Type to search

জাতীয় সারাদেশ

‘পক্ষপাতিত্বমূলক মেডিক্যাল রিপোর্টের কারণেই খালাস পেয়ে যান ধর্ষকরা’

বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে এক নারী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। তবে ওই নারীর শরীরে জোরপূর্বক ধর্ষণের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি মর্মে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেন হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের ২ চিকিৎসক ডা. নাদিরা বেগম ও ডা. মোমিন চৌধুরী।

একজন নারী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার পরও কেন তার শরীরে কোনো চিহ্ন পেলেন না ডাক্তাররা তার ব্যাখ্যা দিতে হাজির হন হাইকোর্টে। পরে ওই ২ চিকিৎসক রিপোর্টের পক্ষে মৌখিক ব্যাখ্যা দেন। কিন্তু আদালত ওই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে আদেশ দিতে চান। এ সময় ২ চিকিৎসক আদালতে ক্ষমা চান। এরপরই হাইকোর্ট রবিবার (২১ নভেম্বর) ওই চিকিৎসকদের লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।

বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের দ্বৈত বেঞ্চ রবিবার এই আদেশ দেন। হাইকোর্ট জানান, আমরা ক্ষমা করতে বসিনি, বিচার করতে বসেছি। এ ধরনের পক্ষপাতিত্বমূলক রিপোর্ট দেওয়ার কারণেই ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে খালাস পেয়ে যাচ্ছে ধর্ষকরা। চিকিৎসকদের উচিত ধর্ষণের ঘটনায় গুরুত্বসহকারে ভিকটিমের শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা। যাতে কোনোভাবেই পার পেয়ে না যায় ধর্ষকরা।

চলতি বছরের ৬ মার্চ ওই নারী হবিগঞ্জের লাখাইয়ে বান্ধবীর বিয়েতে যান। গার্মেন্টসে চাকরির সুবাদে মধ্যে পরিচয় তাদের। সেখানে গিয়ে বখাটেদের উত্যক্তের শিকার হন এই নারী। পরে প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ১২ মার্চ তিনি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় ১৯ মার্চ লাখাই থানায় মামলা করেন ভিকটিম। ওই মামলায় মো. শিপন মিয়া (২২), মো. পারভেজ (২০), মো. শাহজাহান (২২), আফিয়া আক্তার (৩০), মো. হুমায়ুন মিয়া (২০), দেলোয়ার হোসেন দিলু (৪৫)  ও রাবিয়া খাতুনকে (৩৫) আসামি করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ৪ আসামি ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। অপর আসামিরা এ কাজে সহায়তা করেন। এ মামলায় হাইকোর্টে জামিন চান আটককৃত আসামি রাবিয়া খাতুন। ওই জামিনের আবেদন শুনানিকালে ভিকটিমের মেডিক্যাল রিপোর্টে চিকিৎসকদের দেওয়া মতামতের বিষয়টি নজরে আসে। এরপরই হাইকোর্ট ২ চিকিৎসককে তলব করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ মামলা পরিচালনা করেন। তাকে সহায়তা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শামীম খান। রুহুল কুদ্দুস কাজল আসামি রাবিয়া খাতুনের পক্ষে ছিলেন।

Translate »