Type to search

জাতীয় বাংলাদেশ

আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ

রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নেয়া মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের একটি পথ খুঁজে পাওয়া যায় কিনা? তা নিয়ে ভাবছে সরকার। এমটাই জানালেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। বৃহস্পতিবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে এক কলোকিয়ামে তিনি বলেন, আমার বেশির ভাগ কাজই প্রকাশ্যে বলার মতো নয়। দ্রুত অনেক ঘটনা ঘটছে এবং পরিস্থিতি প্রতিদিন পরিবর্তিত হচ্ছে। মানুষ মনে করে আরাকান আর্মির সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই। এর একটি কারণ হচ্ছে এটি আগে বলা হয়নি। তিনি বলেন, আরাকান আর্মি যখন রাখাইনে শক্তিশালী হচ্ছিল, আমরা বুঝতে পারছিলাম যে তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা করতে হবে। আরাকান আর্মি যখন তাদের ফ্ল্যাগ আমাদের সীমান্তে উত্তোলন করলো, সেদিন আমরা সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলাম যে এটি নতুন ব্যবস্থা এবং তাদের মোকাবিলা করতে হবে আমাদেরকে। তাদের সঙ্গে আলোচনার আগে আমরা তাদের একটি বার্তা দিতে চেয়েছিলাম। যেহেতু তারা এখন রাখাইন দখল করে আছে, সেজন্য তাদের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলতে হবে বলে তিনি জানান।

ড. খলিল বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনার আগে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত জুলিয়া বিশপের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়। আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষ থেকে আরাকান আর্মির জন্য একটি বিবৃতির খসড়া তৈরি করি। সেখানে বলা ছিল যে আরাকান আর্মিকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে হবে।

খলিলুর রহমান বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে জাতিসংঘ মিয়ানমার বিষয়ক দূত, জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রধান এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের জন্য বাংলাদেশ সফর কোনও আকস্মিক ঘটনা নয়। এটির পেছনে অনেক কিছু করতে হয়েছে। আরাকান আর্মি রাখাইনের প্রায় ৯০ শতাংশ দখল করে নিয়েছে। আমি রিপোর্ট পেয়েছি যে সিত্তুয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে এবং সেখানে হামলা হচ্ছে। রাখাইনের মোট জনসংখ্যা হচ্ছে শুধু ঢাকা শহরে যারা বাস করে তাদের ১৬ শতাংশ। আপনারা বুঝতে পারেন যে দুই জায়গার মধ্যে ভারসাম্যে কত দূরত্ব। সেটি আরাকান আর্মিও জানে। কাজেই আমাদের শক্তি প্রদর্শনের প্রয়োজন নেই বলে তিনি জানান।

নিজেকে একজন বাস্তববাদী অভিহিত করে ড. খলিল বলেন, সার্বভৌম দেশ হিসেবে যাদের সঙ্গে কাজ করার দরকার, বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে কাজ করবে। তিনি বলেন, আমরা আরাকান আর্মির কাছে পরিষ্কার করেছি যে সম্মানের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে এবং তারা আমাদের জানিয়েছে— তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে যখন রাখাইন পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ছাড়া রাখাইনের অর্থনৈতিক রুট নেই, ভারতের মধ্য দিয়ে তাদের কর্মকাণ্ড চলমান রাখা কঠিন।

উল্লেখ্য, আরাকান আর্মির সঙ্গে ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশের যোগাযোগ রয়েছে মর্মে আলোচনা আছে। কিন্তু বাংলাদেশের যোগাযোগ আছে কিনা? তা নিয়ে সরকারের তরফে এক ধরনের নীরবতা পালন করা হচ্ছিলো।

-মানবজমিন

Translate »