জামিনে বের হয়ে সরকারি কর্মচারীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা

মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম ওরফে আদম ব্যাপারী সেলিম। গত বছরের ৪ঠা আগস্ট মোহাম্মদপুর এলাকার ময়ূর ভিলার সামনে ছেলে মো. জাহিদকে (১৮) গুলি করার ঘটনায় ১৬ই অক্টোবর মা করিমন নেসা বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। সেই মামলার ১৩ নম্বর আসামি সেলিম। দেড়মাস আগে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে সেলিমকে আটক করে পুলিশের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। তবে কিছুদিনের মধ্যেই জামিনে বের হয়ে এসে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। দিনে দুপুরে বাসায় ঢুকে সরকারি অফিসের এক গাড়ি চালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন এই আদম ব্যাপারী। মাথায়, দুই হাতে, পায়ে, বুকে এলোপাতাড়ি কোপ খেয়ে এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ড এনেক্স/ আইসোলেশন সেন্টারের ভায়োলেট-২১ নম্বর বেডে শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন দুই সন্তানের জনক হারুন অর রশিদ।
শরীরে ব্যান্ডেজ নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ভুক্তভোগী হারুন অর রশিদ বলেন, আমার কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। সত্যি আমি সেলিমের ধরিয়ে দেয়ার বিষয়ে কিছুই জানি না। তার দখল করা জমি সরকারের পক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে দেয়াল দেয়া, ভূমি অফিসের সাইনবোর্ডও অফিসের লোক লাগিয়েছে। আমি সামান্য গাড়িচালক। আমি এসবের সঙ্গে জড়িত না। এরপরও আমাকে এইভাবে কোপানো হলো। যারা আমার সন্তানদেরকে এতিম করতে চেয়েছিল আমি তাদের বিচার চাই। একইসঙ্গে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো একজন অপরাধী আটকের পর কীভাবে এতো তাড়াতাড়ি কারাগার থেকে ছাড়া পায় তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
আহত হারুন অর রশিদের স্ত্রী অফিজা খাতুন বলেন, আমার স্বামীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আমি বাদী হয়ে শুক্রবার মোহাম্মদপুর থানায় মামলা (মামলা নং-৫৭) করেছি। তিনি বলেন, সেলিমের সঙ্গে কখনোই আমার স্বামীর কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। সেলিম খারাপ মানুষ, আদম ব্যাপারী বলে তার সঙ্গ সকলেই এড়িয়ে চলে। এরপরও বাসায় ঢুকে আমার স্বামীকে কোপানো হলো। অশ্রুশিক্ত হয়ে তিনি বলেন, মৃত ভেবে আমার স্বামীকে ফেলে রেখে গিয়েছিল। আল্লাহ নিজে হাতে তাকে রক্ষা করেছেন। আমি এই সেলিমসহ তার লোকজনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। একইসঙ্গে বলবো- ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর যারা সরাসরি ছাত্রদের ওপর গুলি চালিয়েছিল তারা যেন সহজেই জামিন না পায় সেদিকেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান বলেন, হারুন অর রশিদকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আমাদের থানায় মামলা হয়েছে। সেলিম ও তার বাহিনীকে আটক করতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই অপরাধীরা আইনের আয়তায় চলে আসবে।
-মানবজমিন