি চায়, দলীয় এমপি অর্থবিল এবং আস্থা প্রস্তাব বাদে অন্যান্য বিষয়ে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন।

বিদ্যমান সংবিধানে ৪৮(৩), ৫৬(২) অনুচ্ছেদ এবং রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী সর্বময় ক্ষমতা ভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ বাদে বাকি সব কাজ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী সম্পাদন করতে রাষ্ট্রপতি বাধ্য। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমাতে কমিশন এনসিসি গঠনের প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত এই কাউন্সিল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদের দুই কক্ষের স্পিকার, বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত দুই ডেপুটি স্পিকার, প্রধান বিচারপতি এবং সরকারি ও প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী অন্য দলগুলো থেকে একজন নির্বাচিত সদস্যকে নিয়ে গঠিত হবে।

কমিশন সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, স্থানীয় সরকার কমিশন, কর্মকমিশন, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান নিয়োগ হবে এনসিসির মাধ্যমে। ৯ সদস্যের এনসিসির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সম্মতিতে নিয়োগ হবে। জামায়াত এতে একমত হলেও, বলেছে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি এনসিসির সদস্য হতে পারবেন না।

দলের এ অবস্থান সম্পর্কে গোলাম পরওয়ার সমকালকে বলেন, রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক পছন্দে নিয়োগ হয়। তাই তাঁকে এনসিসিতে না রাখাই উত্তম। বিচারাঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে প্রধান বিচারপতিকেও এনসিসিতে রাখা ঠিক হবে না।

এনসিসি গঠনের বিরোধী বিএনপি বলছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর হাতে না থাকলে সরকারপ্রধানের ক্ষমতাই থাকবে না। জামায়াত এর বিরুদ্ধে। দলটির মত, প্রধানমন্ত্রী শুধু নির্বাহী বিভাগে ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে, কেউ দুইবার প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে পারবেন না। বিএনপি এতে একমত না হলেও, জামায়াত রাজি।

প্রথম আলো

দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘বাঙালির প্রাণের উৎসব আজ’। খবরে বলা হয়, রৌদ্রকরোজ্জ্বল বৈশাখী দিন ফিরে এল আবার। সুরে-বাণীতে, সাজসজ্জায়, আহারে-বিহারে, আনন্দ-উল্লাসে আজ সোমবার বাংলার নতুন বছর ১৪৩২ বরণ করে নেবে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে দেশের সব মানুষ। পুরোনো ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে সবার কল্যাণ কামনায় উদ্‌যাপিত হবে নববর্ষের উৎসব। নববর্ষকে আবাহন জানিয়ে বহুকণ্ঠে ধ্বনিত হবে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো…।’

বাংলা নববর্ষের চেয়ে বড় কোনো সর্বজনীন উৎসব দেশে আর নেই। এ কারণে মানুষে মানুষে মহাপ্রাণের মিলন ঘটানোর বর্ষবরণের এই উৎসব গভীর তাৎপর্যময় হয়ে আছে আমাদের জীবনে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর এবার নতুন পরিবেশে বর্ষবরণ উৎসব বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য তাই ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

মূল প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জাতীয়ভাবে রাজধানীসহ সারা দেশে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে নববর্ষ উদ্‌যাপনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। উৎসব অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে সব জাতিসত্তার প্রতিনিধিদের নিজ নিজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রমনার বটমূলে বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী অন্যতম প্রধান অনুষ্ঠান আয়োজন করবে ছায়ানট।

যুগান্তর

‘ফ্যাসিবাদমুক্ত পহেলা বৈশাখ’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, পাহাড় থেকে সমতল। মেঠোপথ থেকে রাজপথ। নববর্ষের আনন্দে ভাসছে সারা দেশ। আজকের দিনটি শুধুই বাঙালির। এই দিনে সে তার অস্তিত্বের জানান দেয় প্রাণে প্রাণে, উৎসবে। বিশ্বকে বলে দেয়-আমি বাংলাদেশি, আমি বাঙালি; আমার আছে গর্বের ইতিহাস। সংকল্প জানায় এক নতুন আগামীর; অতীত বেদনাকে ভুলে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার। এ জাতির সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ। বিগত বছরের জরাকে দূরে ঠেলে আজ বাংলাভাষীদের স্বপ্ন দেখার দিন, নতুন আলোয় অবগাহনের দিন, আনন্দে মেতে উঠারও দিন। হাজার বছরের ঐতিহ্যের বহমানতায় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আজ উৎসবের আমেজ।

