ফেসবুকের সাথে টানাপোড়েন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের বিশ্বব্যাপী সমর্থন প্রত্যাশা
টেক জায়ান্ট ফেসবুক অস্ট্রেলিয়ান সংবাদগুলো তার প্ল্যাটফর্ম থেকে পোস্ট ও শেয়ার করতে দিচ্ছে না। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের প্রস্তাবিত আইনের জন্য বিশ্বব্যাপী সমর্থন প্রত্যাশা করছেন।
অস্ট্রেলিয়া সরকার চায় ফেসবুক যাতে নিউজ এজেন্সিগুলোর কন্টেন্ট পোস্ট ও শেয়ারের জন্য অর্থ দেয়। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবিত আইন নিশ্চিতের আগেই গত ১৮ ফেব্রুয়ারী থেকে অস্ট্রেলিয়ান নিউজ কনটেন্ট ব্লক করার আশ্চর্যজনক পদক্ষেপ নিয়েছে ফেসবুক।
সারা বিশ্বের নজর এখন অস্ট্রেলিয়ার দিকে, কারণ এই বিশাল প্রযুক্তি সংস্থার সাথে চলছে তাদের টানাপোড়েন।
বিশ্বব্যাপী নেতারা ফেসবুকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম থেকে অস্ট্রেলিয়ান সংবাদ নিষিদ্ধ করার আকস্মিক পদক্ষেপে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
ব্রিটেন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সমর্থন প্রকাশ করেছে এবং ফেসবুককে প্রস্তাবিত নিউজ মিডিয়া দর কষাকষির কোডের বিরোধ নিষ্পত্তিতে যথাযথভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ সংস্থাগুলো তাদের কনটেন্ট ব্যবহারের জন্য ক্ষতিপূরণ পায় তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ডিজিটাল, সংস্কৃতি, মিডিয়া এবং স্পোর্ট কমিটির জুলিয়ান নাইট বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় সমস্ত খবরের বিষয়বস্তু ব্লক করে ফেসবুকের এই পদক্ষেপ গণতন্ত্রকে হুমকি দেওয়ার অপচেষ্টা।
নিউজ নিষিদ্ধের ফেসবুকের সিদ্ধান্তের সাথে তারা ইন্ডিজিনাস, জরুরি, স্বাস্থ্য ও দাতব্য সংস্থাসহ আরও অনেক সংস্থার সংবাদ শেয়ার করাও বন্ধ করে দিয়েছে।
অনেক কমুউনিটির কাছে করোনভাইরাস সম্পর্কিত তথ্য, জরুরি সতর্কতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান ডেভিড সিসিলিন গত বছর টেক জায়ান্টগুলোর এন্টি-কম্পিটিটিভ আচরণের জন্য তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন।
আরো অনেকের মত তিনিও তার অনুসারীদের কাছে একটি টুইট করে ফেসবুকের এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন।
“যদি এটি ইতিমধ্যে পরিষ্কার না হয়, তবে বলতে হয় ফেসবুক গণতন্ত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ফেসবুকের শর্তাদির সাথে একমত হওয়ার জন্য পুরো একটি দেশকে তার হাঁটুতে নামিয়ে আনার হুমকি দেওয়া তাদের একচেটিয়া শক্তি প্রদর্শনের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ।”
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন প্রত্যাশা করছেন যে অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া দর কষাকষি বা মিডিয়া বার্গেইনিং কোডটি বিশ্বব্যাপী নজির স্থাপন করবে।
কোডটি তৈরি করতে তিন বছর লেগেছে এবং এটি এখন আইন হয়ে উঠা থেকে এক ধাপ দূরে আছে।
এবং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে তিনি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন।
ইতিমধ্যে ফেডারেল ট্রেজারার জশ ফ্রাইডেনবার্গ ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক যাকারবার্গের সাথে কথা বলছেন।
তিনি বলছেন যে তারা তাদের অবশিষ্ট বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং তাদের মাধ্যমে আরও কাজ করবেন, এই উইকেন্ডে আরও একটি সভা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ান খবর প্রকাশ নিষিদ্ধ করার ফেসবুকের সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে, দেশজুড়ে নিউজ ওয়েবসাইটগুলোতে ট্র্যাফিক দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।
প্রাথমিক তথ্যতে দেখা গেছে যে গত বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ফেসবুকের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান সংবাদ পড়ার পরিমান কমে গিয়েছিল। যখন প্লাটফর্মটি অস্ট্রেলিয়ান সংবাদ সংস্থাগুলোর সংবাদ শেয়ার করা বন্ধ করে, তখন পিক আওয়ারে ট্রাফিক ৯৩ শতাংশ হ্রাস ঘটে।
সরকারের মিডিয়া ডাইভারসিটি কমিটিকে উদ্দেশ্য করে নিউজ কর্প অস্ট্রেলিয়ার চেয়ারম্যান মাইকেল মিলার বলেছেন যে অস্ট্রেলিয়ানরা তথ্যের জন্য সরাসরি নিউজ সাইটগুলিতে যেতে যথেষ্ট স্মার্ট।
এসবিএস বাংলা