আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রোহিঙ্গাদের ফেরতে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টির অনুরোধ জানালেন প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ ব্যাপারে আরও কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম ভার্চুয়াল অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ১১ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান করেছে। ৩ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত ফেরত নেয়নি মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ সংকটের কারণে বিদ্যমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসমূহ আরও প্রকট হয়েছে। এ করোনা ভাইরাস আমাদের উপলদ্ধি করতে বাধ্য করেছে যে, এ সঙ্কট উত্তরণে বিকল্প নেই বহুপাক্ষিকতাবাদের। জাতিসংঘের ৭৫তম বছরপূর্তিতে জাতিসংঘ সনদে অন্তর্নিহিত বহুপাক্ষিকতাবাদের প্রতি আমাদের গভীর আস্থা রয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে বহু প্রতিকূলতার মধ্যেও বহুপাক্ষিকতাবাদের আদর্শ সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর আমরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রতি বছরের মত এ বছরও বাংলায় এই ভাষণ দেন। ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৯তম অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বাংলায় ভাষণ দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধ, রোহিঙ্গা সংকট এবং জলবায়ুসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। ভাষণে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বিস্তার রোধ, ভ্যাকসিনের সমবণ্টন এবং প্রবাসী শ্রমিক ও রেমিটেন্সের ওপর এর প্রভাব তিনি তুলে ধরেন। এছাড়া, জলবায়ু ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে জলবায়ু ইস্যুটিও তুলে ধরেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ সংকটে মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য, নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠা, এসডিজি বাস্তবায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, টেকসই গণতন্ত্র, সন্ত্রাস দমন, মাদক চোরাচালান বন্ধ, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, সুশাসন এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের ভূমিকা তার ভাষণে তিনি তুলে ধরেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশন শুরু হয়েছে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে। এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘আমরা ভবিষ্যৎ চাই, জাতিসংঘ আমাদের দরকার: বহুমুখীতার প্রতি পুনর্নিশ্চিতের মাধ্যমে আমাদের প্রতিশ্রুতি।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর কারণে জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বিশ্ব নেতৃবৃন্দ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভার্চুয়াল অধিবেশনে অংশ নেন।