এ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে প্রায় ১৬ বছর। এ সময়ে আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ভাবের প্রকাশ করতে হয়েছে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত এক পরিবেশে। ফ্যাসিবাদী সরকারের মর্জিমতো। বাঁধভাঙা উল্লাসে সবাই তখন ভাসতে পারেনি। সেই ফ্যাসিবাদের নাগপাশ কাটিয়ে এ বছর এক মুক্ত আবহে, মুক্ত বাতাসে বাঙালির জীবনে এসেছে পহেলা বৈশাখ।

আর তাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন করতে আজ লাখো মানুষ ঘরের বাইরে ছুটবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মানুষ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবে। বঙ্গাব্দ ১৪৩১-এর আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার হিসাব চুকিয়ে নতুন পথচলা শুরু হবে। জাতিধর্ম নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে নববর্ষ উদযাপনে একসঙ্গে গাইবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো।’ বাংলার গ্রাম, শহর-বন্দর, পথঘাট সব জায়গায় দোলা দেবে পহেলা বৈশাখ।

কালের কণ্ঠ

দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘শিল্পে বাড়তি ব্যয়ের বোঝা’। খবরে বলা হয়, চলমান গ্যাসসংকটসহ নানা কারণে ক্ষতির মুখে রয়েছে দেশের শিল্প খাত। দীর্ঘদিন ধরেই চাহিদামতো গ্যাস মিলছে না শিল্প-কারখানাগুলোতে। গ্যাসসংকটের কারণে তাদের উৎপাদন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। শিল্প-কারখানার পাশাপাশি সিএনজি স্টেশন, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আবাসিক খাতসহ সব ক্ষেত্রে এখন গ্যাসের সংকট চলছে।

এমন পরিস্থির মধ্যেই নতুন শিল্প-কারখানায় এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে (শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র) গ্যাসের দাম আরো ৩৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে শিল্প গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের বিল ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকা এবং ক্যাপটিভ গ্যাসের দাম ৩১.৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা করা হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যেই নতুন করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি শিল্পে নতুন বিনিয়োগে বাধাগ্রস্ত করাসহ শিল্পের সংকট আরো বাড়িয়ে তুলবে বলে শিল্পের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা, বাজার অস্থিতিশীলতা, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার, ঋণপত্র খোলার অভাবে কাঁচামালের অপর্যাপ্ততা, শ্রমিক অসন্তোষ ও উৎপাদন অপ্রতুলতায় প্রায় দুই শতাধিক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।যেগুলো টিকে আছে সেগুলোও অস্তিত্বের সংকটে ধুঁকছে। এমতাবস্থায় নতুন করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে শিল্প খাতকে আরো ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে জানিয়েছেন তাঁরা।

ইত্তেফাক

‘নতুন শিল্প আনতে হলে গুনতে হবে বাড়তি গ্যাস বিল’-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, বিদ্যমান শিল্পে অপরিবর্তিত রেখে নতুন শিল্পের গ্যাসের দাম বাড়ল। শিল্পে ব্যবহূত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা এবং ক্যাপটিভে ৩১ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪২ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এছাড়া বর্তমানে যারা অনুমোদিত লোডের বেশি গ্যাস ব্যবহার করছেন সেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকেও ৩০ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা দরে বিল দিতে হবে। নতুন মূল্যহার চলতি এপ্রিল মাস থেকেই কার্যকর হবে।

গতকাল রবিবার রাজধানীতে বিইআরসির সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নতুন মূল্যহার ঘোষণা করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য মিজানুর রহমান, সদস্য সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, মো. আব্দুর রাজ্জাক ও শাহীদ সারোয়ার।

বিদ্যমান গ্রাহকদের ব্যবহূত গ্যাসের মূল্যহার (শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ ও ৩১ টাকা ৭৫ পয়সা) অপরিবর্তিত রেখে নতুন ও প্রতিশ্রুত গ্রাহকদের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল পেট্রোবাংলা। প্রতিশ্রুত গ্রাহকদের (ইতিমধ্যে অনুমোদিত) অর্ধেক বিল বিদ্যমান দরে, অর্ধেক ৭৫.৭২ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়।

