জাতিকে ধ্বংস করার জন্য যা প্রয়োজন জিয়া তার সবকিছুই করে গেছেন: প্রধানমন্ত্রী
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীরা স্বীকার করেছে যে, এই বর্বরোচিত ঘটনায় জিয়াউর রহমান তাদের সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলেন। তাই বিএনপি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়া সম্পৃক্ততা অস্বীকার করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারী কর্নেল ফারুক ও রশিদ বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বলেছে, জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের আগে ‘গো অ্যাহেড’ বলে সব ধরনের সহায়তা দিয়েছিলেন তাদের। তাই বিএনপি জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততাকে অস্বীকার করতে পারে না। এই ঘটনা থেকে তাদের দলীয় নেতাকে যতই আড়াল করার চেষ্টা করুক না কেন বিএনপি, সত্যকে কখনো দাবিয়ে রাখা যায় না।’
সোমবার (৩১ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু এভিন্যুস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এছাড়াও অন্যান্য হত্যাকারীদের স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যে এটা বেরিয়ে এসেছে যে জিয়াউর রহমানও তাদের সাথে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়া সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর খন্দকার মোশতাক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াকে সেনা প্রধান করে। একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য যা দরকার জিয়া তার সবকিছুই করে গেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র ও অর্থ তুলে দিয়ে ছাত্র সমাজকে ধ্বংস করেছেন। ছাত্রদের নিয়ে ‘হিলফুলফুজুলে’ প্রমোদ ভ্রমণে বের হন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই জাহাজটিকে পবিত্র হজ পালনের জন্য কিনেছিলেন।’
বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদাহরণ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, স্বামীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বেগম জিয়াও তার নিজ স্বার্থে ছাত্রদের ব্যবহার করেছেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ছাত্রদের হাতে কলম ও খাতা তুলে দিয়েছিলাম আমি। কারণ আমি জানতাম যে একটি স্বাধীন দেশে সুনাগরিক হওয়া অত্যন্ত জরুরি ছাত্রদের।’
বাংলাদেশের বিগত সকল আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরবময় অধ্যায়ের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠনটি বিগত সকল আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বক্তব্য রাখেন।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্য।
এ সময় ছাত্রলীগের প্রকাশনা ‘মাতৃভূমি’র মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শহীদ বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্যদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।