Type to search

জাতীয়

রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্তকে শেষ শ্রদ্ধা

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন ৪ নম্বর সেক্টর কমান্ডার এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) চিত্ত রঞ্জন (সি আর) দত্ত বীর উত্তমের প্রতি ভালবাসা ও শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

আজ মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় পতাকায় মুড়ে সি আর দত্তের কফিন নিয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে যাওয়া হয়।

ঢাকার জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয় তাকে। এরপর ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় তাকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ সময় সি আর দত্তের ছেলে চিরঞ্জিত দত্ত বলেন, ‘বাবাকে ভিন্নভাবে দেখেছি নানা সময়ে আমরা। এ দেশ নিয়ে সব সময় স্বপ্ন দেখতেন তিনি। তিনি কত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেশের জন্য লড়াই করেছেন। এক অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন ছিল বাবার। সারা জীবন সে লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন তিনি। কোনো কিছু নিয়ে কখনও কোনো আক্ষেপ ছিল না তার। তিনি দেশকে হান্ড্রেড পারসেন্ট ভালোবাসতেন।’

বড় মেয়ে মহুয়া দত্ত এবং ছোট মেয়ে কবিতা দাসগুপ্তও বাবাকে নিয়ে ঢাকেশ্বরীর প্রাঙ্গণে স্মৃতিচারণ করেন।

গত ২০ আগস্ট সি আর দত্ত যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় তার মেয়ের বাসায় বাথরুমে পড়ে গেলে তার পা ভেঙে যায়। এরপর তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তার শারিরিক অবস্থার দ্রুত খারাপের দিকে যেতে থাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ আগস্ট বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

সোমবার (৩১ আগস্ট) তার মরদেহ যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে পৌঁছানোর পর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে রাখা হয়। আজ মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে পরিবার ও স্বজনদের শেষ দেখার জন্য কফিন নেওয়া হয় তার বনানী ডিওএইচএসের বাসায়। সেখান থেকে তার মরদেহ সকাল সোয়া ৮টার দিকে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি, বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকেও সি আর দত্তের প্রতি জানানো হয় ফুলেল শ্রদ্ধা।

সকাল সাড়ে ১০টায় সি আর দত্তের মরদেহ সবুজবাগের রাজারবাগ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা শেষে শেষকৃত্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে সি আর দত্তের জন্ম। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে তার পৈতৃক বাড়ি।

Translate »