দেশে ও বিদেশে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষাকে উন্নতি করার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকার ক্যাডার পদ তৈরি করেছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে এবং কর্মসংস্থানমুখী শিক্ষার উন্নয়নে ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জন্য ক্যাডার পদ মোট ১ হাজার ৬১টি তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে ও বিদেশে বর্তমান চাকরির বাজারে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের অগ্রাধিকারের অংশ হিসেবে নেয়া হয়েছে এই পদক্ষেপ।
ওমর ফারুক বলেন, সরকার প্রতিটি উপজেলায় একটি কারিগরি স্কুল ও কলেজের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বর্তমানে ১০০ টি নতুন কারিগরি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের কাজ চলছে। দেশে বর্তমানে ১ শ’ ১৩টি সরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, এর মধ্যে ৬৪টি কারিগরি কলেজ এবং ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও দেশে ৪ হাজার ৭ শ’ ২৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সূত্রে জানায়, সম্প্রতি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের জন্য রাজস্ব খাতে ১ হাজার ৬১টি স্থায়ী ক্যাডার পদ তৈরির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরকার কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তীব্র জনশক্তি সংকট কমাতে ১ শ’ ১৩টি কারিগরি স্কুল, কলেজ ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে নিয়োগের জন্য প্রায় ১২ হাজার ৬ শ’ ৭টি এসব পদের মধ্যে ১ হাজার ৬১টি ক্যাডার পদ এবং ১১ হাজার ৫ শ’ ৪৬টি নন-ক্যাডার পদ সৃষ্টি করেছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জন্য ৫টি বিভাগের ক্যাডার পদ তৈরি করা হচ্ছে।
এই পদের মধ্যে বিশটি ভাইস প্রিন্সিপাল পদ (জাতীয় পে-স্কেলে গ্রেড-৫), অন্যদিকে ১ শ’ ৬৯ জন প্রধান প্রশিক্ষক (গ্রেড-৬), ৫৭ জন প্রধান প্রশিক্ষক (নন-টেকনিক্যাল) (গ্রেড-৬), ৩ শ’ ৫ জন প্রশিক্ষক (গ্রেড-৯) এবং ৫ শ’ ১০ জন প্রশিক্ষক (গ্রেড-৯)।
ওমর ফারুক বলেন, ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ ৩টি অর্থবছরে প্রায় ১২ হাজার পদে নিয়োগ করা হবে। স্কুল ও কলেজগুলোতে তাৎপর্যপূর্ণ জনবল সংকট নিরসনের জন্য পদ তৈরি করছে সরকার কারণ বর্তমানে প্রয়োজনীয় জনশক্তির এক-তৃতীয়াংশ ইনস্টিটিউট পরিচালিত হচ্ছে,
তিনি আরও বলেন, পদ সৃষ্টির মাধ্যমে নিয়োগের পরে শিক্ষার মান এবং ভর্তির হার বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
১ শ’ ১৩টি সরকারি ইনিস্টিটিউটের জন্য বহু সংখ্যক পদ তৈরির সরকারি আদেশ জারি করার জন্য ইতোমধ্যে সকল প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
ওমর ফারুক বলেন, যেহেতু বিদেশে দক্ষ শ্রমিকদের উচ্চ চাহিদা রয়েছে, বাংলাদেশী শ্রমিকদের এই উদ্যোগ বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং রেমিটেন্স প্রবাহের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মোট তের হাজার ৭২টি পদ (স্থায়ীভাবে ১ হাজার ২ শ’ ৪৪টি ক্যাডার পদ এবং ১২ হাজার ৭ শ’ ২৮টি নন-ক্যাডার পদ অস্থায়ী ভিত্তিতে) তৈরির প্রস্তাব অনুমোদন করে। পরবর্তীতে অর্থ বিভাগ রাজস্ব খাতে ১২ হাজার ৬ শ’ ৭টি পদ (১১ হাজার ৫ শ’ ৪৬টি নন-ক্যাডার পদ এবং ১ হাজার ৬১টি ক্যাডার পদ) তৈরি করতে সম্মত হয়। পদগুলোর জন্য অর্থ বিভাগও বেতন স্কেল নির্ধারণ করেছে।