সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার করে আপিল বিভাগ থেকে রায় ঘোষণা দেয়া হয়েছে রোববার। ৯৩ শতাংশ মেধা এবং সাত শতাংশ রাখা হয়েছে কোটা। এরই মধ্যে রায়কে স্বাগত জানিয়েছে সরকার। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত প্রতিদিনই কথা বলছেন গণমাধ্যমে। সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও অন্যান্য বিষয় তুলে ধরছেন তারা। কিন্তু গেলো শুক্রবার থেকে কোথাও নেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের!
সবশেষ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৪ দলীয় নেতাদের বৈঠকের পর গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। জানিয়েছিলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় দেশজুড়ে কারফিউ জারির সিদ্ধান্তের কথা।
এদিকে গেলো কয়েকদিনের জ্বালাও-পোড়াও আগুনসন্ত্রাসে সরকারের বিভিন্ন স্থাপনায় নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞের পর নিজ মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতরগুলো পরিদর্শন করেছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা। কথা বলেছেন গণমাধ্যমেও। কারফিউর মধ্যে কিংবা কারফিউ শিথিল থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্যখাতের অধীনে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
দেশজুড়ে ইন্টারনেট এখনও চালু করা না গেলেও প্রতিদিনই গণমাধ্যমে এ বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। নাশকতাকারীদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হওয়া ডাটা সেন্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন তিনি।
বিদ্যুতখাতের পুড়িয়ে দেয়া পাওয়ার স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমে বিদ্যুতখাত নিয়ে কথা বলছেন তিনি। দেশের নাগরিকদের দিচ্ছেন নানা আশ্বাস। ত্রাণ ও দুযোর্গ প্রতিমন্ত্রী মুহিববুর রহমানও পরিদর্শন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা।
বিজ্ঞান প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানও সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমে তুলে ধরেছেন ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংসের খতিয়ান। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীও কূটনীতিকদের অবহিত করেছেন সাম্প্রতিক বিষয়গুলো।
এতোসবের মাঝে কোথাও দেখা যায়নি ওবায়দুল কাদেরকে। অথচ সবচেয়ে বেশি তাণ্ডবলীলা চলেছে যেসব প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় সেগুলোর বেশিরভাগই তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে। ঢাকাবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর–১০ স্টেশন একেবারেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে নাশকতাকারীরা। সেটি দেখতেও যাননি ওবায়দুল কাদের। পরপর দুদিন এই এলাকা পরিদর্শন করেছেন মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। মহাখালীর সেতু ভবনে চালানো হয়েছে নারকীয় তাণ্ডব ও লুটপাট। এরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সেতু বিভাগের সচিব। কোথাও নেই দায়িত্বপ্রাপ্তমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। হানিফ ফ্লাইওভার, এলি টোলপ্লাজা কিংবা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আরও কিছু স্থাপনায় ব্যাপক নাশকতা চললেও এ নিয়ে কথা বলতে কিংবা কোথাও উপস্থিত হতে দেখা যায়নি ওবায়দুল কাদেরকে।
সময়