মারা গেছেন বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক
চলে গেলেন লাইফ সাপোর্টে থাকা সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর।
দেশের বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক গত ১৫ অক্টোবর থেকে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে রাজধানীর আদ্-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রথম দিকে কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু অবস্থা কিছুটা জটিল হওয়ায় হাই ডিপেনডেন্সি কেয়ার ইউনিটে (এইচডিইউ) তাকে ভর্তি করা হয়।
গত ২০ অক্টোবর তার শারীরিক অবস্থার আরো খারাপ হলে তাকে দ্রুত লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ঐ সময় ব্লাড প্রেশার ও অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যায় তার। এতে শকে চলে যান তিনি।
এরপর আদ্-দ্বীন হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন গতকাল শুক্রবার জানিয়েছিলেন, স্যারের রক্তের পরীক্ষানিরীক্ষাগুলো করা হয়েছে। কিন্তু তাতে খুব একটা তার উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেছি। উনারা স্যারকে দেখেছেন সবাই। তারাও বলেছেন, স্যারের অবস্থা আশংকাজনক। আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের দোয়া করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২রা নভেম্বর ভারতের কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। তিনি ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন তিনি। এবং ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন তিনি। রফিক বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর পার করেছেন।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বর্ণাঢ্য জীবনের উপার্জিত অর্থের প্রায় সবই ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণ ও সমাজসেবায়। আর তার এই উদ্যোগকে বিরল বলে আখ্যায়িত করেছেন তার আইন অঙ্গনে সমসাময়িকরা।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে আইন অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃততে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি গভীর শোক প্রকাশ করেছে। এছাড়া সিনিয়র আইনজীবীরাও গভীর শোক প্রকাশ করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। তারা জানান, আইন ও বিচারাঙ্গনে তার শূণ্যতা পূরণ হবার নয়।