উন্নয়ন দেখাতে কাজ অসমাপ্ত রেখেই মেট্রোরেল উদ্বোধন হয়েছে

মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পূর্বেই মাঝ পথে তাড়াহুড়া করে উদ্বোধন নিয়ে জনগণের মধ্যে সন্দেহের দানা বেঁধেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র দপ্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
তিনি বলেছেন, মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেখ হাসিনা সেই পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ভরসা পাচ্ছে না। এ কারণে উন্নয়ন দেখাতে কাজ অসমাপ্ত রেখেই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে জনগণের কোটি কোটি টাকা অপচয় করে তাড়াহুড়া করে মেট্রো রেলের একাংশ উদ্বোধন করা হয়েছে।
মেট্রোরেল প্রকল্পে সরকারের দুর্নীতি পাহাড়সম উল্লেখ করে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপি সরকারের আমলেই মেট্রোরেলের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। ক্ষমতার ধারাবাহিকতায় যে সরকার থাকতো তারা মেট্রোরেলের কাজ সম্পন্ন করতো বলে জানান তিনি। আশপাশের দেশের চেয়ে ঢাকার মেট্রোরেলের ভাড়া দুই থেকে পাঁচগুণ বেশি। এই মেট্রোরেল নির্মাণে কিলোমিটার প্রতি খরচ পৃথিবীর যে কোন দেশের চাইতে কয়েকগুণ।এই বিষয়ে তিনি তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন।
শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বন্দুকের মুখে জিম্মি করে ১৪ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতায় থাকা সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। তিনি বলেন, স্বৈরাচারের অবসান ঘটিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ধ্বংসস্তূপের উপর সংসদীয় পতাকা উড্ডীন করেছিলেন। দেশকে ইমার্জিন টাইগারে রূপান্তরিত করেছিলেন। সে দেশকে ১৪ বছরে লুটপাট করে দুর্ভিক্ষের রাজ্যে পরিণত করেছে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন মানে দুর্নীতির মহোৎসব। বিএনপির এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন,আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন মানে দফায় দফায় বাড়িয়ে দেশের অর্থনীতিকে পথে বসিয়ে দেয়া। সরকার জনগণের জন্য উন্নয়ন করছে না,তথাকথিত উন্নয়নের নামে নিজেদের পকেট ভরছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। সেখানে সাধারণ জনগণের কোন উন্নয়ন নেই।
কারাবন্দী রিজভীকে উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি:
কারাবন্দী দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ বলে দাবি করেছে বিএনপি। দলটির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স তাকে কারাগারের বাইরে অন্য কোনো উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার দাবি জানান। প্রয়োজনে চিকিৎসা খরচ পরিবার বহন করবে বলেও জানান তিনি।
প্রিন্স বলেন,চলমান আন্দোলনকে দমন করতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে সরকার। তাদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ। কারাগারে তারা সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না।’
তিনি বলেন,শুক্রবার নয়াপল্টনের গণমিছিলে আসার পথে এবং মিছিল থেকে ফেরার পথে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ১৬ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গণমিছিলকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ২১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এমনকি চকবাজার থানাধীন ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মেজবাহ উদ্দিন হীরাকে না পেয়ে তার ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী সিফাতকে গ্রেফতার করেছে চকবাজার থানা পুলিশ।’সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানা প্রমুখ।-ইত্তেফাক
এবিসিবি/এমআই