ওসি প্রদীপ দাস ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৩ আসামিকে ৭ দিনের রিমান্ড

জেলা প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের টেকনাফে চেকপোস্টের গুলিতে সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যু হওয়ার ঘটনায় তার বোনের করা মামলায় টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, শামলাপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সিনহা হত্যা মামলার ৭ আসামিকে ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে লিখিতভাবে আবেদন করে র্যাব। আদালত শুনানি শেষে আসামি লিয়াকত আলী, প্রদীপ কুমার দাশ ও নন্দ দুলাল রক্ষিতের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া আদালত অন্য আসামিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ প্রদান করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলার ৭ আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে তা নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন।
ওসি প্রদীপ কুমার দাস ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- টেকনাফের শামলাপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, এএসআই টুটুল, এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল মো. মোস্তফা।
এদের মধ্যে কনস্টেবল মোস্তফা ও এএসআই টুটুল আদালতে হাজির হননি।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় অবসরপ্রাপ্ত সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
ঘটনার পর কক্সবাজারের টেকনাফ পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত তাকে গুলি করে। পুলিশের এমন ভাষ্য নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন ওঠে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত সাবেক মেজর এক সঙ্গীর বক্তব্যের সঙ্গে পুলিশের ভাষ্যের কিছুটা অমিল রয়েছে বলে একটি বিশেষ সূত্র জানায়। এমন প্রেক্ষাপটে পুরো উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে।
এ ঘটনায় গত বুধবার (৫ আগস্ট) সকালে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার ও বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের ৯ সদস্যের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের আদালতে মামলা করেন নিহত সিনহা রাশেদের বোন শারমিন শাহরিয়া।
মামলা হওয়ার পর টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপকে প্রত্যাহার করা হয়। তার পরিবর্তে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা দোহাকে।
আদালতের নির্দেশে বুধবার (৫ আগস্ট) রাতেই মামলাটি টেকনাফ থানায় নথিভুক্ত হয়।