পেট্রোবাংলার মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি গ্রহণ করে বিইআরসি। পেট্রোবাংলা তাদের প্রস্তাবে বলেছে, দাম না বাড়ালে বছরে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হবে। পেট্রোবাংলার সেই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরাসহ অংশীজনরা। শিল্পে দুই ধরনের দর করার বিরোধিতা করেন প্রায় সবাই। তারা বলেন, বিদ্যমান শিল্পে অপরিবর্তিত দরে আর নতুন শিল্পের জন্য বাড়তি দাম নির্ধারণ করা হলে অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হবে। নতুন বৈষম্য তৈরি হবে। একই দেশে একই শ্রেণির গ্রাহকদের জন্য পৃথক দুটি মূল্যহার আইনিভাবেও সিদ্ধ নয়।

নয়া দিগন্ত

দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম ‘১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল’। খবরে বলা হয়, অর্থনৈতিক সুফল পাওয়া যাবে না বিধায় ১০টি সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড (বিডা) গভর্নিং বডির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

বাতিল করা অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক, বাগেরহাটের সুন্দরবন ট্যুরিজম পার্ক, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল, গাজীপুরের শ্রীপুরের অর্থনৈতিক অঞ্চল, ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল, মুন্সীগঞ্জের গার্মেন্ট শিল্প পার্ক (বিজিএমইএ), সুনামঞ্জের ছাতক ইকোনমিক জোন, বাগেরহাটের ফমকম ইকোনমিক জোন, ঢাকার সিটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অর্থনৈতিক অঞ্চল।

এ বিষয়ে গতকাল বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বিডা গভর্নিং বডির সভায় নেপালের জন্য পৃৃথক একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করার নির্দেশনা দেয়া হয়।

বিডা গভর্নিং বডির সভা বিষয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন বলেন, গভর্নিং বডির সভায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে। আমরা এখন যেটা ওয়ানস্টপ সার্ভিস বলছি, তা আসলে ওয়ান কাইন্ড অফ ম্যানুয়াল। প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছে এক মাসের মধ্যে এটিকে ডিজিটালাইজড করতে হবে। এর ফলে রেন্ট সিকিং বিহেবিহার (চাঁদাবাজি মনোভাব) অনেকাংশে কমে যাবে। তিনি আরো জানান, এখন থেকে গভর্নিং বডির মিটিং ঘন ঘন হবে। আগে এটি দুই-তিন বছর পরপর হতো। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আগামী মাসেই বিডা ও বেপজার গভর্নিং বডির আরেকট মিটিং হবে। এ দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগ সম্মেলনে ৩১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে।

বণিক বার্তা

‘দূষণে কমে আসছে ইলিশের উৎপাদন’-এটি দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, উপযোগী আবহাওয়া ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশই উৎপাদন হয় নদীমাতৃক বাংলাদেশে। সামুদ্রিক মাছ হলেও ডিম ছাড়তে স্রোতশীল নদীতে আসে ইলিশ। তবে এটি বেশ সংবেদনশীল মাছ। প্রতিকূল আবহাওয়ায় খুব ঘন ঘনই পরিবর্তন করে গতিপথ। সম্প্রতি বাংলাদেশেও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে ইলিশের আবাস ও জীবনাচরণ। নদ-নদীর দূষণে কমছে উৎপাদনও।

বিশেষজ্ঞরা জানান, নোনা জলের ইলিশ ডিম পাড়তে নদীর উজান ঠেলে মিঠা পানিতে উঠে আসে। ডিম ছেড়ে আবার ভাটিতে গা ভাসিয়ে ধরে সাগরের পথ। এর জন্য প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত পানিপ্রবাহের। বর্ষা মৌসুমে অর্থাৎ জুলাই থেকে অক্টোবরে মেঘনা নদীর নিম্নাঞ্চলের পানি স্বচ্ছ হয়ে ওঠে এবং লবণাক্ততা থাকে না। আবার প্রবল স্রোত ও জোয়ার-ভাটার কারণে ইলিশ সমুদ্র থেকে নদীতে আসতে শুরু করে। পাশাপাশি ইলিশের ডিম ছাড়ার সময় প্রচুর অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। বর্ষায় নদীর পানি তুলনামূলক উত্তাল থাকে বেশি।

