কিডনি বিক্রি করে ২০ লাখে, ডোনার পান ৪ লাখ
প্রতারণার মাধ্যমে কিডনিসহ নানা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সাথে জড়িত রয়েছে কয়েকটি চক্র। এসব চক্রের ফাঁদে প্রলুব্ধ হয়ে নিম্ন আয়ের মানুষ হারাচ্ছে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচার সংঘবদ্ধ চক্রের প্রধান শাহরিয়ার ইমরানসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবদের তারা জানায়, প্রতিটি ১৫-২০ লাখে বিক্রি করলেও ৩-৪ লাখের বেশি দিত না ডোনারকে।
আটককৃত চক্রের অন্য সদস্যরা হলো- মো. মেহেদী হাসান (২৪), মো.আব্দুল মান্নান (৪৫), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮) ও মো. তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)। সোমবার থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪টি পাসপোর্ট, ভিসা সম্পর্কিত বেশকিছু কাগজপত্র, ৫টি মোবাইল ও দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারস্থ র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এতথ্য জানান।
তিনি জানান, এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন। তারা ৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে কিডনি ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে। চক্রের প্রথম গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিডনি প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন এমন ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করে। চক্রের দ্বিতীয় দলটি গরিব ও অভাবী মানুষদের কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করে নিয়ে আসে ঢাকায়। পরে তৃতীয় দলটি ভুক্তভোগীদের ঢাকার বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কিডনি প্রতিস্থাপন করা দরকার এমন রোগীর সঙ্গে ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য পরীক্ষা সম্পন্ন করে। ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্টে কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য উপযুক্ত হলে পাসপোর্ট ও ভিসা করে ভুক্তভোগীকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানো হয়। পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানকারী আরেকটি চক্র ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রপচারসহ যাবতীয় কার্যক্রম শেষে দেশে ফেরত পাঠায়।
তিনি বলেন, আটককৃতরা এই চক্রের মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা রোগীদের কাছ থেকে ১৫ হতে ২০ লাখ টাকা নিতো। বিপরীতে তারা কিডনিদাতাকে তিন থেকে চার লাখ টাকা দিত। কিডনি দেওয়ার পর প্রতিশ্রুতি টাকা না দিয়ে ভুক্তভোগীকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতো।
এবিসিবি/এমআই