এখনো ঊর্ধ্বমুখী তেল-চালের দাম, অস্থির মসলার বাজার
চলতি সপ্তাহে সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে চালের দাম বেশ চড়া। মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো চিকন চাল কিনতে প্রতি কেজিতে দাম দিতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। চিকন চালের দাম গত এক মাসে কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। বেড়েছে মোটা ও মাঝারি চালের দামও।এদিকে এক মাস পরও স্বাভাবিক হয়নি সয়াবিন তেলের বাজার। এখনো সয়াবিন তেলের সংকটে ভুগছেন গ্রাহক ও খুচরা বিক্রেতারা।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগ, শান্তিবাগ, খিলগাঁও কাঁচাবাজার, রামপুরা, কাওরানবাজার, শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও তেজগাঁওয়ের কলমিলতা বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সয়াবিন তেল নিয়ে এখনো ভুগছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। এক মাস পরও স্বাভাবিক হয়নি সয়াবিন তেলের বাজার। দাম বাড়ানোর এক মাসের মাথায়ও বাজারে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক করেনি কোম্পানিগুলো। এখনো পাড়া-মহল্লার বেশিরভাগ দোকানে মিলছে না সয়াবিন তেল। গত ৯ ডিসেম্বর সরকার তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এতে প্রতি লিটার খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ে আট টাকা করে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হয়েছে ১৭৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ টাকা।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমরা অর্ডার এবং অগ্রিম টাকা দিয়েও সয়াবিন তেল পাচ্ছি না। তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য না কিনলে তেল দেয় না কোম্পানিগুলো। গ্রাহক পর্যায় থেকেও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, ১০ দোকান ঘুরলে এক দোকানে তেল পাই। কেউ কেউ দাম রাখে বেশি। আবার কেউ অন্যান্য পণ্য না কিনলে তেল বিক্রি করছে না।
চালের দাম বাজারে এখন বেশ চড়া। বাজারে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো চাল কিনতে প্রতি কেজিতে দাম দিতে হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। চিকন চালের দাম গত এক মাসে কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। বেড়েছে মোটা ও মাঝারি চালের দামও। বর্তমানে এক কেজি মোটা চাল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আর মাঝারি ধরনের ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চালের দাম রাখা হচ্ছে ৬০-৬৬ টাকা। এ ছাড়া গত এক সপ্তাহে শুকনা মরিচ ও জিরার দাম কেজিতে ৫০ টাকা এবং ছোট এলাচির দাম কেজিতে ২০০ টাকা বেড়েছে।
বাজারে গোল বেগুন ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা, পাকা টমেটো ৪০ টাকা, শসা ৫০টাকা, গাজর ৪০ টাকা, খিরা ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, সিম ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, লেবুর হালি ২০ থেকে ৩০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা পিস, কাঁচা কলা ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, ভেন্ডি ১০০ টাকা, ফুলকপি ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২৫ টাকা, ধনেপাতা ৮০ টাকা ও মটরশুঁটি ৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
আলুর দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহের ৩০ টাকার আলু ৫ থেকে ১০ টাকা কমে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে। এ ছাড়া দেশি রসুন ২৫০ ও ইন্ডিয়ান রসুন প্রতি কেজি ২২০ টাকা, আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২৪০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা।
রামপুরা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া বলেন, অধিকাংশ সবজির দাম গত সপ্তাহের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে। করলা, ঝিঙা, ধুন্দুলসহ নতুন কিছু সবজির দাম বাড়তি। তবে সয়াবিন তেল ও চালের বাজার এখনো অস্থির রয়েছে। এক এক দোকানদার একএক দামে বিক্রি করছে তেল।
-যুগান্তর