এ সময় পানিতে অক্সিজেনের মাত্রাও বেশি থাকে। এছাড়া মাছের বংশবিস্তারে পানির তাপমাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এর ওপর নির্ভর করে মাছের ডিম ছাড়ার সময়। সামান্য তারতম্য হলেই মা-ইলিশ ডিম নষ্ট করে ফেলে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নদীতে দখল-দূষণ, ডুবোচর ও অবকাঠামো নির্মাণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইলিশের বিচরণসহ সার্বিক জীবনচক্রে ব্যাঘাত ঘটছে। হুমকিতে পড়েছে এর প্রজনন।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দেশে মোট ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৯৮ হাজার টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৫ লাখ ১৭ হাজার টনে উন্নীত হয়। কিন্তু এর পর থেকেই ইলিশ আহরণ নানা কারণে শ্লথ হয়ে আসে। গত অর্থবছর তো উৎপাদন না বেড়ে উল্টো কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ৫ লাখ ৭১ হাজার টন ইলিশ ধরা পড়লেও গত অর্থবছর তা কমে ৫ লাখ ২৯ হাজার টনে দাঁড়ায়। সে হিসাবে জনপ্রিয় মাছটির আহরণ কমেছে ৪২ হাজার টন।

আজকের পত্রিকা

দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ‘আলোচনায় সরকারের মেয়াদ’। খবরে বলা হয়, বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মনোভাবে দলগুলো আশ্বস্তও ছিল। তবে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে বিভিন্ন মহলের প্রচার ও জনমত গঠনের চেষ্টা তাদের ভাবনা বদলে দিয়েছে। নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার সংশয় দেখা দিয়েছে বিএনপিতে। এই সংশয় কাটাতে দলটি ১৬ এপ্রিল বৈঠকে বসবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে।

বিএনপির সমমনা কয়েকটি দলও অন্তর্বর্তী সরকার পাঁচ বছর মেয়াদে থাকার পক্ষে প্রচারকে ভালোভাবে নিচ্ছে না। কোনো কোনো দলের নেতারা এই প্রচারকে আমল না দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কথায় আস্থা রাখতে চাইছেন। ড. ইউনূস গত শনিবারও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠকে আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের লক্ষ্য নিয়ে সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা গত ২৯ মার্চ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

১০ এপ্রিল সুনামগঞ্জে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাস্তা থেকে মানুষ বলে যে আপনারা (সরকার) আরও পাঁচ বছর থাকেন।’ এর দুই দিন পর কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া এক চিরকুটে এই সরকারের মেয়াদ দীর্ঘ করার বাসনা জানানো হয়। এনসিপিসহ কয়েকটি সংগঠনের ফেসবুক পেজে সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে প্রচার ও জনমত গঠনের চেষ্টা লক্ষ করা গেছে।

দেশ রূপান্তর

‘৩১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে’-এটি দৈনিক রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলে ভারত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। এজন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুরসহ কয়েকটি বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ের সক্ষমতা দ্রুত বাড়ানোর জন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। একই সঙ্গে পণ্য রপ্তানির খরচ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

গতকাল রবিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চার দিনের বিনিয়োগ সম্মেলনের ওপর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বেজা ও বিডার গভর্নিং বডির সভায় এসব আলোচনা হয়েছে বলে তুলে ধরেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিডার বাণিজ্য উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রচি, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

আশিক চৌধুরী বলেন, আশুলিয়ায় উৎপাদন করে একটা টি-শার্ট ঢাকা বিন্দানবন্দর থেকে এয়ার কার্গোর মাধ্যমে পর্তুগালে নিয়ে গেলে যে খরচ হয়, গাজীপুর থেকে ট্রাকে করে দিল্লি নিয়ে সেখান থেকে পর্তুগাল পাঠালে তার চেয়ে খরচ কম পড়ে। এ জায়গায় কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুরের কার্গো হ্যান্ডেলিং সক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকার বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ কীভাবে দ্রুত শুরু করা যায় তারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সূত্র- দৈনিক মানবজমিন

Translate »