জাতীয় নির্বাচনে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত জাতিসংঘ বাংলাদেশের না

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত জাতিসংঘ। তবে তাদের সহযোগিতা দরকার নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ। নির্বাচনে জাতিসংঘের সহযোগিতা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছে, বাংলাদেশ যথেষ্ট পরিপক্ব, তাদের সহযোগিতার দরকার নেই।
সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।
বৈঠক শেষে গোয়েন লুইস জানান, সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অংশগ্রহণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা শক্তিশালীকরণ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা– এ বিষয়ে তিনি জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি প্রথম আলো প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছি। সরকার থেকে কী ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে– এর উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক ও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে জাতিসংঘের সমন্বয়কারী জানান, আমি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলাম। জাতিসংঘ নির্বাচনে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে জানিয়েছি। নির্বাচনী পর্যবেক্ষক বা অন্যান্য সহযোগিতার প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে তারা জানিয়েছে, তাদের কোনো সহযোগিতা দরকার নেই।
বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘের কোনো সহযোগিতা আমাদের নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ আমরা যথেষ্ট পরিপক্ব। নির্বাচনে পর্যবেক্ষকদের ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। যদিও অনেক উন্নত দেশ এগুলো নেয় না। কিন্তু আমাদের এতে কোনো আপত্তি নেই। সুন্দর, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যে প্রতিষ্ঠানগুলো দরকার, সেগুলো আমরা তৈরি করেছি।
সাংবাদিক শামসুজ্জামান প্রসঙ্গ : জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে আটক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি শিশুকে নির্যাতন করার জন্য তিনি আটক হয়েছেন। দ্বিতীয় ইস্যু হলো– আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে তামাশা করেছেন তিনি। আমাদের চেতনার সবচেয়ে বড় ধন স্বাধীনতা। ওটাকে নিয়ে তামাশা করবেন, এটা দেশের জনগণ গ্রহণ করবে না।
অপরাধ করে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পার পাওয়া যাবে না বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, সাংবাদিকের নাম দিয়ে অপরাধ করবেন, এটা গ্রহণযোগ্য হবে না। অপরাধ করলে তাঁকে শাস্তি পেতে হবে।
রোহিঙ্গা অর্থায়ন : বৈঠকে রোহিঙ্গাদের অর্থায়ন জোগাড় নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে অর্থ কমছে– এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা বলেছি, যারা ওয়াদা করেছে, তাদের কাছ থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অর্থ সংগ্রহ করেন।
র্যাব প্রসঙ্গ : সম্প্রতি জার্মানভিত্তিক ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, র্যাবকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে– এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার হচ্ছে না তারা, নিরাপত্তার উদ্দেশে ব্যবহার হচ্ছে।
এবিসিবি/এমআই